অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এপি শাহ কড়া সমালোচনা করেছেন রঞ্জন গগৈয়ের মনোনয়ন পাওয়ার।
নয়াদিল্লি:
‘‘ক্ষমতার বিচ্ছিন্নকরণের মৃত্যুঘণ্টা'': রঞ্জন গগৈয়ের মনোনয়ন নিয়ে প্রাক্তন বিচারপতি
ভারতের প্রাক্তন প্রধান বিচারপিত রঞ্জন গগৈকে রাজ্যসভার আসনের জন্য মনোয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন বেশ কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। গগৈকে মনোনয়ন দেওয়ার ফলে যে বার্তা গেল, তা নিয়ে তাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁরে বেশির ভাগই সহমত করেছেন যে, এর ফলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার পথে মারাত্মক ঝুঁকির সৃষ্টি হবে। পাশাপাশি এর ফলে সাধারণ মানুষের বিশ্বাস কেঁপে যাবে বলেও মনে করছেন তাঁরা। সোমবার সন্ধ্যায় তাঁর মনোনয়নের ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সাংবাদিকদের রঞ্জন গগৈ বলেছেন, ‘‘আমাকে শপথগ্রহণ করতে দিন। তারপর আমি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে এই বিষয়ে বিশদে কথা বলব।''
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এপি শাহ NDTV-কে রঞ্জন গগৈ-এর মনোনয়ন প্রসঙ্গে জানান, ‘‘আমি আঁতকে উঠেছিলাম। এবং তারপর ভাবতে বসলাম এর ফলে কোন বার্তা যাচ্ছে।''
তিনি আরও বলেন, ‘‘এর ফলে বিচার ব্যবস্থার প্রতি বার্তা যাচ্ছে, যদি আপনি ‘এগজিকিউটিভ'-দের অনুকূলে রায় দেন তাহলে আপনি পুরস্কৃত হবেন। তা না করলে আপনার প্রতি বিরূপতা দেখানো হবে কিংবা আপনাকে বদলি করে দেওয়া হবে অথবা আপনাকে পদোন্নয়নের জন্য বিচার করা হবে না।''
তিনি একে ‘‘ক্ষমতার বিচ্ছিন্নকরণ এবং বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতার মৃত্যুঘণ্টা'' বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রধান বিচারপতি গগৈ সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নবিদ্ধ নেতৃত্বের ক্ষেত্রে শেষতম।'' তিনি এর আগে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঙ্গনাথ মিশ্রের কংগ্রেসে যোগ দিয়ে সাংসদ হওয়া কিংবা প্রাক্তন বিচারপতি বাহারুল ইসলামের গৌহাটি হাইকোর্টের বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হওয়ার আগে রাজ্যসভার সাংসদ হওয়ার প্রসঙ্গটি উল্লেখ করেন।
তাঁর মতে ওই দু'টি ঘটনার ফলে বিচারব্যবস্থার পুরনো জৌলুস ফিরে পেতে ১৫ বছর লেগেছিল।
এদিকে বিচারপতি কুরিয়ান জোসেফ জানাচ্ছেন, ‘‘আমার মতে, ভারতের এক প্রাক্তন বিচারপতির রাজ্যসভার সদস্য হওয়ার মনোনয়নকে মেনে নেওয়াটা একজন সাধারণ মানুষের বিচার ব্যবস্থার প্রতি আত্মবিশ্বাসকে টলিয়ে দেয়, যেটা ভারতীয় সংবিধানের প্রাথমিক কাঠামো।''