বর্ধমানের খাগড়াগড়কাণ্ডে আরামবাগ থেকে এক অপরাধীকে গ্রেফতার করল এনআইএ। তাকে দীর্ঘদিন ধরেই খুঁজছিল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। সোমবার রাতে তার এক সাগরেদের পাশাপাশি তাকেও গ্রেফতার করা হয়।
২ অক্টোবর, ২০১৪, দুপুর বারোটা। বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে উঠেছিল বর্ধমান শহরের খাগড়াগড়ের একটি দোতলা বাড়ি। ওই বাড়িটির মালিক স্থানীয় তৃণমূল নেতা নুরুল হাসান চৌধুরী বলে জানা যায়। যদিও তিনি সেই বাড়িতে থাকতেন না। নীচের তলার বাড়িটি তৃণমূলের পার্টি অফিস হিসাবে ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। ২০০৮ এবং ২০১৩ পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় ভাড়া নেওয়া ওই পার্টি অফিসটি ব্যবহার করেছিল ঘাসফুল শিবির। দোতলার ঘরটি ৪ হাজার ৭০০ টাকায় ভাড়া নিয়েছিল শাকিল আহমেদ নামে এক ব্যক্তি।
কেন্দ্রীয় সংস্থার জন্য খেলাধুলোয় অর্থ সাহায্য করতে অনেকেই ভয় পাচ্ছেনঃ মমতা
বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাওয়ার পরেই পুলিশ এবং দমকলকে খবর দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পুলিশকে বাধা দেয় দুই মহিলা। বিস্ফোরণের সময় ঘটনাস্থলে শাকিল আহমেদের মৃত্যু হয়। সে নদিয়ার করিমপুর থেকে বর্ধমানের ওই ভাড়া বাড়িতে থাকত বলে জানা যায়। বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় শোভন মণ্ডল নামে আরও এক ব্যক্তির। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় শোভন মণ্ডলের। এছাড়াও দুজন গুরুতর জখম হয়।
নিউজ চ্যানেলকে টাকা দিয়ে স্টিং অপারেশন করানো হচ্ছেঃ মমতা
ঘটনাস্থলে যায় সিআইডি, বম্ব স্কোয়াড। ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরে বিস্ফোরণের গুরুত্ব বুঝে খাগড়াগড় কাণ্ডের তদন্তভার যায় এনআইএর হাতে। তদন্তে নেমে দুই মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার হয় প্রচুর পরিমাণে বিস্ফোরক। এছাড়াও হাতঘড়ির ডায়াল,সিম কার্ড ছাড়াও ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় এদেশের জাল নথি, যেমন ভোটার কার্ড, পাসপোর্ট। তালিবানি প্রশিক্ষণের ভিডিও, ম্যাপও উদ্ধার করা হয় বিস্ফোরণস্থল থেকে। পরে উদ্ধার হওয়া সামগ্রীগুলি দামোদরের চরে নিয়ে গিয়ে সেগুলিকে নিষ্ক্রিয় করা হয়।
মালদায় তৃণমূলের 'বেনজির' সাফল্য, নূরকে দলে নিয়ে মালদায় সংগঠনকে শক্ত করল শাসকদল
৩ অক্টোবর বর্ধমানে যায় এনআইএ-র তদন্তকারী দল, বিস্ফোরণস্থল ঘুরে দেখেন তাঁরা। তদন্তে উঠে আসে আল জিহাদ নামে একটি সংগঠনের নাম। তদন্তকারীরা জানতে পারেন, রাজ্যে একাধিক বিস্ফোরণের ছক কষেছিল তারা। এনআইএ-র পাশাপাশি বিস্ফোরণস্থলে যায় এনএসজি কম্যান্ডো। ধৃত দুই মহিলাকে জেরা করে বাড়ির শৌচাগার থেকে উদ্ধার হয় ৩০ টি হ্যান্ড গ্রেনেড।
কংগ্রেসকে শেষ করে বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দিতে চাইছে তৃণমূলঃ সোমেন
ঘটনার ৬ মাস পর চার্জশিট পেশ করে এনআইএ।প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তারা জানায়, “অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জঙ্গিসংগঠন জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ(জেএমবি)-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকার ফেলে দিয়ে সেখানে ইসলামিক শাসন প্রতিষ্ঠা করার চক্রান্ত করেছিল তারা।বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্তে নেমে এই চক্রান্ত ফাঁস হয়” বলে জানান তদন্তকারীরা।