মহুয়া মৈত্রের বিরোধিতায় কলকাতার বুদ্ধিজীবীরা
কলকাতা: যে রাজ্যের শাসক দলের সাংসদ (Mahua Maitra) তাঁদের খোলা চিঠিকে ব্যঙ্গ করেছিলেন টুইটে, সেই রাজ্যের বুদ্ধিজীবীদেরই পাশে পেলেন অনাবাসী চিকিৎসক এবং বিজ্ঞানীরা। কিছুদিন আগে, একদল অনাবাসী চিকিৎসক এবং বিজ্ঞানী রাজ্যের করোনা ভাইরাস (Coronavirus) পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তাঁরা খোলা চিঠিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য সরকারকে সতর্ক করে বলেন, আরও সাবধান না হলে খুব শিগগিরিই রাজ্যে করোনা সংক্রমণ, মৃত্যুর হার বাড়বে। পরিস্থিতি হয়ে উঠবে আরও জটিল।
কাশ্মীরে অবরুদ্ধ বারাসতের পর্যটক পরিবারের দিকে সাহায্যের হাত কাশ্মীরিদের
অনাবাসী দলটিকে এরপরেই দুটো টুইটে আক্রমণ করেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। কড়া ভাষায় তিনি টুইটে লেখেন, তাঁরা যেন নিজেদের ঘর সামলান। আমেরিকা যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতিও খুব ভালো নয়। তাঁরা কি একই ভাবে সেদেশের রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প বা স্বাস্থ্য সচিবকে চিঠি পাঠিয়েছেন?"
এরপরেই সাংসদের বিরোধিতায় সরব হন প্রবীণ পরিচালক তরুণ মজুমদার, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী, পরিচালক অনীক দত্ত, চিত্রশিল্পী ওয়াসিম কাপুর, সমীর আইচ, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় সহ কলকাতার মোট ৭৫ জন বিশিষ্ট চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, শিল্পী। একই সঙ্গে তাঁদের বিস্ময়, এই সাংসদই এর আগে সংসদ ভবনে বলেছিলেন, সরকারের সমালোচনা করার অধিকার প্রতিটি স্বাধীন নাগরিকের আছে। না থাকাটাই ফ্যাসিবাদের লক্ষ্মণ। সেই মুখই রাজ্য সরকারের সমালোচনা মানতে নারাজ! এবং আদতে অনাবাসী চিকিৎসক এবং বিজ্ঞানীরা মুখ্যমন্ত্রীর কোনও সমালোচনাই করেননি। বরং, তাঁরা সদুপদেশ দিয়েছেন এবং করোনা মোকাবিলায় সঠিক দিশা দেখানোর চেষ্টা করেছেন।
রাজ্যে দু'দিনে সংক্রমিত ১২৭, নমুনা পরীক্ষা ৪৮১১ জনের
পাশাপাশি, সবার প্রশ্ন, এখন রাজ্য সম্পর্কে, জনস্বাস্থ্য সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করা তাহলে সরকারের সমালোচনা করার সমান? তাঁরা কি তাঁদের জন্মস্থানকে নিয়ে উদ্বিগ্ন হতে পারেন না? যেখানে ডব্লিউবি সরকার কর্তৃক গঠিত সিওভিডির বিশ্বব্যাপী উপদেষ্টা কমিটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ বেশিরভাগ এনআরআই নিয়ে গঠিত? এছাড়াও, যুক্তরাজ্য, মার্কিন সরকারের সঙ্গে খোলা চিঠি লেখার প্রশ্নই বা উঠছে কেন? আর যাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছেন তাঁদের প্রায় সকলেই বর্তমানে ডব্লিউবিতে বসবাস করছেন। স্বভাবতই তাঁরা নিজের দেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন।
বুদ্ধিজীবীরা আরও জানিয়েছেন, চিঠিতে যাঁদের স্বাক্ষর রয়েছে তাঁরা জনস্বাস্থ্য বিজ্ঞানী এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং জার্মানির প্রথম সারির প্রতিষ্ঠিত হাসপাতালের চিকিৎসক। তাঁরা কোভিড -১৯ সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি ওয়াকিবহাল। এবং প্রতিদিন গবেষণা ও সমীক্ষার মাধ্যমে নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সংক্রমণ রোধের।ফলে, তাঁরা বিচক্ষণ এবং ইতিমধ্যেই কেরল মডেলের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। এবং গোটা বিশ্বকে পরামর্শ দিয়েছেন এই মডেলকে রোল মডেল বানানোর।
"করোনা পরিস্থিতির প্রকৃত তথ্য লুকোচ্ছেন" মুখ্যমন্ত্রী, অভিযোগ রাজ্যপালের
তাই বুদ্ধিজীবীদের দাবি, মনোমালিন্য, তিক্ততা দূরে সরিয়ে দেশকে, রাজ্যকে করোনা মুক্ত করতে এঁদের পরামর্শ মানা উচিত। মনের ক্ষুদ্রতা সরিয়ে, অনাবাসী বিশেষজ্ঞদের দূরে সরিয়ে না দিয়ে বরং সাগ্রহে ওঁদের মত, পথ অনুসরণ করলে করোনা মোকাবিলা আরও সহজ হবে। ভুললে চলবে কেন, ওঁরাও এদেশের, এরাজ্যের, এশহরেরই ভূমিপুত্র!
(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদনা করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে।)