West Bengal: ১,৮০০রও বেশি কোভিড জয়ীদের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে কাজে লাগানো হয়েছে
হাইলাইটস
- করোনা জয়ীরা এখন কাজ করছেন রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে
- অন্য রোগীদের সেবাযত্ন করছেন তাঁরা
- প্রায় ১,৮০০ কোভিড জয়ী এভাবেই কর্মরত বিভিন্ন রাজ্য সরকারি হাসপাতালগুলোতে
কলকাতা: একসময় কোভিড-১৯ বাসা বেঁধেছিল তাঁদের শরীরেও, পরিযায়ী শ্রমিক তাঁরা, ভয় ছিল জীবনযুদ্ধে হেরে যাওয়ার। কিন্তু না, তাঁরা ভয় পাননি, বুক চিতিয়ে লড়েছেন ভয়ঙ্কর ওই রোগের (Coronavirus) সঙ্গে এবং শেষপর্যন্ত তাঁদের কাছে হার মানতে বাধ্য হয়েছে করোনা (Covid Warriors)। পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে আগে কাজ করলেও লকডাউনে কাজ হারিয়ে তাঁরা ফিরে আসেন বাংলায় (West Bengal)। তারপরের লড়াইটা সাংঘাতিক কঠিন। একে তো শরীরে ক্রমশ জাঁকিয়ে বসছে করোনা ভাইরাস, তারপর মাথায় ভাবনা দুবেলা দুমুঠো অন্নসংস্থানের। তবে যখন তাঁদের অদম্য জেদের কাছে, হার না মানা মানসিকতার কাছে পরাজয় স্বীকার করলো করোনা, তখন যেন তাঁদের জীবনে একটাই নতুন মন্ত্র "জীবনমৃত্যু পায়ের ভৃত্য, চিত্ত ভাবনাহীন।" কোভিড-১৯ কে হারানো ওই পরিযায়ী শ্রমিকরা বর্তমানে একটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক এবং নার্সদের সঙ্গে ওই মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত অন্য রোগীদের সেবা-যত্ন করতে সহায়তা করছেন।
ওই পরিযায়ীদের মধ্যে অনেকে একসময় গুজরাটের টাইলস কারখানায় বা চেন্নাইয়ের নির্মাণ শিল্পে অথবা বেঙ্গালুরুর হোটেলগুলিতে কাজ করতেন। এখন তাঁরাই আইসিইউতে থাকা কোভিড রোগীদের সারিয়ে তুলতে দিনরাত এক করে খাটছেন। তাঁদের ভয় নেই কিছু হারানোর, আজ তাঁরা অকুতোভয়।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই কোভিড জয়ীদের কাজের জন্য কিছু পারিশ্রমিকও দিচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, নিজেদের নিষ্ঠা দিয়ে করোনা রোগীদের খুব কাছের মানুষ হয়ে উঠছেন তাঁরা।
এই সংক্রামক রোগের চিকিৎসায় রাজ্যের শীর্ষস্থানীয় হাসপাতাল হলো বেলেঘাটা আইডি, সেখানে কোভিড জয়ী দুই পরিযায়ী সিসিইউতে থাকা অন্য করোনা রোগীদের নিবিড় সেবাযত্ন করছেন। খুদু শেখ (২৪) এবং রাজীব শেখ (২৭) রাজ্য সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত কোভিড ওয়ারিয়র্স ক্লাবের দুই গর্বিত সদস্য।
"আমরা সিসিইউয়ে থাকা রোগীদের যত্ন নিই, কেউ বসতে পারেন না তো কেউ আবার খেতেও পারেন না, আমরা তাঁদের সাহায্য করি আর তাঁরা আমাদের আশীর্বাদ করেন", বলেন কোভিড জয়ীদের মধ্যে অন্যতম খুদু শেখ।
"সবাই যদি ভয় পান ... চিকিৎসক এবং নার্সরাও ... তবে কে রোগীদের চিকিৎসা করবেন। আমরা কিন্তু মোটেই ভয় পাই না", বলেন আরেক কোভিড জয়ী রাজীব শেখ।
গত ৩০ জুন থেকে ১,৮০০রও বেশি কোভিড জয়ীদের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে কাজে লাগানো হয়েছে। তাঁদের কীভাবে কোভিড রোগীদের সেবাযত্ন করতে হবে সেবিষয়ে একটি প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়।
আইসিইউতে যেসমস্ত কোভিড রোগীরা নিজেদের পরিবারের কারও মুখ দেখতে পারেন না বা কথা বলতেও পারেন না তাঁদের কাছে এই কোভিড ওয়ারিয়র্স যেন একটি লাইফলাইন।