জঙ্গি কার্যকলাপে অর্থের জোগান বন্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে পাকিস্তানকে
চিন (China) ও অন্য দু'টি উন্নয়নশীল দেশের কাছ থেকে সাহায্য চাইছে পাকিস্তান (Pakistan)। লক্ষ্য ‘কালো তালিকা' (Black List) থেকে বাঁচা। সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী আর্থিক কাঠামো নির্মাণের জন্য প্যারিসের Financial Action Task Force (FATF) অক্টোবরে পর্যালোচনা করবে বিষয়টি। হাতে সময় কম। তার মধ্যে প্যারিসের ওই টাস্ক ফোর্সের ঠিক করা ২৭টি অ্যাকশন আইটেম সম্পূর্ণ করা খুবই কঠিন পাকিস্তানের পক্ষে। জঙ্গি কার্যকলাপে অর্থের জোগান বন্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে পাকিস্তানকে। এফএটিএফ-এর শর্ত মেনে পদক্ষেপ করতে না পারলে আন্তর্জাতিক আর্থিক সাহায্য থেকে বঞ্চিত হতে পারে তারা। FATF সদস্যরা, বিশেষ করে ভারতের প্রতিনিধিরা চেষ্টা করবে যাতে পাকিস্তান ওই সংস্থার ‘ব্ল্যাক লিস্ট'-এ চলে যায়।
FATF-এর ধূসর তালিকায় গত বছরই ঢুকে পড়েছে পাকিস্তান। আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান দেশগুলি চাপ দিতে থাকে যেন পাকিস্তান জঙ্গি দলগুলিকে অর্থের জোগান দেওয়া বন্ধ করে এবং সন্ত্রাস দমনে সচেষ্ট হয়।
কাশ্মীর নিয়ে কেন্দ্রের পদক্ষেপের পরই কড়া প্রতিক্রিয়া ইমরান খানের
এরপরই পাকিস্তানকে ২৭টি পদক্ষেপ করতে বলা হয়। ইরান ও উত্তর কোরিয়া এরই মধ্যে কালো তালিকাভুক্ত হয়ে গিয়েছে। আপাতত তাই চাপে পাকিস্তান।
অক্টোবরের আগে পাকিস্তান তার লক্ষ্যগুলি পূরণ করে ফেলবে, এমনটাই বিশ্বাস রয়েছে প্রশাসনের। কিন্তু সত্যিই তারা তা করতে পারবে কিনা তা বলা কঠিন বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
পাকিস্তান এতদিন সত্যি বলেনি, দেশে রয়েছে ৪০টি জঙ্গি সংগঠন: ইমরান খান
পাশাপাশি পাকিস্তানের আশা চিন, মালয়েশিয়া ও তুর্কির সমর্থনে কালো তালিকায় ঢুকতে হবে না তাদের। FATF-এর প্রতিনিধির মতে, এক্ষেত্রে দেশের সংখ্যাটা অতটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। চিন বা অন্য কোনও বড় দেশ আপত্তি জানালে কোনও দেশকে কালো তালিকাভুক্ত করা হতে পারে।
চিন অবশ্য পাকিস্তানের সমর্থনেই রয়েছে। তারা এরই মধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছে, নিষেধাজ্ঞা জারি করতে চাইলে তারা বাধা দেবে। জুলাইয়ে সংস্থার সভাপতি হয়েছেন চিনের জিয়াংমিন লিউ। তিনি ক্রমে তাঁর প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করেছেন FATF-এ।
পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের গভর্নর রেজা বাকির সাংবাদিকদের জানান তাঁরা পদক্ষেপ শুরু করেছেন। অর্থ পাচার ও সন্ত্রাস-বিরোধী কার্যকলাপ শুরু করার কথা জানিয়েছেন তিনি।
চিন হয়তো FATF-এর সদস্যদের সাহায্য চাইবে পাকিস্তানকে কালো তালিকাভুক্ত হওয়া থেকে বাঁচাতে। যেহেতু জিয়াংমিন লিউ এখন সভাপতি, তাই পাকিস্তানের বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে মালয়েশিয়া ও তুর্কির বিদেশমন্ত্রক কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে। ভারত ও পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রকের আধিকারিকরা কোনও সাড়া দেননি।
গত জুনে শেষবারের ‘রিভিউ'-এ দেখা গিয়েছে জানুয়ারি ও মে মাসের ডেডলাইন পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে পাকিস্তান।
২০০৮ মুম্বই হামলার মূল চক্রী হাফিজ সঈদকে সম্প্রতি গ্রেফতার করেছে পাকিস্তান। FATF-এর নিয়ম মেনে চলতে চাওয়ারই পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে এই পদক্ষেপকে। পাকিস্তান ও চিনের মধ্যে সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ। চিনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড' কর্মসূচির পক্ষে রয়েছে পাকিস্তান। তবে যদি পাকিস্তান কালো তালিকায় চলে যায়, তাহলে সমস্যায় পড়বে চিনও।
FATF-এ মোট ৩৭টি সদস্য দেশ রয়েছে। এছাড়াও ইউরোপিয়ান কমিশন এবং উপসাগরীয় কো-অপারেশন কাউন্সিল রয়েছে। ধূসর তালিকা। পাকিস্তানসহ ১২টি দেশ রয়েছে। কেবল উত্তর কোরিয়া ও ইরান রয়েছে কালো তালিকায়।
(সহায়তা: Firat Kozok, Dandan Li এবং Anisah Shukry)