ভারতের মাটিতে দাঁড়িয়ে ভারতেরই বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করছেন যাঁরা তাঁদের রেয়াত করা হবে না, স্পষ্ট জানালেন Yogi Adityanath
হাইলাইটস
- ভারতে বসে ভারতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র মেনে নেওয়া হবে না: যোগী আদিত্যনাথ
- লখনউয়ে সিএএ বিরোধিতায় অবস্থান বিক্ষোভে বসেছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ
- প্রতিবাদকারীদের দমাতে তৎপর উত্তরপ্রদেশের পুলিশ
লখনউ: "আজাদি" স্লোগানে আপত্তি উত্তরপ্রদেশ মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের। তাঁর রাজ্যে লাগাতার সিএএ বিরোধী বিক্ষোভ চলছে আর তা দমাতে উঠে-পড়ে লেগেছেন যোগী। সম্প্রতি লখনউয়ের বিখ্যাত ক্লক টাওয়ারের নিচে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (CAA) বিরোধিতায় লক্ষ লক্ষ মানুষ অবস্থান বিক্ষোভে বসেছেন। পাশাপাশি এনআরসির (NRC) বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ করা হচ্ছে ওই সমাবেশে। ওই জমায়েত থেকে বিক্ষোভকারীদের মুখে উঠে আসছে "আজাদি" স্লোগানও। আর এতেই প্রবল আপত্তি উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) মুখ্যমন্ত্রীর। রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে যোগী বলেছেন যাঁরা এই ধরণের বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে "আজাদি" স্লোগান দেবেন তাঁদের "দেশদ্রোহী" বলে গণ্য করা হবে। ওই বিক্ষোভকারীদের কড়া হাতে দমন করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি (Yogi Adityanath)। কানপুরে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের হয়ে প্রচার সমাবেশে যোগ দিয়ে যোগী আদিত্যনাথের বার্তা: "প্রতিবাদের নামে কেউ যদি আজাদি স্লোগান দেন তবে সেই বিষয়টিকে দেশদ্রোহিতার মতো অপরাধ বলে গণ্য করা হবে এবং সরকার এর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেবে। এই ধরণের ঘটনা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। ভারতের মাটিতে দাঁড়িয়ে ভারতেরই বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করছেন যাঁরা তাঁদের রেয়াত করা হবে না"।
উত্তরপ্রদেশে এর আগেও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ হয়েছে। আর প্রতিবারই দেখা গেছে যে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ সেই প্রতিবাদ-বিক্ষোভের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করেছে। এবারেও লখনউয়ে ক্লক টাওয়ারের নিচে নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় অবস্থানরত লক্ষ লক্ষ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে "সাম্প্রদায়িক হিংসা" ও "বেআইনি সমাবেশ"-করার মতো অভিযোগ আনা হল।
CAA: "হোক বিতর্ক", মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাহুল গান্ধিকে অমিত শাহের চ্যালেঞ্জ
ইতিমধ্যেই পুলিশ তিনটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করেছে, যে মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন খ্যাতনামা উর্দু কবি মুনাওয়ার রানার দুই মেয়ে সুমাইয়া রানা এবং ফৌজিয়া রানার নামও রয়েছে।
এই ধরণের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, "কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি এবং বাম দলগুলির এই ধরণের বিষয়গুলি নিয়ে রাজনীতি করা লজ্জাজনক। পাশাপাশি তাঁরা মহিলাদেরও এই ধরণের বিক্ষোভে যোগ দিতে বাধ্য করছে, অথচ দেখা গেছে যে বিক্ষোভে যোগদানকারী ওই মহিলারা সিএএ-র অর্থও জানেন না"।
‘‘সব বাগ হয়ে যাবে শাহিনবাগ'': সিএএ-বিরোধিতা প্রসঙ্গে চন্দ্রশেখর আজাদ
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, বাংলাদেশ থেকে ২০১৫ সালের আগে আগত অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বিরোধীদের মতে, এই আইন বৈষম্যমূলক এবং সংবিধানে বর্ণিত দেশের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তির পরিপন্থী। কিন্তু নিজেদের জায়গা থেকে সরতে নারাজ কেন্দ্রীয় সরকার। এই দেশে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন প্রয়োগ করা হবে বলেই সাফ জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অমিত শাহ। সম্প্রতি লখনউয়ের সভামঞ্চ থেকে রীতিমতো হুঙ্কার ছেড়ে তাঁকে বলতে শোনা যায় যে, যাই-ই হয়ে যাক না কেন সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন দেশে প্রয়োগ করা হবেই।
ওই সভা থেকে বিরোধীদের উদ্দেশে তোপ দাগেন মোদি মন্ত্রিসভার প্রথম সারির মুখ অমিত শাহ। বিরোধীরা এই আইনের "প্রয়োজনীয়তা দেখতে পাচ্ছেন না কারণ তাঁদের চোখ ভোটব্যাঙ্ক রাজনীতির মুখোশে আটকা রয়েছে", এই বলে রাহুল গান্ধি, মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়, অখিলেশ যাদবদের মতো রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীকেও আক্রমণ করেন তিনি।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, "এই কথা সকলকে জানিয়ে রাখি, এই আইনটি কোনওভাবেই প্রত্যাহার করা হবে না, যে যতই প্রতিবাদ করুন না কেন... আমরা বিরোধীদের ভয় পাই না, আমরা বিক্ষোভ প্রতিবাদের মধ্যেই জন্মগ্রহণ করেছি"।