This Article is From Jul 30, 2020

করোনা পরিস্থিতিতেই প্রেসিডেন্সির ছাত্রাবাস ছাড়ার জন্যে এক পড়ুয়াকে চাপ

Presidency University: বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের যুক্তি, কোভিড-১৯ মহামারীর সময় এখন কোনও পড়ুয়াকেই ছাত্রাবাসে থাকতে দেওয়া হচ্ছে না

Advertisement
Education Edited by

West Bengal: করোনা পরিস্থিতিতে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হস্টেল খালি করার নির্দেশ দেয় উচ্চশিক্ষা দফতর

Highlights

  • হিন্দু হস্টেল ছাড়ার জন্য এক সহায় সম্বলহীন ছাত্রকে চাপ
  • প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সে
  • তাঁর কোনও আশ্রয় না থাকায় হস্টেল ছাড়তে পারছে না ছাত্রটি
কলকাতা:

প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে (Presidency University) স্নাতক স্তরে পাঠরত এক দরিদ্র ছাত্রকে সেখানকার হিন্দু হস্টেল (Kolkata) ছেড়ে দেওয়ার জন্যে চাপ সৃষ্টি করার অভিযোগ উঠল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। জনি বিশ্বাস নামে ওই ছাত্র এমনিতে সহায় সম্বলহীন কেননা তাঁর বাবা বহু বছর আগেই দ্বিতীয় বিয়ে করে ছেলে ও স্ত্রীকে ছেড়ে অন্য জায়গায় চলে যান। তারপর তাঁর মা-ও বাংলাদেশে চলে যান। বাংলা দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্র জানিয়েছেন যে তাঁকে যদি এখন ছাত্রাবাস ছেড়ে দিতে হয় তবে হয় তাঁকে ফুটপাতে আশ্রয় নিতে হবে, নয়তো আত্মহত্যা করতে হবে। হস্টেল ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নিজের অবস্থার কথা জানিয়ে মানবিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের যুক্তি, কোভিড-১৯ (Covid-19) মহামারীর সময় এখন কোনও পড়ুয়াকেই ছাত্রাবাসে থাকতে দেওয়া হচ্ছে না, তা সত্ত্বেও হস্টেল ছাড়তে নারাজ ওই ছাত্র। তবে তাঁরা এই আশ্বাসও দিয়েছেন যে জনি বিশ্বাসের সমস্যা খতিয়ে দেখবেন তাঁরা।

এই প্রথম ভারতে দৈনিক করোনা সংক্রমণের সংখ্যা ৫০,০০০ ছাড়িয়ে গেল

এদিকে ওই দরিদ্র ছাত্রের আকুতি, "লকডাউন শুরু হওয়ার পরে আমি এবং আরও কয়েকজনকে এখানে আটকে পড়ি। তবে আমরা ভেবেছিলাম যে কিছুদিনের মধ্য়েই লকডাউন উঠে যাবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ফের হস্টেলটি খোলার ঘোষণা করবে। কিন্তু এখনও একই পরিস্থিতি থাকায় খুব সমস্যায় পড়েছি এবং আমার আর কোথাও যাওয়ার জায়গাও নেই।"

Advertisement

দিঘার সমুদ্রে ধরা পড়ল ৭৮০ কেজির দৈত্যাকার মাছ, ৫০,০০০ টাকায় বিক্রি

এর আগে বিদ্যালয়ে পড়াশুনো করার সময় এক বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এখন সেই বন্ধুও আর তাঁকে বাড়িতে নতুন করে ঠাঁই দিতে চাইছে না। বৃত্তি নিয়ে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনো করা ওই ছাত্র বলেন, "যদি আমাকে হস্টেল ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয় তবে আমাকে ফুটপাতে গিয়ে থাকতে হবে অথবা আত্মহত্যা করতে হবে। কিন্তু আমি যদি আত্মহত্যা করি তাহলে এতদিন ধরে আমি নিজের এবং মায়ের জন্য যে লড়াই করেছি তার সমস্তটাই বন্ধ হয়ে যাবে।"

Advertisement

ছাত্রাবাস ছেড়ে যাওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষ তাঁকে ইতিমধ্যেই শেষ দিন নির্ধারণ করে দিয়েছে। এই অবস্থাতেও জনি বিশ্বাসের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকে বিভাগীয় প্রধান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন সহ কর্তৃপক্ষ তাঁর দুর্দশার কথা ভালো করেই জানেন। কিন্তু তবু এই করোনা (Coronavirus) পরিস্থিতিতে তিনি কারও কাছ থেকেই কোনও সহায়তা পাচ্ছেন না।

"আমি আমার যোগ্যতার ভিত্তিতেই প্রেসিডেন্সিতে ভর্তি হয়েছি এবং আমি সবসময় মন দিয়ে পড়াশুনো করেছি। আমার শিক্ষকদের থেকে কি আমি আর একটু সহানুভূতিশীল আচরণ আশা করতে পারি না? তাঁরা কি আমাকে এখানে থাকার ব্যবস্থা করে দিতে পারেন না? অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীকে সহায়তা করারও তো একটি ভূমিকা থাকে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের", বলেন ওই ছাত্র। তিনি একথাও জানান যে, শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত একটি কমিউনিটি কিচেনে তিনি দুপুরের খাবার খান এবং টাকা বাঁচানোর জন্য রাতের খাবার না খেয়েই দিন কাটান।

Advertisement

ওই ছাত্রের দুর্দশার কথা জানানো হলে প্রেসিডেন্সির ডিন প্রফেসর অরুণ মাইতি বলেন, "আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখব।" বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক কর্তা বলেন যে এই মহামারী পরিস্থিতিতে উচ্চশিক্ষা বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী কোনও শিক্ষার্থীকেই এখন আর হস্টেলে থাকতে দেওয়া যাবে না। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএফআই নেতা তন্ময় পাল বলেন, "এটা সত্যি যে জনির আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। আমরা তাই চেষ্টা করে যাচ্ছি যাতে তাঁকে এখানেই থাকার ব্যবস্থা করে দিতে।"

Advertisement