সাম্প্রদায়িকতা থেকে জাতীয়তাবাদ, নানা বিষয়ে খোলামেলা আড্ডায় জাভেদ আখতার
নিউ দিল্লি: জাতীয়তাবাদ ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের অন্যতম হাতিয়ার শাসক দল বিজেপির জন্য। জাতীয়তাবাদের বিষয় নিয়েই মারামারি, জাতীয়তাবাদ নিয়েই ভোট ভিক্ষা চলছে। নির্বাচনী পরিবর্তনের বিষয়ে এক বিশেষ আলোচনায় এনডিটিভির রভীশ কুমারের মুখোমুখি হলেন গীতিকার জাভেদ আখতার। জাভেদ বলেন, “এটা বোঝা দরকার যে জাতীয়তাবাদের সংজ্ঞা কী। যে এই দেশে বসবাস করে, সে অবশ্যই নিজের দেশকে ভালবাসে। দেশের জয়ে তাঁর গৌরব হয়। তাহলে আমাদের বোঝা দরকার যে জাতীয়তাবাদ আসলে কী! জনগণ রাজনৈতিক দলগুলোকেই দেশ মনে করে। দল তো আসবে যাবে, দু'টো তো এক নয়!” তিনি আরও বলেন, “কৃষকদের কথা বলা, কর্মসংস্থানের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করা, জনগণের স্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ হচ্ছে জাতীয়তাবাদ। দেশের মধ্যে বসবাসকারী প্রতিটা মানুষের তাঁর দেশের প্রতি চিন্তা ও ভালোবাসাটাই সত্যিকারের জাতীয়তাবাদ।”
প্রধানমন্ত্রী মোদীকে কি টেক্কা দিতে পারবেন মমতা?প্রণয় রায়ের বিশ্লেষণ
ধর্মনিরপেক্ষতার প্রসঙ্গে জাভেদ আখতার বলেন যে সেক্যুলারিজম বা ধর্ম নিরপেক্ষতা মানে প্রত্যেক ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া, কিন্তু কোথায় সেসব? জাভেদ বলেন যে তথাকথিত সেক্যুলারবাদী দলগুলিও এই বিষয়ে চিন্তা করার পরিবর্তে এর ভুল ব্যবহার করছে। শাহী ইমামের বিষয়ে জাভেদ আখতার বলেন, শাহী ইমাম, জরুরি অবস্থার পরে প্রথম অটল বিহারী বাজপাই এবং লালকৃষ্ণ আদভানির সাথে দিল্লি এসেছিলেন ইমাম, এর আগে তাঁর নামও শুনিনি, কিন্তু তিনি আসতেই অন্যান্য দলগুলিও এই বিষয়ে কথা বলছে, ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলোর এটাই ভুল।
জাভেদ (Javed Akhtar) বলেন যে, সবকিছুকেই এখন ব্যক্তিগত করে দেওয়া হচ্ছে। এখন সরকারও মোদি সরকার, মোদির নামে সরকার যেন! তিনি বলেন, “আমরা কি কখনও ভেবেছি যে প্রজ্ঞা ঠাকুর নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী হবেন। যদি বিজেপির মনে হয় যে প্রজ্ঞা ঠাকুর কিছুই করেনি, তাহলে এটাও তো জানাতে হবে কীসের ভিত্তিতে তাঁকে ভোটে দাঁড় করানো হল? তিনি জেলে ছিলেন, এই জন্য ভোটে দাঁড় করানো হয়েছে? এমন তো অনেক নির্দোষ মুসলিম ব্যক্তিও বহু বছর ধরে জেলে রয়েছেন, তাদের কেন নির্বাচনে নামানো হচ্ছে না?”
"হাওয়ায় উড়ছে সবকিছু", 'ফণী' নিয়ে টুইট করলেন সম্বিত পাত্র
দেশের বর্তমান ভয়ের আবহে জাভেদ আখতার বলেন যে, দেশের সেই সকল মানুষ প্রচণ্ড ভয়ে থাকেন যারা নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহের সঙ্গে একমত নন। এমনি তিনি যদি দলের সমর্থকও হন, তাও তিনি এই কারণে ভীত। দেশের জরুরি অবস্থার কথা টেনে এনে তিনি বলেন, “ঐ যুগেও কিছু কিছু মানুষ হতো ইমারজেন্সির প্রশংসা করেছিলেন, কিন্তু তাঁদের মনের মধ্যে আসলে কি রয়েছে তা ভোটের বুথে প্রকাশ পেয়েছিল।”
আলোচনার সময় জাভেদ আরও বলেন, আজকাল সরকারের সঙ্গে অন্যমত হলেও তাঁদের দেশদ্রোহী বলা হচ্ছে, কিন্তু অটল বিহারীর মলে এমন ছিল না। তিনি আমাকে তাঁর বাড়িতে ডেকেছিলেন, আমাদের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। তিনিই বলেছিলেন যে, প্রত্যেক দলেই কিছু ভালো মানুষ থাকে। বিজেপিতেও ভালো মানুষ আছেন হয়তো। কিন্তু আমার সঙ্গে তাঁদের মিল নেই বলেই আমাদের ডাক পড়ে না।