দলের নেতাদের সঙ্গে সোমবার সাংবাদিক সম্মেলন করেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বঢ়রা
নয়াদিল্লি: সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ ও সরকারকে (Uttar Pradesh government and Police Force) একহাত নিলেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বঢ়রা (Priyanka Gandhi Vadra), তাদের বিরুদ্ধে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে “অন্যায় আচরণ করার” অভিযোগ তুললেন তিনি। বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে “বদলা” নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, প্রিয়াঙ্কা গান্ধির অভিযোগ, “মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বদলা সুনিশ্চিত করার কাজ করছে” পুলিশ। দুদিন আগে লখনউ পুলিশের বিরুদ্ধে তাঁকে হেনস্থা ও নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদ করায় গ্রেফতার হওয়া অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার সময় “ঘাড় ধরে টানা”র অভিযোগ তোলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বঢ়রা।
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেস নেত্রী নিজের নিরাপত্তা সম্পর্কিত উদ্বেগ খারিজ করে দিয়ে বলেন, ভারতে, “শত্রুতা, হিংসা ও বদলার কোনও জায়গা নেই”।
তিনি বলেন, প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বঢ়রা বলেন, “আমার নিরাপত্তা কোনও বড় ইস্যু নয়...তারজন্য নিরাপত্তার প্রয়োজন নেই। আমরা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কথা বলছি, নাগরিকদের নিরাপত্তা। আমরা জানতে পেরেছিল ৫,৫০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জেলে রাখা হয়েছে অনেকজনকে...তাঁদের মারধর করা হয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসন ভুল কাজে লিপ্ত হয়েছে”।
নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড়় উঠেছে, এই প্রথমবার নাগরিকত্ব আইনে নাগরিক হওয়ার ক্ষেত্রে মাপকাঠি হিসেবে ধর্মকে রাখা হয়েছে। শুধুমাত্র উত্তর প্রদেশেই ২০ জনেরও বেশী মানুষের মৃত্যু হয়েছে, অনেকেরই গুলির আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে, যদিও প্রাথমিকভাবে বিক্ষোভকারীদের ওপর প্রকাশ্যে গুলি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ। বিজনৌড়ে মৃত অন্তত দুজনের বাড়িতে যান প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বঢ়রা।
তিনি বলেন, “আমি বিজনৌড়ে গিয়েছিলাম...সেখানে দুজন বাচ্চার মৃত্যু হয়েছে। একজন ছিলেন কফি বিক্রেতা, যিনি তাঁর বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তাঁর বাবাকে তিনি বলেন, দুধ কিনতে যেতে হবে। তাঁর বাবা তাঁকে যেতে বারণ করেন, তবে তিনি তা না শুনে দুধ কিনতে যান তিনি”। তাঁর কথায়, “এলাকার মানুষ জানিয়েছেন, পুলিশ তাঁকে ধরে, ৩০ মিনিট পর, তাঁরা জানতে পারেন, যুবকটির দেহ পাওয়া গিয়েছে...তাঁকে গুলি করা হয়েছে..পরিবারকে ব্যবস্থা না নেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে পুলিশ”।
প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বলেন, “অন্য আরেকজন (২০ বছরের যুবক সুলেমান, যিনি ছিলেন ভাবী আইএএস, পরিবারের দাবি, এবং নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে তিনি কিছুই করেননি) নমাজে গিয়েছিলেন”।
বিজনৌড়ের পুলিশ প্রধানের দাবি, সুলেমানের হত্যা ছিল আত্মরক্ষা।
প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বঢ়রা বলেন, “একজন আইপিএস আধিকারিক, আম্বেদকরের ভক্তকে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর বাড়িতেই বোঝা যায়, তিনি কেমন মানুষ ছিলেন...তিনি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের আর্জি জানিয়েছিলেন। তাঁর ৭৫ বছর বয়সী স্ত্রী অসুস্থ ছিলেন”।
তাঁর অভিযোগ, রাজ্যজুড়ে ১১০০ জনেরও বেশী মানুষকে গ্রেফতার করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ, যাঁরা বিক্ষোভে ছিলেন না।
উত্তরপ্রদেশ পুলিশ আধিকারিকদের “বেআইনি পদক্ষেপ” নিয়ে বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে কংগ্রেস।