১৫ জুন গালোয়ান উপত্যকায় সংঘাতে জড়ায় ভারত ও চিনের সেনা। (ফাইল ছবি)
নয়াদিল্লি: শুক্রবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী (PM on Ladakh standoff) বলেছেন, চিন সেনা ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে পারেনি। এক ইঞ্চি জমিও দখল করতে পারেনি। তাহলে এবার বিরোধী শিবির থাকা প্রশ্ন, চিনা সেনা অনুপ্রবেশ না করলে ২০ জন জওয়ান শহিদ হলো কীভাবে? কেনই বা এলএসি'তে (LAC) উত্তেজনা বাড়ল? এই প্রশ্নের জবাব দিতে শনিবার বিবৃতি দিল কেন্দ্র (Centre's statement on Galowan Standoff)। সেই বিবৃতিতে উল্লেখ, "প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের অপব্যাখ্যা হচ্ছে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা আগ্রাসন নিয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। ১৫ জুনের সংঘাত ভারতীয় নির্মাণ সরানোকে ঘিরে শুরু হয়। ভারতীয় তরফে আপত্তি তুলা হলে, সেই আপত্তি অগ্রাহ্য করে চিন সেনা।" শুক্রবারের সর্বদলীয় বৈঠকের পর এদিন সকালে টুইট করেন রাহুল গান্ধি (Rahul Gandhi)। তিনি টুইটে লেখেন, "প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় ভূখণ্ডকে চিনা আগ্রাসনের সামনে আত্মসমর্পণ করেছেন। সেই ভূখণ্ড কি চিনের ছিল? কেন আমাদের বাহিনী শহিদ হল? কোথায় শহিদ হল?"
এই টুইটের পরেই আরও তেড়েফুঁড়ে বিবৃতি জারি করে কেন্দ্র। উল্লেখ করেছে, "প্রধানমন্ত্রীর পর্যবেক্ষণ আমাদের ভূখণ্ডে কোনও চিনা সেনার অনুপ্রবেশ নেই। এটা আমাদের সাহসী জওয়ানদের উদ্যোগী পদক্ষেপ।" ১৬ বিহার রেজিমেন্টের সেই জওয়ানরা নিজেদের প্রাণ দিয়ে চিন সেনার ভারতীয় নির্মাণ ধ্বংস এবং অনুপ্রবেশ রোধে সদর্থক ভূমিকা নিয়েছে। এমনটাও উল্লেখ আছে সেই বিবৃতিতে।
শুক্রবারের বৈঠকে উপস্থিতদের মধ্যে ছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধি, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেও। সর্বদলীয় বৈঠকে অবশ্য সব বিরোধী দলের নেতারাই চিনা আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় সরকারের সঙ্গে একমত হন।
তবে লাদাখ সংঘর্ষের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার দেশ তথা দেশের বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের যা জানিয়েছে তাই নিয়ে সন্তুষ্ট নন সনিয়া। সর্বদলীয় বৈঠক শেষে কংগ্রেস সভানেত্রী বলেন, "সীমান্তে স্থিতাবস্থা বজায় হবে। তাহলেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর নিজেদের এলাকায় ফিরে যাবে চিন সেনা। বৈঠকে এমন আলোচনা হয়েছে। তবে এই চরম মুহূর্তে আমরা এখনও অনেক বিষয়ে অন্ধকারে"। বৈঠকের পর তিনি কয়েকটি প্রশ্নও তোলেন। "ঠিক কত তারিখে লাদাখে অনুপ্রবেশ করেছিল চিনা সেনা? কখন এই চিনা আগ্রাসনের ব্যাপারে জানতে পারে কেন্দ্র? সেই তারিখটা কি ৫ মে ছিল? যেমনটা সংবাদমাধ্যমে দেখানো হচ্ছে। না, তারও আগে? সরকারের কাছে কোনও উপগ্রহ চিত্র কি ছিল না?", এই প্রশ্নগুলোই ছুঁড়ে দেন সনিয়া।
কংগ্রেস সভানেত্রীর আরও প্রশ্ন, "আমাদের গোয়েন্দাদের কাছে কি এলএসি বরাবর কোনও চিনা আগ্রাসনের খবর ছিল না? সামরিক সূত্র এই আগ্রাসন আর বাহিনী মোতায়েনের ব্যাপারটি জানতো না? এক্ষেত্রে কি তবে গোয়েন্দাদেরই ব্যর্থতা ধরে নিতে হবে?"