জয়পুর: জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামাতে নৃশংস সন্ত্রাসবাদী আক্রমণের শিকার হয়েছেন রাজস্থানের গোবিন্দপুরা গ্রামের বাসিন্দা রোহিতাশ লাম্বা। গত সপ্তাহেই নিজের দু'মাসের পুত্রের জন্মের পরের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে নিজের গ্রামে এসেছিলেন তিনি। শহিদ রোহিতাশের বাবা বাবুলাল পেশায় কৃষক, বাড়িতে আছে আরও একজন ছোট ভাই। ২০১৩ সালে সিআরপিএফে যোগ দেন তিনি। রোহিতাশের মৃত্যুর খবর আসতেই শোকে স্তব্ধ তাঁর গোটা গ্রাম। অন্যদিকে ধৌলপুরের বাসিন্দা ভাগীরথেরও মৃত্যু হয়েছে কাশ্মীরের এই সন্ত্রাসবাদী হামলায়। এক পুত্র এবং এক কন্যার বাবা ভাগীরথ ১৭ জানুয়ারি নিজের গ্রাম জেতপুরে ছুটি কাটাতে এসেছিলেন। মাত্র বছর চারেক আগেই বিয়ে করেন ভাগীরথ। কোটার বাসিন্দা হেমরাজ মিনাও সন্ত্রাসবাদী হামলায় নিহত হয়েছেন। ২০০১ সালে হেমরাজ সিআরপিএফে ভর্তি হন। তাঁর মৃতু নিয়ে প্রচুর ক্ষোভ রয়েছে তাঁর পরিবারের পরিজনদের মধ্যে। সকলেই বলছেন, পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে এই সন্ত্রাসবাদ ইচ্ছাকৃতভাবেই জিইয়ে রাখা হয়েছে। তাদের দাবি, পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করে, সন্ত্রাসবাদীদের নির্মূল করুক ভারত সরকার।
কাশ্মীর হামলার পর সরকারে পাশে থাকার বার্তা দিলেন রাহুল,বললেন, এটা রাজনৈতিক বিতর্কের সময় নয়
হেমরাজের বছর ছয়েকের ছেলে ঋষভও বাবার মতোই বড় হয়ে পুলিশ বা সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চায়। কিন্তু বড় হয়েছেন তাঁর মেয়ে রীনা। হত্যালীলার নেপথ্যে থাকা রাজনীতির লড়াই খানিক বুঝতে পারে সেও, দেশের রাজনীতিবিদদের নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তাঁর কন্যা। রীনা বলছেন, “এখন সব নেতা ও দায়িত্বশীল লোকেরা আসবেন এবং বড় বড় কথা বলবেন, কিন্তু সন্ত্রাসবাদকে সমূলে উৎপাটন করতে কোনও পদক্ষেপই করবেন না।" হেমরাজের বাবাও একই মনোভাব পোষণ করেন। হেমরাজ একা মারা গিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু বাবাকে হারিয়ে প্রায় অনাথ হয়েছে তাঁর ৪ সন্তান। বাড়িতে চার ভাইয়ের মধ্যে হেমরাজই ছিলেন দ্বিতীয়। চাষবাসের কাজ করেই জীবন চালান এই পরিবার।
"ভারতমাতার সেবায় আর এক পুত্রকেও উৎসর্গ করতে রাজি'' বীর জওয়ানের পিতা
ভরতপুরের গ্রাম সুন্দরাবলীর বাসিন্দা বছর ৩০-এর জীতরাম গুজ্জর সিআরপিএফের ৯২ তম ব্যাটেলিয়নে জওয়ান ছিলেন। গতকালের নারকীয় হত্যালীলায় শহিদ হয়েছেন তিনিও। জীতরাম কিছুদিন আগেই নিজের বাড়িতে আসেন এবং ছুটি কাটিয়ে ১২ ফেব্রুয়ারি ফের কাশ্মীরে চলে যান। জীতরামের বাড়িতে তাঁর স্ত্রী সুন্দরী দেবী, দুই ছোট্ট মেয়ে, বাবা রাধেশ্যাম গুজ্জর, ভাই বিক্রম সিং, মা গোপা দেবী রয়েছেন। জীতরামের ভাই বিক্রম সিংও সিআরপিএফে ভর্তি হওয়ার জন্য বাইরে রয়েছেন। ২০১০ সালে সিআরপিএফে যোগ দেন জীতরাম, নিজের বাড়ির একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন তিনিই। গ্রামের সরপঞ্চ দেবহরি সিং, তাঁর কাকা পূরণ সিং এবং গ্রাম প্রধান মৌরধ্বজ সিং জানিয়েছেন যে, জীতরাম গ্রামের অনেক ছেলেমেয়েকেই সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে উৎসাহিত করতেন, দেশের সেবা করতে অনুপ্রাণিত করতেন।
পুলওয়ামা হত্যাকাণ্ড নিয়ে কী বলছেন মোদি?