Supreme Court: তিন বিচারপতির বেঞ্চে ওই মামলার শুনানি হয়
হাইলাইটস
- নির্ভয়া মামলায় দোষী সাব্যস্ত অক্ষয় সিংয়ের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল
- মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্টের ৩ বিচারপতির বেঞ্চ
- ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর নির্ভয়াকে ধর্ষণ করে ৬ জন
নয়া দিল্লি: ২০১২ সালের নির্ভয়া গণধর্ষণ ও হত্যার মামলায় (Nirbhaya Case) মৃত্যুদণ্ডের অপেক্ষায় থাকা দোষী ৪ জনের মধ্যে একজনের করা আবেদনে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের তিন বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ দোষী অক্ষয় সিংয়ের মৃত্যুদণ্ডাদেশই বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিল। "দোষী কোনওভাবেই ক্ষমা পাওয়ার যোগ্য নয়। ঈশ্বরও এ জাতীয় দানব তৈরি করতে লজ্জা বোধ করবেন। এমন কিছু অপরাধ থাকে যেগুলি দেখে 'মানবতাবাদও মাথা খুঁড়ে মরে' এবং এই মামলাটি তারই মধ্যে একটি", আবেদনকারীর রায় পুনর্বিবেচনা প্রসঙ্গে একথাই বলেন সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা। মঙ্গলবার এই মামলা থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন সর্বোচ্চ আদালতের (Supreme Court) প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে। তিনি বলেন, এই মামলায় যে আইনজীবী নির্ভয়ার মায়ের পক্ষ নিয়ে আদালতে সওয়াল করবেন তিনি তাঁর পরিবারেরই একজন সদস্য।
২০১২ সালে দিল্লিতে ২৩ বছর বয়সী এক তরুণীকে গণধর্ষণ ও হত্যা করা হয়। সেই মামলায় দোষী সাব্যস্ত পাঁচ ব্যক্তির মধ্যে অক্ষয় সিং নামে অন্যতম দোষী ব্যক্তি নিজের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিষয়ে পর্যালোচনা করার জন্যে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়। তাঁর আবেদনে বলা হয় যে, এমনিতেই বায়ু এবং জলদূষণের কারণে দিল্লিতে মানুষের আয়ু ক্রমশই ছোট হচ্ছে।
অক্ষয় সিংয়ের আইনজীবী রায় পুনর্বিবেচনার ক্ষেত্রে আরও যুক্তি দেখান যে এই মামলায় সিবিআই তদন্তের দাবি উঠলেও শেষ পর্যন্ত এর সিবিআই তদন্ত হয়নি। এই প্রসঙ্গে তিনি গুরুগ্রামে ২০১৭ সালের হত্যা মামলার কথা উল্লেখ করে বলেন, "কিন্তু গুরুগ্রামের স্কুল মামলায় সিবিআই তদন্ত হয় এবং দেখা যায় যে প্রাথমিকভাবে দোষী সাব্যস্ত বাস কন্ডাক্টরকে ক্লিন চিট দেয় সিবিআই"।
আইনের মারপ্যাঁচে সাজা থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে দোষী, সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপের আবেদন নির্ভয়ার মায়ের
বুধবার সুপ্রিম কোর্টে দোষী সাব্যস্ত অক্ষয় সিংয়ের পক্ষ নিয়ে তাঁর আইনজীবী বলেন, "তাঁকে ওই মামলায় জোর করে জড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল" এবং এর থেকেই "প্রকৃত অপরাধীদের" ধরার ক্ষেত্রে সরকারের অদক্ষতা প্রমাণ হয়।
আইনজীবী বলেন যে নির্ভয়ার মৃত্যুকালীন জবানবন্দির উপর পুরোপুরি ভরসা করা যায় না । এই প্রসঙ্গে তিনি তিহার জেলের প্রাক্তন জেলারের সাম্প্রতিক বইয়ের দিকেও ইঙ্গিত করেন। এই বইটিতে কারাবন্দি অবস্থায় নির্ভয়া কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত রাম সিংয়ের আত্মহত্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। তিহার জেলেই বন্দি রয়েছে দিল্লি গণধর্ষণ মামলার দোষীরা।
"নির্ভয়ার দোষীদের নিজের হাতে ফাঁসি দিতে চাই": নিজের রক্তে অমিত শাহকে চিঠি আন্তর্জাতিক শ্যুটারের
এই প্রসঙ্গে শীর্ষ আদালত বলে, "আমরা কোনও লেখকের মতামত অনুসারে যেতে পারি না। কোনও বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরে যদি কেউ বই লেখা শুরু করে এবং এই জাতীয় কথা বলে তবে এটা একটা বিপজ্জনক অবস্থায় চলে যাবে। এই ধরণের যুক্তি শুনতে হলে কোনওদিনই কোনও মামলার শেষ হবে না।বিচারের সময়েই তাঁর এই সব কথা বলা উচিত ছিল। এখন এই সব লেখার উদ্দেশ্য কী হতে পারে? কীভাবে আমরা এই সব কথার জবাব দেবো"। এরপরেই অক্ষয় সিংয়ের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে নির্ভয়া মামলার রায় পুনর্বিবেচনার এই মামলা থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ায় বর্তমানে বিচারপতি আর ভানুমথি, অশোক ভূষণ ও এএস বোপান্নার বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়।
অক্ষয় সিংয়ের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখার প্রসঙ্গে নির্ভয়ার মা আশা দেবী বলেন যে তিনি নিশ্চিত ছিলেন যে ওই দোষীর আবেদন বাতিল হবে এবং খুব তাড়াতাড়িই ৪ দোষীকে ফাঁসি দেওয়া হবে।
দেখে নিন এই খবরগুলোও: