কলকাতা: ১০৯ তম জন্মদিনে (Birth Anniversary) স্মৃতিচারণায়, প্রার্থনা গানে সোমবার সকাল থেকে মাদার টেরেসাকে (Mother Teresa) স্মরণ করল কলকাতার সিস্টার অফ চ্যারিটি। মোমবাতির নরম আলোয় উজ্জ্বল বিশ্বের মা। ফুলে ফুলে ঢাকা পড়েছে তাঁর ছবি। জ্বলছে সুগন্ধি ধূপ। তার সামনে জোড়হাতে, নতজানু অসংখ্য সিস্টার। তাঁদের মুখে আজ শুধুই মাদার টেরেসার কথা। তাঁর শেষদিন পর্যন্ত নিরলস সেবার উদাহরণ। যে মানব সেবা তাঁকে এনে দিয়েছিল নোবেল শান্তি পুরস্কার।
মাদার টেরেজা 'ভারতরত্ন' পেলেন, একজন সাধু পেলেন না এই সম্মান, বললেন রামদেব
মায়ের সম্বন্ধে জানাতে গিয়ে এক সন্ন্যাসিনী আবেগে আপ্লুত হয়ে বলেন, নাম-যশ-অর্থ-খ্যাতির লোভে নয়, প্রভু যীশুর বাণী বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে এবং তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করবেন বলেই নিজের সুখ-শখ বিসর্জন দিয়ে জীবন সঁপে দিয়েছেন পরের সেবায়। হত দরিদ্র মানুষের কাছে তিনি ছিলেন আশার আলো। যে সমস্ত শিশু জন্মের পরেই মাতৃ-পরিত্যক্ত, কিংবা প্রতিবন্ধী হওয়ায় সমাজের কাছে, পরিবারের কাছে যারা বোঝা, তাঁদের তিনি অনায়াসে কোলে তুলে নিয়েছেন হাসিমুখে। কুষ্ঠরোগীর সেবা করেছেন নিজের হাতে। কোনোদিন ঘৃণা করে দূরে সরিয়ে রাখেননি তাঁদের।
১৯১০ সালে আজকের দিনে আলবানিয়ার স্কোপজে-তে এক অভিজাত পরিবারে জন্ম নিয়েছিলেন অ্যাগনেস গঙ্কক্সহা বোজাক্সহিউ। মাত্র ১৮ বছর বয়সে স্বপ্নে প্রভু যীশুর আদেশ পেয়ে তিনি সংসার ত্যাগ করে যোগ দেন আয়ারল্যান্ডের সিস্টার অফ লোরেটোতে। তখন থেকেই তিনি সন্ন্যাসিনী মাদার টেরেসা। ১৯২০ সালে তিনি চলে আসেন ভারতে। এবং ১৫ বছর ধরে কলকাতার সেন্ট. মেরিস হাই স্কুলে ভূগোল ও ইতিহাস পড়ান।
মায়ের সম্বন্ধে জানাতে গিয়ে এক সন্ন্যাসিনী আবেগে আপ্লুত হয়ে বলেন, নাম-যশ-অর্থ-খ্যাতির লোভে নয়, প্রভু যীশুর বাণী বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে এবং তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করবেন বলেই নিজের সুখ-শখ বিসর্জন দিয়ে জীবন সঁপে দিয়েছেন পরের সেবায়। হত দরিদ্র মানুষের কাছে তিনি ছিলেন আশার আলো। যে সমস্ত শিশু জন্মের পরেই মাতৃ-পরিত্যক্ত, কিংবা প্রতিবন্ধী হওয়ায় সমাজের কাছে, পরিবারের কাছে যারা বোঝা, তাঁদের তিনি অনায়াসে কোলে তুলে নিয়েছেন হাসিমুখে।
Mother Teresa on 21st death anniversary: মৃত্যুদিনে মাদারকে স্মরণ মমতার
কিন্তু শিক্ষকতার জীবন বেশিদিন ভালো লাগেনি মাদারের। তিনি যে মানব সেবায় নিজেকে সমপর্ণ করেছেন! তাই ১৯৪৮ সালে চার্চ ছেড়ে তিনি নেমে আসেন পথে। পাকাপাকিভাবে তাঁর ঠিকানা হয় বস্তি। যেখানে হতদরিত্র মানুষেরা পশুর মতো জীবন যাপন করেন, সেখানে গিয়ে আশ্রয় নেন মাদার। তাঁদের দুঃখকষ্ট কাছ থেকে অনুভব করবেন বলে। তাঁদের যন্ত্রণা নিজের হাতে মুছিয়ে দেবেন বলে। তাঁর সেই সেবার নিদর্শন হিসেবে ১৯৫০ সালে রোমান ক্যাথলিক আদর্শে গড়ে ওঠে সিস্টার অফ চ্যারিটি।
১৯৭৯ সালে নোবেল পুরস্কার কমিটি তাঁকে সম্মানিত করতে চাইলে পুরস্কার ফিরিয়ে দিয়ে পরিবর্তে মাদার পুরস্কারের অর্থ দেওয়ার অনুরোধ জানান। যাতে সেই অর্থ দরিদ্রদের সেবায় ব্যয় করতে পারেন। ২০১৭ সালে ভ্যাটিকান সিটি থেকে পোপ তাঁকে 'সন্ত' উপাধি দেন।