কলকাতা: চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে যখন তখন সাধারণ মানুষের আক্রমণ এখন আর সমাজে নতুন কিছু ঘটনা নয়। এই ব্যাপারটি নিয়ে বহুবার সরব হয়েছে রাজ্যের চিকিৎসক সমাজ। সরব হয়েছে সরকারও। কিন্তু, কোনওভাবেই তা রোখা যানি। এইবার, অভিযোগের তীর সরাসরি পুলিশের দিকে। এক বেসরকারি হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তার তাঁর বিরুদ্ধে শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগ তুললেন। অভিযোগ, পুলিশের এক কর্তা ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তাঁর কবজির অস্ত্রোপচারের জন্য। সেই পুলিশ কর্তাই তাঁকে শারীরিক নিগ্রহ করেছেন বলে অভিযোগ জানালেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক। জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে গতকাল সন্ধে সাতটা নাগাদ। যার প্রতিবাদে ক্যালকাটা মেডিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট (সিএমআরআই)-এর সমস্ত বিভাগের সব চিকিৎসকরা ইমার্জেন্সি বিভাগ ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিভাগ বাদ দিয়ে আর সমস্ত বিভাগের জন্য অস্থায়ী কর্মবিরতি ঘোষণা করেন বলে জানান হাসপাতালের এক কর্মকর্তা।
আলিপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করে ওই পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি চিকিৎসক শ্রীনিবাস গেদ্দাম বলেন, অভিযুক্ত যাদবপুর থানার ওসি পুলক কুমার দত্ত তাঁকে চড় মারেন। গতকাল সকালেই অস্ত্রোপচার হয়েছিল পুলক দত্তের কবজিতে। তাঁর দেখভালের কারণে ওই জুনিয়র ডাক্তার তাঁকে কয়েকটি প্রশ্ন করছিলেন। সেই সময়েই তিনি তাঁর ঘাড় ধরে বাঁ-হাত দিয়ে সজোরে থাপ্পড় মারেন বলে অভিযোগ। অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা শ্রীনিবাস গেদ্দাম বলেন, ঘটনার পর তিনি তাঁর ঘাড়ে প্রবল ব্যথা অনুভব করতে থাকেন। হাসপাতালের এক কর্মকর্তা জানান, ভর্তির সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া প্রেসক্রিপশনটি থেকে কয়েকটি প্রশ্ন করে পুলক কুমার দত্তের চিকিৎসার রুটিনটি জানতে চেয়েছিলেন গেদ্দাম। তার ফলই হল এই নিগ্রহ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, “ওই ঘটনার পর গেদ্দামের শারীরিক পরীক্ষা করে জানা গিয়েছে যে শরীরের দুটি জায়গায় প্রবল ব্যথা রয়ে গিয়েছে তাঁর। কালশিটেও পড়ে গিয়েছে”।
এই ঘটনার প্রতিবাদে অস্থায়ীভাবে নিজেদের কাজ স্থগিত রাখেন ওই হাসপাতালের চিকিৎসকরা। ঘটনার ‘বিচার’ পাওয়া যাবে বলে পুলিশ তাদের আশ্বাস দেওয়ার পর কর্মবিরতি উঠে যায়।
অভিযুক্ত ওসি আজ সকালেই বন্ডে সই করে ওই হাসপাতাল থেকে চলে যান।