This Article is From Feb 21, 2020

নেতাজি রহস্যে নয়া মোড়, সরকারি ল্যাবে নেই সুভাষ-গুমনামির দাঁতের রিপোর্ট!

কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ এই ল্যাবের স্বীকারোক্তি, সাধুর দাঁতের কোনও ইলেক্ট্রোফেরোগ্রাম রিপোর্টের নমুনাই নাকি কলকাতায় নেই!

নেতাজি রহস্যে নয়া মোড়, সরকারি ল্যাবে নেই সুভাষ-গুমনামির দাঁতের রিপোর্ট!

গুমনামি বাবা নেচাজি নন!

হাইলাইটস

  • গুমনামি বাবা নেতাজি নন!
  • ফের অন্তর্ধান রহস্যে নয়া মোড়
  • সাধুর সঙ্গে নেতাজির দাঁতের কোনও মিল নেই
কলকাতা:

নেতাজি মৃত না জীবিত? ১৮৪৫ সালে তাইওয়ান বিমান দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়েছিল কি আদৌ! নাকি তিনিই পরে সন্ন্যাস নিয়ে উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদের গুমনামি বাবা (Gumnami Baba)। রহস্যের কিনারা আজও হয়নি। ইতিমধ্যেই গত বছরে নেতাজি অন্তর্ধান রহস্যকে বড়ো ক্যানভাসে ধরেছেন জাতীয় পুরস্কার জয়ী সৃজিত মুখোপাধ্যায়। রাশিয়া তথ্য, জাপানে নেতাজির মৃত্যু, গুমনামি বাবা এবং মুখার্জি কমিশনের তথ্যকে সামনে রেখে নেতাজির অস্তিত্ত্ব নিয়ে গুমনামি ছবিতে সুভাষ চন্দ্র বসুর (Subhas chandra Bose) প্রকৃত অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন পরিচালক। বিতর্কের ঢেউ আছড়ে পড়েছিল তখনও। বৃহস্পতিবার আরও একবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠল নেতাজি অন্তর্ধান রহস্য। বিশিষ্টজনেদের দাবি তাতে নয়া মোড় আনল।

গুমনামি বাবাকে নেতাজি প্রমাণ করার অশুভ প্রচার চলছে: নেতাজির পরিবার

অনেকেই একসময় বিশ্বাস করতেন, করেছিলেন, গুমনামি বাবাই নেতাজি। কিন্তু মুখার্জি ও সহায় কমিশন সেই বিশ্বাস নস্যাৎ করেছিল তাদের রিপোর্টে। সম্প্রতি সামনে এসেছে সিএফএসএল-এর আরেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ এই ল্যাবের স্বীকারোক্তি, সাধুর দাঁতের কোনও ইলেক্ট্রোফেরোগ্রাম রিপোর্টের নমুনাই নাকি কলকাতায় নেই! ফলে, আবারও প্রশ্ন উঠেছে, নেতাজির প্রকৃত অবস্থান নিয়ে। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি মুখ খোলেন নেতাজি গবেষক সায়ক সেন। তাঁর প্রশ্নের জবাবে সিএফএসএলের অন্যতম প্রধান বি পি মিশ্র জানান, ইলেক্ট্রোফেরোগ্রাম তথ্যের সঙ্গে স্বয়ংক্রিয় ভাবে যুক্ত থাকে ডিএনএ সিকোয়েন্সিং মেশিন। যার সাহায্যে ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফল জানা যায়। কিন্তু সিএফএসএল-এর কলকাতা শাখায় এই মামলার নাকি ইলেক্ট্রোফোরগ্রামের কোনও রিপোর্ট-ই নেই! এবং এর থেকেই প্রমাণিত, দুটি তদন্ত কমিশন তথাকথিত সাধু নেতাজি নন বলে যে দাবি করেছিল, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

চলতি মাসের ৪ তারিখে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে কলকাতার কেন্দ্রীয় সায়েন্স ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির তরফ থেকে আরটিআইকে দেওয়া এক জবাবকে কেন্দ্র করে। কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণে থাকা এই সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ইলেক্ট্রোফেরোগ্রাম রিপোর্ট ছাড়াই বাজপেয়ি সরকারের আমলে গঠিত মুখার্জি কমিশন জবাব দিয়েছিল, নেতাজি আর গুমনামি বাবা এক নন। একই সিদ্ধান্ত শোনা গেছিল মুখার্জি কমিশনের ওপর ভিত্তি করে উত্তরপ্রদেশ সরকার গঠিত সহায় কমিশনের রিপোর্টেও। ১৯ ডিসেম্বর যোগী আদিত্যনাথ সরকার সহায় কমিশনের এই রিপোর্ট পেশ করে লখনউ বিধানসভায়। তারপরেই প্রথম প্রশ্ন তোলেন সায়ক সেন। তাঁর দাবি, সহায় কমিশনের রিপোর্ট মুখার্জি কমিশনের রিপোর্টের অন্ধ অনুসরণ। ফের, শুরু হয় নেতাজি অন্তর্ধান রহস্য নিয়ে বিতর্ক। এরপরেই সায়ক কলকাতার কেন্দ্রীয় ল্যাবরেটরির কাছে আরটিআই-য়ের মাধ্যমে গুমনামি বাবার দাঁতের ডিএনএ সংক্রান্ত রিপোর্ট চাইলে বি পি মিশ্র সরাসরি জানিয়ে দেন, তাঁদের কাছে কোনও রিপোর্ট নেই। সঙ্গে সঙ্গে নেতাজি অন্তর্ধান রহস্য নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগের আঙুল ওঠে। 

গুমনামি বাবা'র প্রযোজককে আইনি নোটিশ পাঠালেন কলকাতার বাসিন্দা

সায়ক এব্যাপারে মোদি সরকারের হস্তক্ষেপ চাওয়ার পাশাপাশি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, যেকোনও ডিএনএ পরীক্ষার ক্ষেত্রে ইলেক্ট্রোফেরোগ্রাম রিপোর্ট থাকা বাধ্যতামূলক। অথচ তা কলকাতার ল্যাবে নেই। বিষয়টি সত্যিই সন্দেহজনক। মুখার্জি কমিশন, সহায় কমিশনের দেওয়া রিপোর্ট নিয়ে এবার সত্যিই ধন্দ জাগছে। কারণ, ২০০৪-এর ডিএনএ রিপোর্ট কমিশনে জমা পড়ার আগেই ফাঁস হয়ে গেছিল। ফলে, তাঁর সত্যাসত্য নিয়ে সন্দেহ থাকায় ফৈজাবাদের রামভবন থেকে সাধুর দাঁতের আরেকবার ডিএনএ-র আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। যদিও সেই আবেদন খারিজ করেছিলেন বিচারপতি সহায়। নেতাজির মতো দেশপ্রেমিকের অন্তর্ধান রহস্যে যবনিকা টানতে আরও এক নতুন কমিশন বসানো অতি আবশ্যিক।

এদিকে, নেতাজির প্রপৌত্র, বিজেপি নেতা নেতাজির নাতি চন্দ্র কুমার বোস এই অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন। তাঁর যুক্তি, "আরটিআইয়ের জবাব বলছে, এই মামলার ইলেক্ট্রোফেরগ্রাম রিপোর্ট কলকাতার সিএফএসএল-তে নেই। এর মানে এই নয়, এটি হয়নি। তাই সবার সব অভিযোগ ভিত্তিহীন।"

.