শুক্রবার লাদখের নিমুতে সিন্ধু দর্শন পুজো দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
নয়াদিল্লি: গালওয়ানে চিনের সেনাদের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হওয়ার কয়েক দিন পরেই নরেন্দ্র মোদির একদিনের লাদাখ সফরের সময় শুক্রবার লাদখের নিমুতে সিন্ধু দর্শন পুজো দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সিন্ধু দর্শন উত্সব আসলে তিন দিনের অনুষ্ঠান। প্রতিবছর জুন মাসে পূর্ণিমার দিন পালিত হয় এটি। এই উত্সবে সিন্ধু নদীকে ঐক্য, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রতীক হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী মোদি গালওয়ান সংঘর্ষে আহতদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য সেনা জেনারেল হাসপাতালে যান। নিহত সৈন্যদের সম্মান জানাতে ওয়ার মেমোরিয়ালস হল অফ ফেমও পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী।
মে মাস থেকেই এলএসিতে (প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা) চিনের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়া হিসাবে মোদির এই সফর। প্রধানমন্ত্রী চিনের নাম উল্লেখ না করেই বলেছিলেন: “বিস্তারবাদের যুগ শেষ, এটি উন্নয়নের যুগ। ইতিহাস সাক্ষী রয়েছে যে বিস্তারবাদী শক্তিগুলি হয় হেরে গিয়েছে বা ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছে।"
ভারতীয় সৈন্যদের “বীর ভূমিপুত্র” হিসাবে বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “দুর্বলরা কখনই শান্তি পেতে পারে না, সাহসীরাই পারে।”
প্রধানমন্ত্রী মোদি আরও জানান, ভারত সীমান্তবর্তী অঞ্চলে রাস্তা ও সেতু নির্মাণ বন্ধ করবে না। এই নির্মাণকেই চিনের আগ্রাসনের কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
১৫ জুন গভীর রাতে চিনের সেনাদের সঙ্গে মুখোমুখি লড়াইয়ের পরে একজন কর্নেলসহ ২০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন এবং ৭৬ জন আহত হয়েছেন। সেনা সূত্রের খবর, দু'দেশের মধ্যে সামরিক হতাহতের ঘটনায় ৪৫ জন চৈনিক সেনাও মারা গিয়েছিলেন। ১৯৭৫ সালে অরুণাচল প্রদেশে চারজন ভারতীয় সেনা নিহত হন, সেই ঘটনার পর প্রথম আবার এমন সংঘর্ষ দেখা দিল।
গত মাসের এই ঘটনার পরে, এনডিটিভির হাতে আসা উপগ্রহ চিত্রে দেখা গিয়েছে যে চিনের বাহিনী ভারতের ভূখণ্ডে ৪২৩ মিটার প্রবেশ করেছে।
চিনের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী কূটনৈতিক অবস্থানের পাশাপাশি, ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটক সহ ৫৯ টি চিনা মোবাইল ফোন অ্যাপ্লিকেশন নিষিদ্ধ করেছে ভারত, যার ফলে চিনা মূল সংস্থা বাইটড্যান্স এখন কয়েক বিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছে।
এদিকে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা আরও জানিয়েছেন যে ভারত আর বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির জন্য চিনের সরঞ্জাম কিনবে না এবং চিনের নির্মাণ সংস্থাগুলির উপরেও নতুন সড়ক প্রকল্পে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর এই সফরকে ঘিরে বিরোধী কংগ্রেস এবং অন্যান্য সমালোচকরা চিন সঙ্কট মোকাবিলার বিষয়ে সরকারকে লক্ষ্য করে ফের আক্রমণও করেছে।