অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সমাজের নানা শ্রেণির মানুষ সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে উদ্বিগ্ন।
হাইলাইটস
- নাগরিকত্ব আইন নিয়ে তাঁর উদ্বেগের কথা জানালোন অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়
- বহু বিষয়েই উদ্বেগের জায়গা রয়েছে বলে জানান নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ
- এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন থাকা দরকার বলে জানান তিনি
নয়াদিল্লি: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (Citizenship Law) নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ালেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় (Nobel Laureate Abhijit Banerjee On CAA)। গত বছর এস্থার ডাফ্লো ও মাইকেল ক্রেমারের সঙ্গে যৌথভাবে অর্থনীতিতে নোবেল পাওয়া অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhijit Banerjee) ড. প্রণয় রায়ের সঙ্গে এক কথোপকথনের সময় জানান, ‘‘যে বিষয় থেকে প্রভূত প্রতিক্রিয়া তৈরি হতে পারে সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে আমাদের অত্যন্ত সচেতন থাকতে হবে।'' তিনি বলেন, ‘‘একটা কথা বলি যেটা আমাকে আমার ফিল্ড ওয়ার্কের অভিজ্ঞতাজনিত জায়গা থেকে বিচলিত করছে। যখন আপনি এমন কাউকে পান, যাঁর কাছে প্রভূত ক্ষমতা রয়েছে, যে ব্যক্তি সিদ্ধান্ত নেবেন আপনি তালিকায় থাকবেন কি থাকবেন না... এবং তিনি যদি বলেন, আমি নিশ্চিত নই আপনি একজন যথার্থ নাগরিক কিনা...''
সিএএ'র ধারাভুক্ত নয়, তাই দেশে ফেরত পাঠানো হবে জম্মুর রোহিঙ্গাদের: মন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, ‘‘অনেকগুলি বিষয়েই আপনি বিচলিত হতে পারেন। আমি কেবল একটির কথা বললাম। আমি যদি প্রান্তিক জেলার বাসিন্দা হতাম, আমি এটা ভেবে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়তাম। এবং যদি কেউ এসে আমাকে বলত, দেখো, আমি তালিকা তৈরির দায়িত্বে রয়েছি। আমি তোমার নাম সন্দেহভাজনদের তালিকায় রেখেছি। তুমি আমাকে দশ হাজার টাকা দিতে পারো।'' তিনি বলেন, প্রশাসনের চ্যালেঞ্জ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
"আমরা ৮০%, তোমরা ১৫%": CAA-এর প্রতিবাদ নিয়ে সংখ্যালঘুদের হুমকি বিজেপি নেতার!
অভিজিৎ বলেন, ‘‘আমি অন্তত প্রতিটি বিষয়েই উদ্বিগ্ন। সাধারণ ভাবে এটা ক্ষমতার অপব্যবহার। আমাদের রাষ্ট্রের কাঠামো নির্মাণ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়া দরকার, যেখানে আপনি দেশের নাগরিক না থাকলে বহু কিছু হারাবেন এবং অন্য দেশও আপনাকে চাইবে না। আমি মনে করি সেক্ষেত্রে ক্ষমতা কাঠামো তেমন ভাবে নির্মিত হলে আপনাকে এত দুর্বল করে দিতে পারে আপনি নানা দিক দিয়ে ধ্বংস হয়ে যেতে পারেন। আমি মনে করি প্রশাসনিক দিক থেকে সমস্যাটা অত্যন্ত ভীতিপ্রদ।''
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের মতে, ‘‘কোনও মানুষকে এত ক্ষমতা দিয়ে দেওয়া যিনি আপনার জীবনের এমন ব্যাপক পরিণতি ঘটাতে পারেন, সে ব্যাপারে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। এটা সংসদে দ্রুততার সঙ্গে নির্মিত হতে পারে না। এটাই উদ্বেগের বিষয়।''
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের ফলে প্রথমবার ভারতের নাগরিকত্বের পরীক্ষায় ধর্মকে আনা হয়েছে। সরকার জানিয়েছে, এই আইন তৈরি হয়েছে, ২০১৫ সালের আগে তিনটি মুসলিম অধ্যুষিত দেশ থেকে ভারতে পালিয়ে আসা ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার অমুসলিম সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব পেতে সাহায্য করার জন্য। সমালোচকদের দাবি, এই আইন তৈরি করা হয়েছে মুসলিমদের সঙ্গে বৈষম্য করার জন্য। এটি সংবিধানে বর্ণিত দেশের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তির পরিপন্থী।