রাফাল হস্তান্তর অনুষ্ঠানের ১০ টি তথ্য দেখুন এখানে:
"এটি একটি ঐতিহাসিক দিন এবং এই ঘটনা ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে গভীর সম্পর্কের চিত্র প্রদর্শন করে," ফ্রান্সে রাফাল যুদ্ধবিমানের হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি বলেন, "রাফাল আইএএফ অর্থাৎ ভারতীয় বায়ুসেনার শক্তি আরও বাড়িয়ে দেবে। আমাদের লক্ষ্যই হল আইএএফের সক্ষমতা বাড়ানো। আমরা নিশ্চিত যে সব নিয়ম মেনে এটি অত্যাধুনিক অস্ত্র ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করবে" ।
"এই বিমানটি ভারতীয় বিমানবাহিনীর যুদ্ধক্ষেত্রে সক্ষমতা অর্জনের ব্যাপক উন্নতি চিহ্নিত করলেও এটি নেওয়ার উদ্দেশ্য আক্রমণ নয় বরং আত্মরক্ষার্থেই এটিকে বায়ুসেনার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে । এই মাইলফলকটির কৃতিত্ব দেওয়া উচিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে, যার সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলেই ভারতীয় বায়ুসেনার এই শক্তিবৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে", বলেন রাজনাথ সিং।
বুধবার প্যারিস থেকে প্রায় ৫৯০ কিলোমিটার দূরে বোর্দোর মেরিলিনাক অঞ্চলে এই বিমানের নির্মাতা দাসল্ট এভিয়েশনে এই হস্তান্তর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এর সঙ্গে দশেরা উপলক্ষে শস্ত্র পুজোও করেন দেশের কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তবে মঙ্গলবার শুধু দশেরা নয়, ৮৭ তম বিমান বাহিনী দিবসও উদযাপন করে ভারত।
রাফাল যুদ্ধবিমানটিতে ছোট্ট এক উড়ান দেওয়ার আগে পটভূমিতে দেশের জাতীয় পতাকা রেখে, মন্ত্রী একটি নারকেল ফাটান এবং সংস্কৃত মন্ত্র "ওম" উচ্চারণ করে বিমানটিকে চিহ্নিত করেন।
রাফাল হস্তান্তরের পর ওই যুদ্ধবিমানেই সওয়ার হন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। জানা গেছে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী যুদ্ধবিমানের ককপিটের পিছনের আসনে বসে ছিলেন এবং এক ফরাসি পাইলট আরবি ওয়ান টেল নম্বরের অত্যাধুনিক রাফাল যুদ্ধবিমানটি চালান। নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত বায়ুসেনা প্রধান আরকেএস ভাদৌরিয়াকে সম্মান দেখিয়ে টেল নম্বর আরবি দেওয়া হয়েছে বিমানটিতে। ২০১৬ সালে রাফাল চুক্তি করার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে সম্মান জানিয়েই ওই নামকরণ।
রাফালে সওয়ার করার শেষে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর উদ্ধৃতি উল্লেখ করে সংবাদসংস্থা এএনআই জানিয়েছে, "এটি একটি খুব আরামদায়ক এবং মসৃণ উড়ান ছিল... আমি কখনই ভাবিনি যে একদিন আমি একটি সুপার সনিক যুদ্ধবিমানে সওয়ার হয়ে তীব্রগতিতে উড়ে যাব।"
চারটি রাফাল জেটের প্রথম ব্যাচটি ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে করা ৫৯,০০০ কোটি ডলারের চুক্তি অনুযায়ী আগামী বছরের মে মাসে ভারতে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। জানা গেছে, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাকি বিমানগুলিও ভারতের কাছে পৌঁছে যাবে, যার জন্য ভারতীয় বায়ুসেনা তাঁর বিমান চালকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ সহ অন্যান্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এর আগে মঙ্গলবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমমানুয়েল ম্যাক্রনের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের পরে রাজনাথ সিং টুইট করেছিলেন: "প্যারিসের এলিসি প্রাসাদে আজ (মঙ্গলবার) ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মিঃ @ এমমানুয়েল ম্যাক্রনের সঙ্গে একটি চমৎকার বৈঠক হয়েছে। আমাদের নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।"
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত বছরের অগাস্টে ফ্রান্স সফর যান, সেই সময়ে উভয় দেশই নিজেদের মধ্যে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে সংকল্প নিয়েছিল। সেপ্টেম্বরে বায়ুসেনা প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই এয়ার চিফ মার্শাল রাকেশ কুমার সিং ভাদৌরিয়া বলেন যে রাফাল যুদ্ধবিমান অধিগ্রহণের ফলে ভারত "পাকিস্তান ও চিন"-এর প্রতি একটি বার্তা দিতে পারবে।
"রাফাল একটি অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান, এটি আমাদের শক্তি বাড়াবে এবং প্রয়োজনে গেমচেঞ্জারও হয়ে উঠবে এবং যখন আমরা এসইউ -30 এবং আমাদের অন্যান্য অস্ত্রের সঙ্গে এটিরও ব্যবহার করব, তখন আমাদের সামর্থ্য অনেকটাই বৃদ্ধি পাবে" বলেন ভারতীয় বায়ুসেনা প্রধান ভাদৌরিয়া।