নির্ভয়া মামলায় দোষী সাব্যস্ত দু’জনের প্রাণভিক্ষার আর্জি বাতিল করে দিল সুপ্রিম কোর্ট।
নয়াদিল্লি: নির্ভয়া মামলায় (Nirbhaya case) দোষী সাব্যস্ত চারজনের মধ্যে দু'জনের প্রাণভিক্ষার পিটিশন (Convicts' Plea Against Death Penalty) সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) খারিজ করে দিল মঙ্গলবার। বজায় রাখল ফাঁসির নির্দেশ। এদিন বিচারপতি এনভি রামানার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ নির্ভয়া কাণ্ডের অন্যতম দুই অপরাধী বিনয় শর্মা ও মুকেশের প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করে দেন। দিল্লি কোর্ট অপরাধীদের মৃত্যু পরোয়ানা ইস্যু করার পর এই আর্জি জানানো হয়েছিল দুই অপরাধীর তরফে। এটাই ছিল আদালতে তাদের পক্ষে ফাঁসি আটকানোর শেষ চেষ্টা। এখন কেবল বাকি রয়েছে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানানো।
আগামী ২২ জানুয়ারি ফাঁসির দিন। সাত বছর আগে এক ২৩ বছরের তরুণীকে ধর্ষণ ও নৃশংস অত্যাচারের অভিযোগে চার অভিযুক্তকে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছে আদালত।
নির্ভয়া কাণ্ডের লজ্জা ঢাকতে আসামীদের অঙ্গদানের আবেদন?
গত সপ্তাহে দিল্লি আদালত চার অপরাধীর মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে। তারপরই এই কিউরেটিভ পিটিশন জারি করা হয়। চার অপরাধী— মুকেশ সিংহ, পবন গুপ্তা, বিনয় শর্মা ও অক্ষয়কুমার সিংহর ফাঁসির সময় ২২ জানুয়ারি সকাল সাতটা।
এই মামলার আর এক অভিযুক্ত রাম সিংহকে তার সেলের মধ্যে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। ষষ্ঠ জন ছিল নাবালক। অপরাধের সময় ১৮ হতে তার সামান্যই বাকি ছিল। তিন বছর সংশোধনাগারে থাকার পর সে মুক্তি পেয়ে যায়।
তিহার জেলে 'ডামি' দিয়ে প্রস্তুতি, নির্ভয়া কাণ্ডের দোষীদের ফাঁসির তৎপরতা!
গত ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে ২৩ বছরের এক তরুণী তাঁর বন্ধুর সঙ্গে একটি সিনেমা দেখতে গিয়েছিলেন দক্ষিণ দিল্লিতে। ফেরার পথে তাঁরা বাসের জন্য দাঁড়িয়েছিলেন। এই সময় একটি ফাঁকা বেসরকারি বাসে তাঁদের তুলে নেওয়া হয়। বাসে ছিল ছ'জন ব্যক্তি। এরপর তারা ওই তরুণীকে ধর্ষণ ও লোহার রড দিয়ে নির্যাতন করে কয়েক ঘণ্টা ধরে। তারপর রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে দেয়। তাঁর সঙ্গীও আহত হন। ২৯ ডিসেম্বর মৃত্যু হয় ওই তরুণীর। গোটা দেশ রাগে, ক্ষোভে গর্জে উঠেছিল এমন অমানুষিক বর্বরতার বিরুদ্ধে।
নির্ভয়া মামলা কেবল ভারত নয়, গোটা বিশ্বেই চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিল। ওই তরুণীর উপরে হওয়া নিষ্ঠুরতায় শিহরিত হয়েছিল সকলে। এর ফলে এই সংক্রান্ত আইনেও কিছু পরিবর্তন করা হয়। পাশাপাশি নাবালকদের ক্ষেত্রেও আইনের দৃষ্টিভঙ্গি কিছুটা বদলানো হয়। বিশেষ ক্ষেত্রে তাদের সাবালকদের মতো করে বিচার করার কথা ভাবা হয়।