গত সপ্তাহে ২৪ বছরের ওই পড়ুয়াকে নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদ আন্দোলনে সামিল হতে দেখা গিয়েছিল বিভিন্ন স্থানে।
হাইলাইটস
- নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদ করায় দেশে ফেরত পাঠানো হয় এই জার্মান পড়ুয়াকে
- প্রতিবাদকারীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান তিনি
- বুধবার তিনি আমস্টারডামে পৌঁছে ফেসবুকে পোস্ট করেন
নয়াদিল্লি: নাগরিকত্ব আইন (Citizenship Act) বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেওয়ার কারণে আইআইটি মাদ্রাজের (IIT Madras) জার্মান পড়ুয়া (German IIT Madras Student) জ্যাকব লিন্ডেনথালকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। বুধবার তিনি আমস্টারডামে পৌঁছে গেলেন। ফেসবুকে নাগরিকত্ব আইন বিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে একটি পোস্টে তিনি লেখেন, ‘‘এই ধরনের ইভেন্ট দেখিয়ে দেয় রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও আইনের বিধানের প্রয়োজন লাখ লাখ খোলা চোখ ও উদাত্ত কণ্ঠের সমর্থন।'' তিনি তাঁর সমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের ধন্যবাদ জানান। তিনি আরও জানান, আপাতত তিনি সময় কাটাতে চান ‘‘রাস্তা কোথায় নিয়ে যায় তা খুঁজতে।''
পদার্থবিদ্যার স্নাতকোত্তর ছাত্র জ্যাকব ভারত ছাড়েন সোমবার। ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস'-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তাঁকে চেন্নাইয়ে বিদেশি নাম নথিভুক্তকরণের স্থানীয় দফতরের তরফে দেশ ছাড়ার মৌখিক নির্দেশ দেওয়া হয়।
তিনি ফেসবুকে পোস্ট করে লেখেন, ‘‘আজ সকালে আমি আমস্টারডামে পৌঁছেছি নিরাপদে। খুব শিগগিরি নুরেমবার্গে আমার পরিবারের কাছেও পৌঁছে যাব। যে বিপুল একাত্মতা আপনারা দেখালেন তার জন্য ধন্যবাদ। আপনাদের বার্তা, আইনি পরামর্শ ও ভারতে আমার লড়াই একদিনের জন্য পিছিয়ে যাওয়ার সময় আমাকে দেওয়া আশ্রয়ের জন্য ধন্যবাদ। আমার কয়েক দিন লাগবে বাড়ি পৌঁছে এটা সন্ধান করতে যে, রাস্তা কোথায় কোনদিকে চলেছে।''
গত সপ্তাহে ২৪ বছরের ওই পড়ুয়াকে নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদ আন্দোলনে সামিল হতে দেখা গিয়েছিল বিভিন্ন স্থানে। তাঁকে বলা হয়, ওই সব বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দেওয়া তাঁর ভিসার শর্তাবলির পরিপন্থী। তাঁকে দ্রুত দেশ ছাড়তে হবে।
এদিনের পোস্টে নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসির বিরুদ্ধে যাঁরা আন্দোলন করছেন তাঁদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন জ্যাকব। পাশাপাশি যাঁরা সামনাসামনি প্রতিবাদ না করেও প্রতিবাদীদের সমর্থন করেছেন তাঁদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান তিনি।
নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে ২০১৫ সালের আগে ভারতে আসা হিন্দু, শিখ, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, পার্সি ও জৈন শরণার্থীরা ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। সমালোচকদের আশঙ্কা এই আইন ও এনআরসির যৌথ প্রয়োগে উপযুক্ত নথি না থাকা মুসলিমদের এই দেশ থেকে তাড়ানোর চেষ্টা করে হতে পারে।
বিভিন্ন রাজ্যে আন্দোলন গড়ে উঠেছে এই নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে। দিল্লির জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাও এই আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েছে।