গত বছর ভারত ছাড়েন নীরব মোদী
নিউ দিল্লি: গোয়েন্দাকর্তারা যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী যে, পলাতক হিরে ব্যবসায়ী নীরব মোদীর ভারতে প্রত্যর্পণের ব্যাপারে বিশেষ বেগ পেতে হবে না। তার কারণ, ব্রিটেনে হাতে সমস্ত নথিপত্র তুলে দিয়েছে তারা। শুধু তাই নয়, যে যে জায়গাগুলিতে ফাঁকফোকর ছিল, তাও অতি সুচারুভাবে তারা বুজিয়ে দিয়েছে বলে দাবি। এনডিটিভির সূত্র জানিয়েছে, বিজয় মালিয়ার প্রত্যর্পণের ব্যাপারে কাজ যখন অনেকটাই এগিয়েছে, সেইসময়েই নীরব মোদীর গ্রেফতার হওয়ার ফলে কাজটি আরও একটু সহজ হয়ে গিয়েছে ভারতীয় গোয়েন্দাদের কাছে। প্রত্যর্পণ বিষয়ক বহু খুঁটিনাটির সঙ্গে এখন তাঁরা বিজয় মালিয়ার মামলার সঙ্গে পুরোটা সময় জড়িয়ে থাকার জন্যই ভালোভাবে পরিচিত হয়ে গিয়েছে।
নীরব মোদীর সম্পত্তি ১৭৩'টি তৈলচিত্র ও ১১'টি বিলাসবহুল গাড়ি বিক্রি করবে ইডি
এনডিটিভির ওই সূত্র আরও জানায়, “সিবিআই ও ইডি ব্রিটেনের আদালতের হাতে এমন সব তথ্য তুলে দিয়েছিল যে, নীরব মোদীকে জামিন দেওয়ার আর কোনও রাস্তাই খোলা ছিল না”।
পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের ১৩ হাজার কোটি টাকার অর্থ জালিয়াতি মামলায় অভিযুক্ত নীরব মোদী এখন লন্ডনের ওয়ান্ডসওয়ার্থ জেলে রয়েছেন। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২৯ মার্চ।
সেই দিন ভারত থেকে সিবিআই ও ইডি-এর যুগ্ম একটি দল লন্ডনে পাঠানো হবে কি না, তা নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি ভারত। তার কারণ, এই মামলায় সিবিআই ও ইডির যে প্রয়োজন পড়বে সহায়তায়র জন্য, এমনটা ব্রিটেন থেকে সরকারিভাবে জানানো হয়নি।
নীরব মোদীর স্ত্রী'র বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য পরোয়ানা জারি করল আদালত
নিজের জামিনের জন্য ৫ লক্ষ পাউন্ড অর্থ দিতে চেয়েছিলেন ৪৮ বছর বয়সী নীরব মোদী। তাঁর দাবি ছিল যে, তাঁকে আপাতত জামিন দেওয়া হোক। তিনি তদন্তে সম্পূর্ণ সাহায্য করবেন। কিন্তু, সেই আবেদন নাকচ হয়ে যায়। আপাতত তাঁকে আরও কয়েকটা দিন কাটাতে হবে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের জিম্মায়।
এই পলাতক হিরে ব্যবসায়ী তাঁর মাসিক ২০ হাজার পাউন্ডের বেতনের স্লিপ দেখান। তিনি যে নিয়মিত কর দেন, তার প্রমাণও আদালতে পেশ করেছেন। এছাড়া, ন্যাশনাল ইনসুরেন্সের নম্বরও রয়েছে তাঁর কাছে।
তাঁর স্বপক্ষে বলতে গিয়ে নীরব মোদী জানান, গত বছরের জানুয়ারি মাসে যখন তিনি ব্রিটেনে আসেন, তখনও তাঁর নামে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। ভারতের তাঁর প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে সরব হয়ে তিনি এই কথাও বলেন যে, তিনি ব্রিটেনে আইনসম্মতভাবেই রয়েছেন।
২০ হাজার টাকার মাসিক বেতনে লন্ডনে কাজ করতাম, আদালতকে জানালেন নীরব মোদী
তিনি আরও জানান, তাঁর ছেলে গত পাঁচ বছর ধরে পড়াশোনা করেছিল লন্ডনে। তিনি এখন ওখানেই কাজ করছেন এবং নিয়মিত আয়কর দেন। আদালতের কাছে হংকং ব্যাঙ্ক সহ তাঁর অন্যান্য ব্যাঙ্কের কার্ডও দেখান তিনি।
আদালতকে জানানো হয়, নিউ অক্সফোর্ড স্ট্রিটের ১০১০-এর ৪২ অ্যাপার্টমেন্টে বসবাস করছেন তিনি।