বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে ভাষণ দেন মোদি।
শান্তিনিকেতন / পশ্চিমবঙ্গ:
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ বিশ্বভারতীর সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অংশ নেন। শান্তিনিকেতনের বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধন করেন মোদি। বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধনের পর বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে ভাষণ দেন। সমাবর্তন অনুষ্ঠান এবং উদ্বোধনী অনুষ্ঠান- দুই জায়গার ভাষণেই উনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে স্মরণ করেন।
শান্তিনিকেতনে মোদির ভাষণের এক ঝলক: - ঐতিহ্যকে সম্মান জানাতে আজ আমরা এখানে উপস্থিত হয়েছি। যাঁরা আজ ডিগ্রি লাভ করলেন, তাঁদের ভবিষ্যতের জন্য অনেক শুভেচ্ছা রইল।
- শিক্ষার শক্তির সবথেকে বড়ো পরিচয় হল ডিগ্রি। কিন্তু, এখান থেকে শুধু ডিগ্রিলাভই নয়, আরও অনেক অনেক কিছু নিয়ে যাচ্ছেন আপনারা। এক মহান উত্তরাধিকারকেও বহন করছেন আপনারা সবাই।
- আধুনিক এবং প্রাচীন এক সংস্কৃতির তত্ত্বাবধায়ক হলেন আপনারা।
- গুরুদেব ( রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ) বলেছিলেন, এই পৃথিবী আসলে একটিই বাড়ি। গুরুদেব তাঁর গোটা জীবন অতিবাহিত করেছিলেন, ‘এক বিশ্ব এক পরিবার’ ( বসুধ্বৈব কুটুম্বকম ) ভাবনা নিয়ে।
- এমন সমাবর্তন অনুষ্ঠান প্রায় দেখাই যায় না, যেখানে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত।
- আমরা দুই দেশ ( ভারত এবং বাংলাদেশ ) একে অপরের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি।
- বিদেশে গিয়ে দেখেছি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ওখানেও কী অসম্ভব সম্মান পান।
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন বিশ্বনাগরিক। তাঁর ভাই সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রথম ভারতীয় হিসাবে সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন। আহমেদাবাদের কমিশনার হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন তিনি। সেখানে বসে তিনি ছ’মাস ধরে গুরুদেব ( রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর )-এর কাছে ইংরেজি সাহিত্যের পাঠ নেন।
- রবীন্দ্রনাথের বরাবরই ভারতীয়ত্বের বোধকে নিজের মধ্যে লালনপালন করেছেন। নিজের জামাইকে এই বিষয়টি নিয়ে একটি চিঠিও লিখেছিলেন তিনি।
- সহজতাই হল শান্তিনিকেতনের পড়াশোনার মূল ভিত্তি।
- আগামী 2021 সালে এই প্রতিষ্ঠান 100 বছর পূর্ণ করবে। ততদিনে আপনারা কি আরও 100 বা 200 গ্রামকে যোগ করতে পারবেন নিজেদের অগ্রগতির অংশ হিসাবে?
- সহযোগিতা ও সৌহার্দ্যের অপার বোধই ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কের মূল ভিত্তি।
- সাংস্কৃতিক বোধই হোক অথবা সাধারণ মানুষকে সহায়তা করার ভাবনাই হোক- ভারত এবং বাংলাদেশ বরাবরই একে অপরের থেকে অনেক শিক্ষালাভ করেছে।
- ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে চিরকালই ঐক্যের প্রগাঢ় মেলবন্ধন রয়েছে। এই ঐক্য শান্তিনিকেতনেরই প্রতীক। যাকে ব্রিটিশ সরকারও পার্টিশনের রাজনীতি দিয়েও ভাগ করে দিতে পারেনি।
- মুজিবর রহমান এই দুই দেশের মানুষের কাছেই একইরকম সম্মাননীয়।
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, স্বামী বিবেকানন্দের মতো বহু মানুষহ বাংলাদেশেও এই দেশের মতোই সম্মান পেয়ে থাকেন। ঠিক যেমন নজরুল পেয়ে থাকেন বাংলায়।
- গুরুদেব ছিলেন স্বাধীন চিন্তার মানুষ। তিনি যতটা ভারতের, ততটাই বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু নিজেও রবীন্দ্রনাথের অত্যন্ত বড়ো অনুরাগী ছিলেন।
- বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সম্পূর্ণটাই ওপারে হলেও, তার অনুপ্রেরণা এসেছিল এপার থেকেই।
- বেশ কয়েক বছর ধরেই ভারত এবং বাংলাদেশের সম্পর্কের সোনার সময় চলছে।
- তাঁদের দেশের প্রথম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের সাফল্যের জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ বাংলাদেশের জনসাধারণকে মন থেকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।