মাওবাদী প্রভাবিত জেলায় কৃষি সমস্যা, খরা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ আজ আলোচনাসূচির মূল বিষয়বস্তু
নিউ দিল্লি:
আজ রাষ্ট্রপতিভবনে আয়োজিত নীতি আয়োগের পঞ্চম গভর্নমেন্ট কাউন্সিলের বৈঠকে (NITI Aayog's fifth governing council meeting) সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Prime Minister Narendra Modi)। সম্প্রতি, লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (National Democratic Alliance) নতুন সরকার গঠনের পর এই প্রথম বৈঠক হবে পরিকল্পনা কমিটির। মাওবাদী প্রভাবিত জেলায় কৃষি সমস্যা, খরা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ আজ আলোচনাসূচির মূল বিষয়বস্তু। বৈঠকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা, কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের লেফটন্যান্ট রাজ্যপালরা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। তবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (West Bengal Chief Minister Mamata Banerjee) এই বৈঠকে যোগ দিতে অস্বীকার করেছেন, তিনি বলেছেন, এই বৈঠক ‘ফলহীন’, কারণ রাজ্যকে সমর্থন যোগানোর মতো কোনও আর্থিক ক্ষমতা নেই নীতি আয়োগের। তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও’ও (Telangana K Chandrashekar Rao) এই বৈঠকে যাবেন না।
এখানে নীতি আয়োগ (NITI Ayog) গভর্নিং কাউন্সিল বৈঠকের ১০ টি মূল তথ্য রইল:
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (West Bengal Chief Minister Mamata Banerjee) নিশানায় ইদানীং একটিই নাম, ভারতীয় জনতা পার্টি! রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে জোরদার লড়াই চালাচ্ছেন তিনি। মমতা আজ নীতি আয়োগের (NITI Aayog meeting) বৈঠকে যোগ দিতে অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন যে, কেন্দ্র যা বিষয় ঠিক করবে কেবল সেটা নিয়েই রাজ্যগুলি আলোচনা করবে এটা মেনে নেওয়া যায় না।
কে চন্দ্রশেখর রাও ওরফে কেসিআর (K Chandrashekar Rao) আজ বৈঠকে যোগ দেবেন না কারণ তিনি তেলঙ্গানার একটি সেচ প্রকল্প উদ্বোধনের প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত। তিনি এই সপ্তাহেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানাবেন বলা কথা ছিল, কিন্তু তা করেননি। জাতীয় নির্বাচনের ফলাফলের পরও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে উঠতে পারেননি কেসিআর। গত মাসে প্রধানমন্ত্রী মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানেও তিনি যাননি।
অন্ধ্রপ্রদেশের নতুন মুখ্যমন্ত্রী জগন মোহন রেড্ডি (Andhra Pradesh's new chief minister Jagan Mohan Reddy) শুক্রবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের (Union Home Minister Amit Shah) সঙ্গে তাঁর রাজ্যকে ‘বিশেষ অবস্থান' (special status) জানানোর দাবিতে সাক্ষাৎ করেন, নীতি আয়োগের বৈঠকের ঠিক একদিন আগে। জগন মোহন রেড্ডি জানান, তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার চেষ্টা করেছেন এবং তাঁকে বুঝিয়ে বিশেষ অবস্থান দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আর্জি জানানোর বন্দোবস্ত করেন। আজ, শনিবার নীতি আয়োগের বৈঠকে সেই বিষয়টি জানতে চাইবেন রেড্ডি।
বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারও (Bihar Chief Minister Nitish Kumar) তার রাজ্যকে ‘বিশেষ অবস্থান' দেওয়ার দাবি তুলছেন। বিজেপির অন্যতম জোটের সদস্য নীতিশ কুমার অনেক বছর ধরেই রাজ্যের এই বিশেষ অবস্থান চেয়ে চাপ দিয়ে চলেছেন।
উড়িষ্যার জন্য বিশেষ অবস্থান আদায়ের দাবিতে, ক্ষমতাসীন বিজু জনতা দল (Biju Janata Dal (BJD)) সংসদে YSR কংগ্রেস (YSR Congress) এবং জেডি (ইউ) (JD(U))-এর সঙ্গে যোগদানের পরিকল্পনা করছে এবং ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের দাবি উত্থাপন করছে। “যদিও বিষয়টি একেবারে শুরুর পর্যায়ে রয়েছে, তবে সংসদে প্রভাব ফেলার জন্য আমরা অন্য পক্ষের সঙ্গে মিলেই দাবি জানাব,” বলেন বিজেডি নেতা ও পুরী লোকসভার সংসদ সদস্য পিনাকী মিশ্র (Pinaki Mishra)।
মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ (Madhya Pradesh Chief Minister Kamal Nath ) কংগ্রেস শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের জন্য নৈশভোজের করেছেন। কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং, ভূপেশ বাঘেল, ভি নারায়ণসামি ও অশোক গেহলতকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এএনআই জানিয়েছে, দলের অন্যান্য বরিষ্ঠ নেতারাও এই নৈশভোজে উপস্থিত হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
কংগ্রেসের শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা কৃষকদের বিষয়গুলি উত্থাপন করবেন এবং নীতি আয়োগের বৈঠকে কৃষকদের গৃহীত ঋণ মকুবের সুবিধার অংশীদারিত্বের কথা বলে আশা করা হচ্ছে।
৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সালে প্রথম গভর্নিং কাউন্সিলের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী কোঅপারেটিভ ফেডারেলিজমকে উৎসাহিত করা এবং রাজ্যগুলির সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে জাতীয় সমস্যাগুলি মোকাবিলা করার মতো মূল বিষয়গুলি সামনে এনেছিলেন। ১৫ জুলাই, ২০১৫ তারিখে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর তিনটি উপদল এবং দুইটি টাস্ক ফোর্স নিয়ে এই অগ্রগতির পর্যালোচনা করেন।
২৩ এপ্রিল, ২০১৭ তারিখে অনুষ্ঠিত তৃতীয় বৈঠকে কৌশল ও দূরদৃষ্টির মাধ্যমে দেশের উন্নয়নের বিষয়সূচিই প্রধান হয়ে ওঠে। গত বছর ১৭ জুন অনুষ্ঠিত চতুর্থ গভর্নিং কাউন্সিলের বৈঠকে কৃষকদের দ্বিগুণ আয় এবং ফ্ল্যাগশিপ স্কিমগুলির অধীনে অগ্রগতির বিষয়ে পদক্ষেপ করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী মোদির প্রথম মেয়াদে অর্থাৎ ২০১৭ সালে নীতি আয়োগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বস্তুত পুরনো পরিকল্পনা কমিশনের বদলে এই আয়োগ সামনে আসে। রাজ্যগুলির সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়নকে বাড়ানো, ও দেশের সম্পূর্ণ বিকাশের জন্য গভর্নিং কাউন্সিলই দায়ী।
Post a comment