নরেন্দ্র মোদি সরকারকে ভাষা-যুদ্ধের হুঁশিয়ারি কমল হাসানের।
চেন্নাই: গত শনিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর (Amit Shah) হিন্দি ভাষাকে সারা ভারতের সাধারণ ভাষা করার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে (Hindi Imposition) ওঠা তীব্র প্রতিবাদের কণ্ঠস্বরে নতুন স্বর যোগ হল। অভিনেতা-রাজনীতিবিদ কমল হাসান (Kamal Hasan) সোমবার ক্ষোভ উগরে দিলেন অমিতের এহেন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে। মাক্কাল নিধি মালম দলের মুখ্য কমল জানান, ভারতের গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোয় এহেন সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত কেন্দ্রের। তিনি নরেন্দ্র মোদি সরকারকে ভাষা-যুদ্ধের হুঁশিয়ারি জানিয়ে বলেন, এটা ভারত বা তামিলনাডু কারওরই কাম্য নয়। এর আগে জুলাই মাসেও একই ভাবে কেন্দ্রের উপরে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন কমল। জাতীয় শিক্ষা নীতির একটি খসড়ায় দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলিকে হিন্দি ভাষা শিক্ষার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তখনও কমল জানিয়ে দেন, ২০১৭ সালের জালিকাট্টু প্রতিবাদের থেকেও বড় প্রতিবাদ তাঁরা করবেন এমন প্রস্তাবের বিরুদ্ধে।
হিন্দি হোক ভারতের জাতীয় ভাষা, হিন্দি দিবসে প্রস্তাব অমিত শাহের
কমল বলেন, ‘‘ভারতের প্রজাতন্ত্র গঠনের সময় বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। এখন কোনও শাহ, সুলতান বা সম্রাট সেই প্রতিশ্রতিকে ভাঙতে পারবেন না। জালিকাট্টু কেবল একটা প্রতিবাদ ছিল। ভাষার জন্য আমাদের যুদ্ধ তার চেয়ে অনেক অনেক বড় হবে। ভারত বা তামিলনাডুর এমন যুদ্ধের কোনও প্রয়োজন নেই। আমরা সব ভাষাকেই সম্মান করি। কিন্তু মাতৃভাষা সব সময়ই তামিল থাকবে।''
তিনি আরও বলেন, ‘‘দেশের অধিকাংশই আনন্দের সঙ্গে ভারতের জাতীয় সঙ্গীত দায় যা বাংলায় লেখা। কারণ, যে কবি এটি লিখেছেন তিনি সমস্ত ভাষা ও সংস্কৃতিকে সম্মান করেই লিখেছেন। তবেই সেটা আমাদের জাতীয় সঙ্গীত হয়েছে।''
হিন্দিকে সারা দেশের ভাষা হিসেবে গড়ে তোলার অমিত শাহর বক্তব্য ঘিরে দেশ জুড়ে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। একে কেন্দ্রের হিন্দি আগ্রাসন হিসেবেই দেখছেন বহু মানুষ।
কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এই বক্তব্যকে ‘‘ভাষার নামে সঙ্ঘ পরিবারের নতুন যুদ্ধক্ষেত্র রচনার চিহ্ন'' হিসেবে ব্যক্ত করেছেন।
ডিএমকে প্রধান এমকে স্টালিন জানিয়েছেন, ‘‘এটা ইন্ডিয়া, হিন্ডিয়া নয়।''
তামিলনাডুতে শাসক এআইডিএমকে ও পিএমকে, উভয় দলই শাহর মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন।
কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এইচডি কুমারাস্বামী টুইট করে অমিত শাহর মন্তব্যের প্রতিবাদ করে জানান, কোনও ভাষাকেই অন্যের উপরে চাপিয়ে দেওয়া চলবে না।
বহু দশক ধরেই তামিলনাডু হিন্দি ভাষার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আসছে।