গত তিন বছরে অসমের ডিটেনশন সেন্টারে থেকে মারা যাওয়া ২৯ তম ব্যক্তি হলেন নরেশ।
গুয়াহাটি: জীবনের শেষ তিনটে বছর ডিটেনশন ক্যাম্পে (detention centre) থাকার যন্ত্রণা নিয়ে মারা গেলেন ৫৫ বছরের প্রৌঢ়। অসমের গোয়ালপাড়ার (Assam Goalpara) একটি ডিটেনশন সেন্টারে থাকা এক ব্যক্তি শুক্রবার স্থানীয় হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পুলিশ জানিয়েছে, ২২ ডিসেম্বর নরেশ কচের (Naresh Koch) গুরুতর স্ট্রোক হয়। তাকে গুয়াহাটি মেডিকেল কলেজে চিকিত্সার জন্য ভর্তি করা হয়। গত তিন বছরে অসমের ডিটেনশন সেন্টারে থেকে মারা যাওয়া ২৯ তম ব্যক্তি হলেন নরেশ। তিনিকুনিয়া পাড়া (Tinikunia Para village) গ্রামের ঠিকা শ্রমিক ছিলেন নরেশ কচ। ১৯৬৪ সালে প্রথমে বাংলাদেশ থেকে মেঘালয়ে আসেন। তখন পূর্ব পাকিস্তান নামেই পরিচিত ছিল পড়শি দেশটি। তারপর থেকে তিনি প্রায় ৩৫ বছর ধরে তিনিকুনিয়া পাড়াতেই বসবাস করছিলেন।
“ভারতের সবচেয়ে বড় ডিটেনশন ক্যাম্পের জন্য ৪৬ কোটি দিয়েছেন” প্রশ্ন তরুণ গগৈয়ের
নরেশ কচ ২০১৮ সাল অবধি প্রতিটি নির্বাচনে ভোটও দিয়েছিলেন। পর পর চারবার শুনানিতে অংশ নিতে না পারার পরে বিদেশি ট্রাইব্যুনাল তাকে ২০১৮ সালে ‘বিদেশি' ঘোষণা করে। নরেশ কচ কচ-রাজবংশী (Koch-Rajbonshis) সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত মানুষ। কচ-রাজবংশীরা মেঘালয়ের উপজাতি তবে অসমে এখনও তাদের তফসিলি উপজাতির মর্যাদা দেওয়া হয়নি।
সরকার জানিয়েছে, ২০১৬ সাল থেকে ২০১৯ সালের ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত ডিটেনশন সেন্টারে বা রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে প্রায় ২৮ জন বন্দি মারা গিয়েছেন। “২০১৯ সালের ২২ নভেম্বর অবধি, আসামের ছয়টি ডিটেনশন সেন্টারে ৯৮৮ জন বিদেশি আটক রয়েছেন,” কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই রাজ্যসভায় জানিয়েছেন।
অবৈধ অভিবাসীদের আটকাতে তৈরি আটক কেন্দ্র! লোহার দরজা আর কাঁটাতারের অন্দরে NDTV
২০১৯ সালের ৩১ অগাস্টে প্রকাশিত সংশোধিত জাতীয় নাগরিকপঞ্জিতে (এনআরসি) প্রায় ১৯ লক্ষ মানুষ বাদ পড়েছেন। অসম রাজ্য জুড়ে ছয়টি ডিটেনশন ক্যাম্প রয়েছে যেখানে নাগরিকত্ব যাচাইয়ের পরে নির্বাসন দেওয়ার আগে বিদেশি ট্রাইব্যুনাল লোক পাঠায়।
ভবিষ্যতে তাদের নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র পেশ করতে ব্যর্থ হলে এই মানুষদের রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।