হাওড়া, কৃষ্ণনগর: হাজার হাজার মানুষ পথ হাঁটলেন তাঁদের শেষযাত্রায়। তাঁরা, মানে, বাবলু সাঁতরা ও সুদীপ বিশ্বাস। চোখের জলে হাওড়া ও কৃষ্ণনগর জেলার মানুষের সঙ্গে আসলে সারা ভারত বিদায় জানালেন গত বৃহস্পতিবার পুলওয়ামায় জঙ্গিহানায় নিহত দুই সিআরপিএফ জওয়ানকে। হাওড়ার চাক্কাশি রাজবংশীপাড়া গ্রামের মানুষরা বেদনারিক্ত হৃদয়ে বিদায় জানালেন ভারতমাতার এই লড়াকু সন্তানকে। কফিন মোড়া ছিল তেরঙাতে। তারপর দেওয়া হল ২১'টি গান স্যালুট। যদিও, বাবলু সাঁতরার স্ত্রী কাঁদতে কঁদতেই বললেন, তিনি আর যুদ্ধ চান না। যুদ্ধ কোনও সমাধান নয়। তা কেবল আরও মৃত্যু বাড়াতেই পারে। এছাড়া, আর কিছু নয়। বাবলু সাঁতরার মা কাঁদতে কাঁদেত মাঝেমাঝেই অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁর চার বছরের কন্যাসন্তানটি তেমন কিছুই বুঝছে না। কেবল ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে আছে বাবার মৃতদেহ সাজান ও কফিনটির দিকে। একই চিত্র নদীয়ার হাঁসপুকুরিয়া গ্রামেও। ২৭ বছরের সুদীপ বিশ্বাসের দেহটি তেরঙা মোড়া কফিনে করে গ্রামে আনার পর কান্নায় ভেঙে পড়েন অজস্র মানুষ। ২০১৪ সালে সিআরপিএফে যোগ দেওয়া সুদীপের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল আর কয়েক মাস বাদেই।
বৃহস্পতিবার জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার অবন্তীপুরাতে সিআরপিএফের কনভয়ে যে ভয়ঙ্কর জঙ্গিহানায় শহিদ হলেন অন্তত ৪০ জন সেনা এবং আহত হলেন আরও বহু, সেই হামলায় নিহতদের মধ্যে ছিলেন বাংলার এই দুই জওয়ানও। এই হামলা যে হতে পারে তার আঁচ আগেই পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু, গোয়েন্দা দফতর তা নিয়ে তেমন গা করেনি বলেই অভিযোগ। সূত্রের খবর, মাত্র ২ দিন আগেই পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ জানিয়েছিল যে, কাশ্মীরে খুব ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলা হতে চলেছে। এমনকি কীভাবে আক্রমণ করা হবে, তাও অনলাইনে আপলোড করা ভিডিও-র মাধ্যমে বুঝিয়ে দিয়েছিল এই জঙ্গি সংগঠন। ওই ভিডিও-তে আফগানিস্তানের একটি জায়গাকে দেখানো হয়েছিল। যেখানে এই একইরকমভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল গাড়ি ভর্তি বিস্ফোরক। সূত্রের খবর অনুযায়ী, জম্মু ও কাশ্মীরের পুলিশ ওই ভিডিও সহ সম্ভাব্য জঙ্গিহানার সমস্ত খুঁটিনাটি কী কী হতে পারে তা জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বিভাগকে। কিন্তু, তারা তা নিয়ে তেমনভাবে হেলদোলই দেখায়নি।
তার ফল, বৃহস্পতিবারের এই ভয়ানক জঙ্গিহানা। স্মরণকালের মধ্যে ভারতীয় সেনার ওপর এত বড় মাপের আক্রমণ আর ঘটেনি।
এই হামলার তীব্র নিন্দা করেন প্রায় সমস্ত রাজনৈতিক দলের নেতারাই। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী বলেন, "অত্যন্ত কাপুরুষের মতো কাজ এটা। এতজন সেনার শহীদ হয়ে যাওয়া মেনে যাওয়া না। আমি তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করি। তাঁদের পরিবারকে সমবেদনা জানাই। আহতদেরও দ্রুত আরোগ্য কামনা করি"।
(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদনা করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে।)