Coronavirus update: রবিবার সকলকে বাড়িতে থাকার আর্জি প্রধানমন্ত্রীর।
নয়াদিল্লি:
দেশে করোনা ভাইরাস (Coronavirus) সংক্রমণে আক্রান্তর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২২৩। তাঁদের মধ্যে ৩২ জন বিদেশি। কেবল বৃহস্পতিবারই সারা দেশে অন্তত ৫০ জনের শরীরে ধরা পড়েছে সংক্রমণ। এই নিয়ে একদিনে সবথেকে বেশি আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটল দেশে। অন্তত চারজনের মৃত্যুর কথা জানা গিয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জনতার উদ্দেশে আর্জি জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi) রবিবার ‘জনতা কার্ফু’-র (Janata Curfew) যে আহ্বান জানিয়েছেন তা পালন করার জন্য। জানিয়েছে, একদিনের এই সহযোগিতা সংক্রমণের শৃঙ্খলাভঙ্গ করতে সাহায্য করবে। করোনা সংক্রান্ত কোনও প্রশ্ন থাকলে সকলকে ১০৭৫ নম্বরে ফোন করারও আর্জি জানানো হয় মন্ত্রকের তরফে। বৃহস্পতিবার রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় বলেন, রবিবার ২২ মার্চ করোনা সংক্রমণ রুখতে সামাজিক দূরত্ব তৈরি করার এক প্রয়াস হিসেবে ‘জনতা কার্ফু’ পালন করার জন্য।
এদিন মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, কারও আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। কোনও অত্যাবশ্যক খাদ্যের অভাব হবে না। এদিন মন্ত্রকের সচিব লব আগরওয়াল সকলের কাছে আর্জি জানান, কেউ যেন কোনও ধর্মীয় সমাবেশে এখন যোগ না দেন। অনুরোধ করেন, ওই ধরনের উৎসব এখন বাতিল করে দেওয়া হয়। উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় ‘রাম উৎসব' বন্ধ করার পর এই কথা জানালেন লব।
তিনি আরও বলেন, ‘‘যাঁরা কোয়ারান্টাইন এড়িয়ে চলবেন, রাজ্যের ক্ষমতা রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার। আমরা রাজ্যগুলিকে বলে দিয়েছি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে। আমরা লড়াই করছি একটি অতি সংক্রামক অসুখের সঙ্গে।''
আইসিএমআর-এর চিকিৎসক ড. রমন গঙ্গাকেধকর জানিয়েছেন, ভারতে এখনও পর্যন্ত ১০ শতাংশ ক্ষমতা রয়েছে পরীক্ষা করার। এবিষয়ে দেশের চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা দুশ্চিন্তা ব্যক্ত করেছেন। জানিয়েছেন, বিপুল ভাবে পরীক্ষা করাটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। দক্ষিণ কোরিয়া এভাবেই সক্ষম হয়েছে করোনার সঙ্গে লড়তে।
আইসিএমআর আরও জানিয়েছে, ভারত এখনও সংক্রমণের দ্বিতীয় স্তরে রয়েছে। এর অর্থ সংক্রমণ স্থানীয় ভাবে হচ্ছে। অর্থাৎ যাঁরা বিদেশ থেকে এসেছেন তাঁদের মাধ্যমে। তৃতীয় স্তরে সংক্রমণ আরও ব্যাপক হারে পৌঁছয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘জনতা কার্ফুতে কেউ তাঁদের বাড়ি থেকে বেরোবেন না কিংবা প্রতিবেশীদের কাছে যাবেন না। কেবল যাঁরা অত্যাবশকীয় পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত তাঁরা বেরোবেন।'' প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই একদিনের প্রয়াস মানুষকে স্বেচ্ছা-বন্দিত্বের অভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে আর্জি জানিয়েছেন, ৬৫ বছরের বেশি বয়সিরা যেন ঘর থেকে না বেরোন। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ৬৫-র বেশি বয়সি ও ১০ বছরের কম বয়সিদের ক্ষেত্রে করোনা সংক্রমণে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
বহু রাজ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ রাখা হয়েছে। এদিন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, শপিং মলও বন্ধ রাখা হবে রাজ্যে। এদিকে পঞ্জাবে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে সমস্ত কর্মীদের ঘরে থেকে কাজ করার আর্জি জানানো হয়েছে। গ্রুপ বি ও সি-এর কর্মীদের ৫০ শতাংশ বাড়িতে বসে কাজ করছেন। বাকিরা সঙ্কুচিত সময়ে অফিসে বসে কাজ করবেন।
করোনা ভাইরাস নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানান ‘‘অর্থনীতির উপরে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে টাস্ক ফোর্স গড়া হয়েছে এর সমাধানের জন্য।'' ওই টাস্ক ফোর্সের নেতৃত্বে রয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি এর আগে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছিলেন, করোনা পরিস্থিতিতে অর্থনীতির উপরে আরও চাপ পড়বে।
করোনা সংক্রমণের ঢেউ পৌঁছেছে ধর্মীয় ক্ষেত্রেও। আগামী সপ্তাহে উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় শুরু হবে রামনবমী। তার আগে যে পরিক্রমা হয় সে প্রসঙ্গে NDTV-কে কমিটির এক সদস্য জানান, সেটি বাতিল করা হয়েছে।
Post a comment