এনডিএ থেকে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে শিবসেনাকে।
হাইলাইটস
- শিবসেনার মুখপত্র ‘সামনা’-তে আক্রমণ করা হল বিজেপিকে
- শিবসেনার সাংসদদের বিরোধীদের আসনে বসার ব্যবস্থা করেছে বিজেপি
- শিবসেনার সাংসদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পরেই এই সিদ্ধান্ত
নয়াদিল্লি: আবারও শিবসেনার (Shiv Sena) মুখপত্র ‘সামনা'-তে আক্রমণ করা হল বিজেপিকে (BJP)। মহারাষ্ট্রে বিজেপির সঙ্গে জোট থেকে বেরিয়ে এসে কার্যত রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে মিলেই সরকার গড়ার চেষ্টা করছে শিবসেনা। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের মুখপত্রতে আরও একবার আক্রমণ করা হল গেরুয়া শিবিরকে। শিবসেনার সাংসদদের বিরোধীদের আসনে বসতে বাধ্য করার পর এনডিএ থেকে তাদের বহিষ্কার করার কথাও ঘোষণা করেছে বিজেপি। কোনও আলোচনা না করেই তারা ঘোষণা করেছে বলে জানিয়েছে শিবসেনা।
রবিবার সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী রবিবার জানান, সংসদের দুই কক্ষ থেকেই শিবসেনা সাংসদদের বসার জায়গা পরিবর্তন করা হয়েছে। শিবসেনা সাংসদ অরবিন্দ সাওয়ান্ত কেন্দ্রের মন্ত্রিত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্তের পরদিনই এই কথা জানিয়ে দেন প্রহ্লাদ যোশী।
‘সামনা'-র সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, ‘‘বিজেপি নেতা প্রহ্লাদ যোশী এনডিএ থেকে শিবসেনাকে সরিয়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। মহারাষ্ট্রে এনসিপি ও কংগ্রেসের সঙ্গে মিলে শিবসেনা সরকার গঠন করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। শিবসেনার সাংসদদের সংসদের উভয় কক্ষেই বিরোধী আসনে বসতে বলা হয়েছে। বিজেপির হয়ে যারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা শিবসেনার কাজ সম্পর্কে কিছু জানেন না।''
প্রায় তিন দশকের জোট বিজেপি ও শিবসেনার। কিন্তু এবার মহারাষ্ট্রে তাদের মধ্যে সংঘাত চরমে পৌঁছয়। নির্বাচনে একসঙ্গে লড়লেও ফলপ্রকাশের পরে মুখ্যমন্ত্রিত্বের পদ সমান সময়কালে ভাগ করে নেওয়া বা মন্ত্রিসভায় সমান বণ্টনের শিবসেনার দাবি মেনে নেয়নি গেরুয়া শিবির। এরপর শিবসেনা সাংসদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করলে শিবসেনাকে এনডিএ থেকে বহিষ্কার করে বিজেপি। এদিকে মহারাষ্ট্রে সরকার গড়া নিয়ে শিবসেনা আলোচনা চালাচ্ছে এনসিপি ও কংগ্রেসের সঙ্গে।
শিবসেনার সম্পাদকীয়তে আরও বলা হয়, ‘‘বিজেপি যখন এল কোনও দল তাদের সমর্থন করতে চায়নি। এনডিএ যখন তৈরি হয় অনেক নেতা, যাঁরা আজ বর্তমান সরকারের নানা পদে রয়েছেন, তাঁরা কোনও পদেই ছিলেন না। অনেকের তো জন্মই হয়নি। আমরা এমন সময় এনডিএ-তে ছিলাম যখন কেউই বিজেপির সঙ্গে থাকতে চায়নি। এবং জাতীয় হিন্দুবাদ খুব বেশি মানুষ পছন্দ করত না।''
সেখানেও আরও বলা হয়, ‘‘এনডিএ যখন তৈরি হয়, তখন কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তই নেওয়া হত না। জর্জ ফার্নান্ডেজ ও এলকে আদবানির সঙ্গে জোটসঙ্গীরা বৈঠকের পরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হত।''
ওই সম্পাদকীয়তে প্রশ্ন করা হয়, এনডিএ-র জোটসঙ্গীরা কি একমত হয়েছিল শিবসেনাকে জোট থেকে বাদ দেওয়ার বিষয়ে। এমনকী, এও অভিযোগ তোলা হয় জম্মু ও কাশ্মীরের পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টিকে এনডিএ-তে নেওয়ার আগে এনডিএ-র অনুমতি নেওয়া হয়নি।
সম্পাদকীয়তে আরও লেখা হয়, নীতিশ কুমার নরেন্দ্র মোদিকে অপমান করার পরেও তাঁর জনতা দল ইউনাইটেড এনডিএ-র শরিক দল হয়। কিন্তু তখন শিবসেনার কাছে এবিষয়ে জানতে চাওয়া হয়নি। যখন সবাই বিজেপির পাশ থেকে সরে গিয়েছিল, তখনও শিবসেনা গেরুয়া শিবিরের পাশে ছিল বলে জানানো হয়। এরপর আরও লেখা হয়, সেই শিবসেনাকেই এনডিএ থেকে বহিষ্কার করা হল এবং সেটাও বাল ঠাকরের মৃত্যুদিনে। এনডিএ-র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বাল ঠাকরের মৃত্যুদিনেই এনডিএ-র সঙ্গে এই আচরণ করা হল বলে জানানো হয় ওই সম্পাদকীয়তে।