২০১২ দিল্লি গণ-ধর্ষণের ঘটনায় দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে
নয়াদিল্লি: ২০১২ দিল্লি গণধর্ষণের (2012 Delhi Gang-Rape) ঘটনায় সাজাপ্রাপ্ত অক্ষয় সিং-এর (Akshay Kumar Singh) পুনর্বিবেচনার আর্জি মঙ্গলবার শুনবে সুপ্রিম কোর্ট। খোলা আদালতে দুপুর ২টোয় মামলার শুনানি হবে। গণধর্ষণের ঘটনায় সাজাপ্রাপ্ত চারজনের মধ্যে একজন অক্ষয় সিং, সাত বছর আগে দিল্লিতে এক যুবতীকে গণধর্ষণ ও তাঁর ওপর অত্যাচারের ঘটনায় জড়িত সে। শীর্ষ আদালতে এক সপ্তাহ আগে তার মৃত্যুদণ্ডের সাজা রদ করার আবেদন জানায় অক্ষয়। শেষবারের মতো প্রাণভিক্ষার আর্জি জানিয়েছে তারা, অন্যদিকে খুব দ্রুতই তাদের ফাঁসি সাজা কার্যকর করা হবে বলে মনে করা হচ্ছে, মৃত্যুদণ্ড রদ করার পিছনে হিন্দু ধর্মের কথা এবং দিল্লির দূষণকে কারণ হিসবে দেখানো হয়েছে।
তার আইনজীবীর ১৪ পাতার ফৌজদারি পনর্বিবেচনার আর্জিতে, অক্ষয় সিং জানিয়েছে: “বয়স যখন কমছে, তখন কেন মৃত্যুদণ্ড...এটা আপনাদের বেদ, পুরাণ এবং উপনিষদে উল্লেখ রয়েছে যে...মানুষ হাজার বছর বাঁচে...এখন এটা কলিযুগ, এই যুগে মানুষের বয়সকাল অনেক কমেছে। এখন এটা ৫০-৬০ বছর হয়েছে...এটা একটা সত্য বিশ্লেষণ...যখন একজন ব্যক্তি জীবনের কঠোর বাস্তবের সামনে, তখন সে নিজেই একটা মৃতদেহ ছাড়া কিছুই নয়”।
আবেদনে আরও বলা হয়েছে, দেশের রাজধানীর বাতাসের অবস্থা “বিস্ফোরিত এবং একটি গ্যাস চেম্বারের মতো”, এবং পানীয় জলের অবস্থাও খুব খারাপ-“বিষে ভর্তি”। আরও বলা হয়েছে, “জীবনের মেয়াদ ক্রমশই কমছে, তাহলে কেন মৃত্যুদণ্ড”?
শেষের দিকে, এই আবেদনে, কঠোর পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়া মানুষের প্রতি মহাত্মা গান্ধির পরামর্শ তুলে ধরা হয়েছে., “সবচেয়ে দরিদ্র এবং অসহায় মানুষের কথা ভাবো…”।
ধর্ষণের আরেক অপরাধী বিনয় শর্মার প্রাণভিক্ষার আর্জি দিল্লি সরকার ও কেন্দ্র খারিজ করার এক সপ্তাহ আগে পুনর্বিবেচনার আবেদন করে অক্ষয় সিং। বিনয় কুমার, মুকেশ সিং এবং পবন গুপ্তেরও প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করে দিয়েছে আদালত।
এই সমস্ত আইনি প্রক্রিয়াগুলি শেষ হলেই, চারজনকে দিল্লির তিহার জেলে ফাঁসি দেওয়া হবে, সেখানে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
২০১২-এর ডিসেম্বরে অক্ষয় সিং সহ পাঁচজন, তাদের মধ্যে একজন নাবালক, দক্ষিণ দিল্লিতে চলন্ত বাসে ২৩ বছরের এক প্যারামেডিক্যাল ছাত্রীকে গণধর্ষণ করে তাঁর ওপর অকথ্য অত্যাচার চালায়। বাধা দিলে, তাঁকে লোহার রড দিয়ে আঘাত করা হয়। সঙ্গে থাকা তাঁর বন্ধুকেও ব্যাপক মারধর করা হয় এবং দুজনকে একটি জায়গায় ছুঁড়ে ফেলা হয়, ছাত্রী নগ্ন ছিলেন এবং তাঁর শরীর থেকে রক্তপাত হচ্ছিল। অত্যাচারের ১৩দিন পর ওই ছাত্রীর মৃত্যু হয় এবং তাঁর নাম দেওয়া হয় “নির্ভয়া”, দেশজুড়ে সেই ঘটনা ছড়িয়ে পড়ে এবং সকলে মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ হন।