২০১৩-র অগাস্টে পুনেতে গুলি করে হত্যা করা হয় নরেন্দ্র দাভোলকরকে
হাইলাইটস
- নরেন্দ্র দাভোলকরকে প্রথমে পেছন থেকে গুলি করি, তারপর চোখের উপরে:অভিযুক্ত
- গোবিন্দ পানসারে,গৌরী লঙ্কেশ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গেও যুক্ত বলে স্বীকারোক্তি
- অভিযুক্ত শরদ কালাসকরের বিরুদ্ধে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দায়ের
নিউ দিল্লি: ৬৭ বছরের নরেন্দ্র দাভোলকরকে (Narendra Dabholkar) প্রথমে মাথার পিছন দিক থেকে গুলি করা হয়।পরে দাভোলকর পড়ে গেলে তাঁর ডান চোখে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয় তাঁকে,কর্নাটক পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি(confession) ৬ বছর আগে ওই সমাজকর্মী হত্যায় অভিযুক্ত শরদ কালাশকরের (Sharad Kalaskar)।১৪ পাতার একটি স্বীকারোক্তিতে ওই হত্যার কথা জানায় সে, যে স্বীকারোক্তির একটি কপি এনডিটিভির হাতেও এসে পোঁছেছে।পাশাপাশি অন্য দুই সমাজকর্মী গোবিন্দ পানসারে ও সাংবাদিক গৌরি লঙ্কেশ হত্যার ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত ছিল বলে স্বীকারোক্তি তাঁর। গত বছরের অক্টোবরে অন্য একটি মামলায় শরদ কালাসকরকে গ্রেফতার করে পুলিশ।সাংবাদিক গৌরি লঙ্কেশকে হত্যার ষড়যন্ত্রে সামিল থাকার অভিযোগে বর্তমানে জেলবন্দি সে।দাভোলকর হত্যাকাণ্ডের জেরা চলাকালীন ওই কথা স্বীকার করে শরদ।দাভোলকরকে হত্যার (Murder) অভিযুক্তদের তালিকায় আরও কয়েকজনের নাম রয়েছে। ২০১৩-র অগাস্টে পুনেতে যখন প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়েছিলেন দাভোলকর তখনই তাঁকে হত্যা করা হয়।ঠিক একই ভাবে ২০১৫-র ফেব্রুয়ারিতে হত্যা করা হয় সমাজকর্মী গোবিন্দ পানসারেকে।ওই বছরেরই অগাস্টে কোলহাপুরে হত্যা করা হয় সমাজকর্মী এমএম কালবুর্গীকেও।২০১৭ তে বেঙ্গালুরুতে নিজের বাড়ির সামনে হত্যা করা হয় সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশকে।
একটি অস্ত্র সংক্রান্ত মামলায় পালঘর জেলার নাল্লাসপোরা থেকে শরদ কালাসকরকে গ্রেফতার করে মহারাষ্ট্রের সন্ত্রাস দমন শাখা।তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই পুলিশ বুঝতে পারে সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশ(Gauri Lankesh) ও ওই ৩ সমাজকর্মী হত্যার মধ্যে একটা কোনো যোগসূত্র রয়েছে।
শরদ কালাসকর প্রথমে পুলিশকে জানায় যে সে হত্যার (Murder) ব্যাপারে স্বীকারোক্তি দিতে চায়।“আমরা কিছু খারাপ মানুষকে মেরে ফেলতে চেয়েছিলাম”, হত্যাকাণ্ডের মূল চক্রী বীরেন্দ্র তাওয়ারেই কথা অনুসারেই ওই হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে শরদ।ইতিমধ্যেই বীরেন্দ্র তাওয়ারেকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই এবং তাঁর বিরুদ্ধেও হত্যা ও হত্যার ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
শরদ কালাসকর জানায় তাওয়ারেই তাঁকে নরেন্দ্র দাভোলকরের(Narendra Dabholkar) মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালাতে বলে যাতে ওই জায়গাতেই মৃত্যু হয় তাঁর।সেই কথামতোই যখন পুনের ওঙ্কারেশ্বর সেতুর উপরে প্রাত্ঃভ্রমণ করছিলেন দাভোলকর তখনই তাঁকে গুলি করে শরদ।
স্বীকারোক্তিতে(confession) শরদ এও জানায় যে দেশি বন্দুক দিয়েই দাভোলকরের মাথা লক্ষ্য করে প্রথমে গুলি চালায় সে। দাভোলকর সেতুর উপরেই পড়ে গেলে দ্বিতীয়বার দাভোলকরের ডান চোখ লক্ষ্য করে ফের গুলি চালায় শরদ।তারপর তাঁর সঙ্গের সহযোগী সচিন আন্দুরেও শূন্যে গুলি চালায়।
শরদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, হত্যাকাণ্ডের মূল চক্রী বীরেন্দ্র তাওয়ারেই অমল কালে নামে অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেয় শরদের, পরবর্তীতে যাকে গৌরী লঙ্কেশ(Gauri Lankesh) হত্যার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করে পুলিশ।গৌরীকে হত্যার আগে তাঁরা নিজেদের মধ্যে অনেকবার আলাপ আলোচনা করে হত্যার ছক সাজায়।
২০১৬-র অগাস্টে, হিন্দুত্ববাদের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার তালিকায় নাম ওঠে গৌরী লঙ্কেশের এবং তখনই ওই সাংবাদিককে হত্যার(Murder) সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছে শরদ কালাসকর।
পরে ২০১৭-র অগাস্টে আরও একটি বৈঠকে গৌরী লঙ্কেশকে( Gauri Lankesh) হত্যার ষড়যন্ত্র করে সেই মাসেরই শেষের দিকে ওই সাংবাদিককে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে শরদ।
পাশাপাশি শরদ কালাসকর একথাও ফাঁস করেছে যে, সে সময় বম্বে হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বিজি কোলসে পাটিলকেও হত্যার ছক কষা হয়েছিল।