কালী মন্দির কর্তৃপক্ষ ধর্মের কারণে প্রথমে রহমানকে মন্দিরে তাঁর স্ত্রীয়ের শ্রাদ্ধ করতে বাধা দেয়। (ফাইল)
নিউ দিল্লী: ইমতিয়াজুর রহমান নামক একজন মুসলিম ব্যক্তি, যিনি তাঁর মৃত স্ত্রীয়ের শ্রাদ্ধ করার জন্য দিল্লীর একটা মন্দিরে প্রবেশ করতে চেয়ে ধর্মের জন্য বাধাপ্রাপ্ত হন, দিল্লীর এক বেঙ্গলি ফিলান্ট্রোফিক কালচারাল সোসাইটির সহায়তায় শেষ পর্যন্ত স্ত্রীয়ের শ্রাদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানা গেল।
দক্ষিণ দিল্লীর চিত্তরঞ্জন পার্ক অঞ্চলে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন মেমোরিয়াল সোসাইটির সঙ্গে ওই অঞ্চলে বসবাসকারী বহু বাঙালি সংযুক্ত। তাঁরা জানান, গত রবিবার মেয়ে ও পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও বন্ধুদের উপস্থিতিতে রহমান তাঁর মৃত স্ত্রীয়ের শ্রাদ্ধ সম্পন্ন করতে পেরেছেন।
ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত এক ব্যক্তি আইএএনএস-কে জানান, “ওঁদের ওই সোসাইটিতে একটা ঘর দেওয়া হয়েছিল এবং ওঁদের মেয়ে ইহিনি আমব্রীন সমস্ত নিয়ম পালন করে। কালী মন্দিরে ঢুকতে বাধা দেওয়ায় আমরা অত্যন্ত বিরক্ত হয়েছি।“
1973 সালে প্রতিষ্ঠিত ফিলানট্রোফিক সোসাইটি সমাজ কল্যাণের উদ্দেশ্যে নন-প্রফিট মেডিকেল সেন্টার, লাইব্রেরী, কালচারাল ক্লাস করায় এবং তাঁদের প্রতিষ্ঠানের কিছুটা অংশ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে ভাড়া দেয়।
পূর্বে কলকাতা নিবাসী রহমানের স্ত্রী নিবেদিতা ঘটকের গত সপ্তাহে মাল্টি-অর্গান ফেলিয়ার হয়ে দিল্লীতে মৃত্যু হয়। প্রায় কুড়ি বছর আগে এই দম্পতির স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্টের মাধ্যমে বিয়ে হয়। যে আইনে দুই ভিন্নধর্মী নারী-পুরুষ নিজেদের ধর্মবিশ্বাস বজায় রেখে পরস্পরকে বিয়ে করেন।
দিল্লীর নিগম বোধ ঘাটে হিন্দুশাস্ত্র মতেই নিবেদিতা ঘটককে দাহ করা হয় কিন্তু তাঁদের পরিবারকে তাঁর শ্রাদ্ধ থেকে বঞ্চিত করা হয়।
মিস্টার রহমান চিত্তরঞ্জন পার্কের কালী মন্দিরে স্ত্রীয়ের শ্রাদ্ধের উদ্দেশ্যে গত 12ই অগাস্ট 1300 টাকা দিয়ে কিছুটা সময় বুক করেন। কিন্তু মন্দির কর্তৃপক্ষ তাঁদের জানান “বিশেষ কারণবশত” তাঁদের বুকিং ক্যানসেল করা হয়েছে।
মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে সভাপতি অশিতাভ ভৌমিক আইএএনএস-কে জানান, ওই মহিলা মুসলিমকে বিয়ে করার পর আর হিন্দু সমাজের অংশ নয়। “কারণ একজন মহিলা বিয়ের পর শ্বশুর বাড়ির পদবী ও ধর্মবিশ্বাস গ্রহণ করে এবং তাঁদের সমাজের অংশ হিসাবেই তাঁকে গণ্য করা হয়।“