আয়ুশ মন্ত্রক পতঞ্জলিকে ওষুধের উপাদান, তার গবেষণার ফলাফল ও অন্যান্য বিশদ সরবরাহ করতে বলেছে।
নয়াদিল্লি: যোগ শিক্ষক রামদেবের পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ যে ওষুধ তৈরি করেছে সেই ওষুধের সাহায্যে কোভিড-১৯ নিরাময় হতে পারে এমন দাবিই নাকি করেনি পতঞ্জলি! সংস্থার চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার আচার্য বালকৃষ্ণ মঙ্গলবার বলেছেন, পতঞ্জলি কেবল রোগীদের উপর ক্লিনিকাল ট্রায়ালের অনুকূল ফলাফল সকলের সঙ্গে শেয়ার করেছে। গত সপ্তাহে রামদেবের এক চাঞ্চল্যকর দাবির পরে কেন্দ্র পতঞ্জলি সংস্থাটির ওই পণ্যের বিজ্ঞাপনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। পতঞ্জলি দাবি করেছিল তাঁদের তৈরি ওষুধ কয়েক দিনের মধ্যে ২৮০ জন রোগীকে সারিয়ে তুলেছে।
“আমরা কখনই বলিনি যে ওষুধ (করোনিল) করোনাকে নিরাময় করতে বা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, আমরা বলেছিলাম যে আমরা ওষুধ তৈরি করেছি এবং সেগুলি ক্লিনিকাল নিয়ন্ত্রিত পরীক্ষায় ব্যবহার করেছি যা করোনার রোগীদের সারিয়ে তুলেছিল। এতে কোনও বিভ্রান্তি নেই,”, সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেন পতঞ্জলির সিইও আচার্য বালকৃষ্ণ।
আয়ুশ মন্ত্রক পতঞ্জলিকে ওষুধের উপাদান, তার গবেষণার ফলাফল, যে হাসপাতালগুলিতে গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছিল, সংস্থার ইন্সটিটিউশনাল এথিক্স কমিটির ছাড়পত্র ছিল কিনা এবং ক্লিনিকাল ট্রায়ালের জন্য অনুমোদন ছিল কিনা সে সম্পর্কিত বিশদ সরবরাহ করতে বলেছে।
একজন লাইসেন্স অফিসার পরে জানান যে সংস্থাটি ‘ইমিউনিটি বুস্টার এবং কাশি ও জ্বরের নিরাময়ের' জন্য লাইসেন্স চেয়েছিল এবং মোটেও জানায়নি যে ওষুধগুলি আসলে করোনা কিটের অংশ ছিল। রাজ্য সরকার সংস্থাটিকে একটি নোটিশ পাঠিয়েছে।
“আমাদের নোটিশের জবাবে পতঞ্জলি জানিয়েছে যে তাঁরা কোনও করোনা কিট প্যাকেজ করেননি। পতঞ্জলি করোনিল ওষুধের প্যাকেজিংয়ে করোনা ভাইরাসের একটি প্রতীকী চিত্র ছাপিয়েছেন। করোনিল এবং দুটি অন্যান্য ওষুধের নমুনা পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছে,” বলেন উত্তরাখণ্ড আয়ুর্বেদ বিভাগের লাইসেন্স অফিসার ওয়াইএস রাওয়াত।
এই প্রকল্পে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস বা জয়পুরের এনআইএমএস বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় কাজ করেছে পতঞ্জলি।
“আমরা আজ কোভিড ওষুধ চালু করছি, করোনিল এবং স্বসারি। আমরা এর দু'টি পরীক্ষা চালিয়েছি, প্রথম ক্লিনিকাল নিয়ন্ত্রিত গবেষণা, যা দিল্লি, আহমেদাবাদ সহ অন্যান্য অনেক শহরেই হয়েছিল। এই পরীক্ষার অধীনে ২৮০ জন রোগী অন্তর্ভুক্ত ছিলেন এবং তাদের ১০০ শতাংশই সেরে গিয়েছেন। আমরা এতে করোনাকে এবং এর জটিলতাগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি। এর পরে সর্বাত্মক ক্লিনিকাল নিয়ন্ত্রণের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল,” দাবি করেছিলেন রামদেব।
“NIMS, জয়পুরের সহায়তায় আমরা ৯৫ জন রোগীর উপর ক্লিনিকাল, নিয়ন্ত্রিত গবেষণা চালিয়েছি। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় বিষয়টি যেটি এসেছে তা হ'ল তিন দিনের মধ্যে ৬৯ শতাংশ রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছে, এবং পজিটিভ (কেস) থেকে নেগেটিভ হয়ে গেছেন। শুধু তাই নয় সাত দিনের মধ্যে ১০০% মানুষই নেগেটিভ হয়ে গেছেন,” সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে রোগীদের উপর ওষুধের পরীক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন নেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন রামদেব।
অত্যন্ত সংক্রামক এই রোগে সারা বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণ গিয়েছে, তবে এখনও কোনও প্রমাণ-ভিত্তিক নিরাময় নেই এই রোগের। হু বলেছে, “কিছু পশ্চিমী, ঐতিহ্যবাহী বা ঘরোয়া প্রতিকারে আরাম মিলতে পারে এবং কোভিড-১৯ এর লক্ষণগুলি হ্রাস পেতে পারে, তবে এমন কোনও প্রমাণ নেই যে সেই সব ওষুধ এই রোগ প্রতিরোধ করতে পারে বা নিরাময় করতে পারে। COVID-19 এর প্রতিরোধ বা নিরাময়ের জন্য WHO অ্যান্টিবায়োটিক সহ কোনও ওষুধই বা নিজে নিজে ওষুধ তৈরি বা খাওয়ার পরামর্শ দেয় না।