"ওরা গরু কাটছিল, তাই আমি ওদের কেটে ফেলেছি”।
হাপুর, আলোয়ার: গরুচোর সন্দেহে পিটিয়ে খুন করা হয়েছিল রাজস্থানের আলোয়ারের এক ব্যক্তিকে। যারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিল, এনডিটিভির গোপন ক্যামেরা তাদের একটি অন্য ছবি সামনে উঠে এল। আরএসএস এবং অন্যান্য হিন্দুত্ববাদী সংগঠনকে নিয়ে গবেষণা করছেন তাঁরা, এমন একটি ছদ্মবেশ নিয়ে দুটি রাজ্যের দুটি গণপিটুনির ঘটনার স্থান পরিদর্শন করে এনডিটিভির ওই দলটি।
প্রথম স্থানটি ছিল উত্তরপ্রদেশের হাপুর জেলার বাজেধা খুর্দ গ্রাম। দিল্লি থেকে ঘন্টা দুয়েকের দূরত্বে অবস্থিত।
গত 18 জুন উত্তরপ্রদেশের হাপুর জেলায় এক মাংস ব্যবসায়ী পঁয়তাল্লিশ বছর বয়সী কাসিম কুরেশিকে গণপ্রহারে হত্যা করা হয়। ওই আক্রমণেই ভয়ঙ্করভাবে জখম হন 65 বছর বয়সী কৃষক সামিয়ুদ্দিন।
ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছিল মাংস ব্যবসায়ী কাশিম কুরেশিকে ভয়ঙ্করভাবে মারধর করা হচ্ছে। ওই ঘটনায় ন’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের মধ্যে চারজন ছাড়া পেয়ে যায় জামিনে। ওই ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত রাকেশ শিশোদিয়ার সঙ্গে দেখা করতে যায় এনডিটিভির ওই দলটি। বাজেধা খুর্দ গ্রামে।
আদালতে লিখিতভাবে শিশোদিয়া জানিয়েছিল তার এই ঘটনায় কোনও ভূমিকা নেই। সে কোনওভাবেই এর সঙ্গে জড়িত নয়। কিন্ত গোপন ক্যামেরায় নিজের অপরাধ বুক ফুলিয়ে স্বীকার করে নিল সে। সে এটিও বলে, জেল কর্তৃপক্ষের কাছেও নিজের অপরাধ সে স্বীকার করেছিল। পাঁচ সপ্তাহ জেলে থাকার পর এখন ওই অভিযুক্ত জামিনে মুক্ত।
“আমি তো জেলারের সামনেই বলে দিয়েছিলাম যে, ওরা গরু কাটছিল, তাই আমি ওদের কেটে ফেলেছি”, শিশোদিয়াকে এই কথা বলতে শোনা যায় এনডিটিভির গোপন ক্যামেরায়।
“প্রথমবার জেলে গেলাম আমি। আমার তো ভয়ে কুঁকড়ে থাকার কথা ছিল। কিন্তু, আমি সেইসব রেয়াত করিনি। আমাকে জেলার নিজেও জিজ্ঞাসা করেন যে, কোন মামলায় জেলে এলে তুমিঁ”, বলে যায় সে।
“আমি সঙ্গেসঙ্গে বলে দিলাম 302 আর 307 ধারায়। পুরো খুন আর অর্ধেক খুনের জন্য। ওরা গরু কাটছিল, আমি ওদের কেটে দিয়েছি। ব্যাস! আর কী”!
শিশোদিয়া ক্যামেরার সামনে স্বীকার করে, জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর কেমনভাবে ‘নায়ক’-এর তকমা উপভোগ করছে সে!
সে বলে চলে, “আমাকে জেল থেকে আনতে তিন-চারটে গাড়ি গিয়েছিল। আমার নামে জিন্দাবাদ ধ্বনিও দেওয়া হয়। খুব গর্ব হচ্ছে আমার”।