কলকাতা: সাধারণ মানুষদের সরকারি সুযোগ-সুবিধে পাইয়ে দেওয়ার টোপ দিয়ে ঘুষ নিচ্ছেন দলের নেতা-মন্ত্রীরা। দু-দিন আগে এমন মারাত্মক অভিযোগ তুলেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় 9Mamata Banerjee)। দলনেত্রীর সেই কথার প্রতিধ্বনি শোনা গেল এবার রাজ্যবাসীর গলায়। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগকে হাতিয়ার করে তৃণমূলের নেতাদের কাছে কাট মানি (Cut Money) বা ঘুষের টাকা ফের চাইলেন রাজ্যের একাধিক জেলার সাধারণ মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, সরকারি সুযোগ-সুবিধে পাওয়ার অধিকার সমস্ত রাজ্যবাসীর আছে। তাহলে তারপরেও কেন সবাইকে ঘুষ দিতে হবে! বিষয়টিকে কেন্দ্র করে গতকাল একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত ও পুরসভায় জনসাধারণের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তৃণমূলের বহু নেতা-মন্ত্রীদের। সবার দাবি, অবিলম্বে ফেরত দেওয়া হোক তাদের সমস্ত টাকা।
দুই হাসপাতালের মধ্যে টানাপোড়েনের জেরে ঠাকুমার কোলেই মৃত্যু চার দিনের শিশুর
গতকাল সকাল থেকেই বীরভূম, মালদা, পুরুলিয়া, বাঁকুড়ায় এই বিক্ষোভের ছবি চোখে পড়ে। সেখানকার পঞ্চায়েত এবং পুর প্রতিনিধিদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান জেলার মানুষেরা। তাঁদের কথায়, এতদিন ধরে যেকোনো সরকারি সুবিধে পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে বিভিন্নভাবে ঘুষ নিয়েছেন নেতা-মন্ত্রী সহ সরকারি আধিকারিক ও কর্মীরা। এবার তাঁদের সেই টাকা ফেরত দিতে হবে। বীরভূম জেলার ইলামবাজারের এক প্রতিবাদীর দাবি, সরকারি সুযোগসুবিধে পাওয়া আমাদের অধিকার। এতদিন টাকার বিনিময়ে কিনতে হয়েছে সেই পরিষেবা। মুখ্যমন্ত্রী যখন নিজে টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তখন সেই নির্দেশ পালনের সময় এসেছে। ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে বাঁকুড়ার বরজোড়াতেও। এখানে তৃণমূল সদস্যের উদ্দেশ্যে স্লোগান দিতে থাকেন সাধারণ মানুষ। শেষে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
তুরস্কে গিয়ে বিয়ে সারলেন বসিরহাটের সাংসদ নুসরত জাহান! দেখুন বিয়ের ছবি
প্রসঙ্গত, ঘটনার সূত্রপাত গত সোমবার। ওই দিন মুখ্যমন্ত্রী দলের নেতা-মন্ত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, সমব্যথী প্রকল্পের দুহাজার টাকা কেন এখনও রাজ্যের দুঃস্থ মানুষেরা পাচ্ছেন না! গৃহঋণ পাইয়ে দেওয়ার নামে শুনেছি দলের সদস্যরা ঋণের ২৫ শতাংশ টাকা দাবি করছেন। এখনই এসব বন্ধ করতে হবে। আমি দলে চোর, ঘুষখোর নেতা-মন্ত্রীদের রাখব না। হ টাকা ফেরত দিন নয়তো অন্য দলে যোগ দিন। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, যাঁরা এই ঘটনায় ভুক্তভোগী তাঁরা সরাসরি লিযখিত অভিযোগ জানতে পারেন। সরকার থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এই প্রসঙ্গে মুখ খুলেছএন বিজেপির রাজ্যসভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর দাবি, রাজ্যের মানুষ শাসকদলের তোলাবাজি আর গুণ্ডারাজে ক্লান্ত। তাই মুক্তি চেয়ে এবার তাঁরা গর্জে উঠছেন। বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ২০১১ থেকে পশ্চিমবঙ্গে সিন্ডিকেট রাজত্ব চলছে। এবার তো প্রতিবাদী মানুষ পথে নামবেই।
খবর, ইতিমধ্যেই মালদার (Msalda) মহানন্দতলা গ্রাম পঞ্চায়েত অঞ্চলে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে শাসকদলের এক সদস্য সুখেশ যাদব (Sukhesh Yadav)। অভিযোগ, সুখেশ নাকি এক কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছে তহবিল গড়ার নামে। যদিও এই অভিযোগ মিথ্যে বলে দাবি করেছে সে।