নয়াদিল্লি: শনিবার সন্ধ্যায় এক সপ্তাহব্যাপী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর সেরে নয়াদিল্লির পালম বিমানবন্দরে (New Delhi's Palam airport) নামলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি (Prime Minister Narendra Modi)। চেনা বিমানবন্দর তখন হাজার হাজার মানুষের ভিড়ে যেন জনসমুদ্র! জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৪ তম অধিবেশনে (United Nations General Assembly) যোগ দেওয়ার জন্য মার্কিন মুলুকে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শনিবার দেশে ফিরতেই তাঁকে স্বাগত জানাতে হাজির হন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দলীয় কর্মী সকলেই। বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পরই দেওয়া এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী মোদি, এই বিপুল সংখ্যক মানুষজন যে তাঁকে স্বাগত জানাতে এসেছেন এই নিয়ে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। পাশাপাশি বিশ্বের মঞ্চে দেশের প্রশংসার সুযোগ করে দেওয়ার জন্যও জনগণকে ধন্যবাদ জানান তিনি। “২০১৪ সালের নির্বাচনে জয়লাভের পরে আমি ইউএনজিএ-তে গিয়েছিলাম। ২০১২ সালেও আমি সেখানে গিয়েছিলাম। তবে এবার আমি ভারতের প্রতি তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন লক্ষ্য করেছি। ভারতের প্রতি শ্রদ্ধা বৃদ্ধির এই কৃতিত্ব ১৩০ কোটি ভারতীয়র,” বলেন মোদি।
“বিশ্বের সবচেয়ে বেশী ভোটে জিতেছি”, রাষ্ট্রসংঘে কেন্দ্রের সাফল্য তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি দেশের গৌরব অর্জনে সেনাবাহিনীর অবদানের প্রশংসাও করেন। “তিন বছর আগে ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে আমার দেশের সাহসী সৈন্যরা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়ে ভারতের গর্বকে বাড়িয়ে তুলেছিল। সেই রাতের কথা স্মরণ করে আমি আমাদের সাহসী সৈন্যদের সাহসের প্রতি সেলাম জানাই,” বলেন প্রধানমন্ত্রী। মোদির দেশে ফেরার ঠিক আগে বিমানবন্দর চত্বরে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের সাক্ষী ছিল দেশ! আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে এক জন ভারতীয় নেতার সাফল্য অর্জনকে আরও উদযাপন করতে মানুষ সামিল হন উৎসবে। বিমানবন্দরে মোদির এক সমর্থক বলেন, “নরেন্দ্র মোদির মতো প্রধানমন্ত্রী পেয়ে আমরা গর্বিত। সে কারণেই আমরা তাঁর ভারতে ফিরে আসায় স্বাগত জানাতে কোনও কিছু বাদ রাখিনি।” ‘ভারত মাতা কি জয়' স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে বিমানবন্দর।
দুটি পরমাণু শক্তিধর দেশ লড়াই করলে, বিশ্বে “প্রভাব” পড়ে, রাষ্ট্রসংঘে বললেন ইমরান খান
রবিবার হিউস্টনে প্রধানমন্ত্রী মোদির আমেরিকা সফরের কেন্দ্রবিন্দুতেই ছিল হিউস্টনে ‘হাউডি মোদি' অনুষ্ঠান। যেখানে তিনি এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাণিজ্য, উন্নয়ন ও সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রম সম্পর্কিত বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করার সংকল্প করেন। শুক্রবার, প্রধানমন্ত্রী মোদি ইউএনজিএ-তে জলবায়ু পরিবর্তন, উন্নয়ন ও সন্ত্রাসবাদ সহ বিভিন্ন ইস্যুতে ১৭ মিনিটের বক্তৃতা দিয়েছেন। নয়াদিল্লি জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে তার পদক্ষেপে পুনর্বিবেচনা না করলে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পারমাণবিক যুদ্ধের অশুভ সতর্কতা দেন ওই একই মঞ্চে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প থেকে শুরু করে ভারতের জনগণ- সকল্যকে ধন্যবাদ জানিয়ে একাধিক টুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রী তাঁর এই সপ্তাহব্যাপী আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র সফর চলাকালে। “আমি যেখানেই গিয়েছি, যার সঙ্গেই দেখা করেছি, বিশ্বের নেতা হোক বা শিল্পপতি বা সর্বস্তরের নাগরিকই হন না কেন, ভারতের প্রতি সকলের আশাবাদী মনোভাব রয়েছে। স্যানিটেশন, স্বাস্থ্যসেবা এবং দরিদ্রদের ক্ষমতায়নের উন্নতির জন্য ভারতের প্রচেষ্টারও প্রশংসা করেছেন সকলে,” টুইট করেন মোদি।
পুলিশ সূত্রের খবর, পালম বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীর আগমনের জন্য বহুস্তরীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরাও বসানো হয়েছিল এবং সন্দেহজনক ক্রিয়াকলাপে নজর রাখতে ছাদে স্নাইপারদের পাশাপাশি অ্যান্টি-সাবোতাজ দলও মোতায়েন করা হয়েছিল।