মুম্বইয়ের (Mumbai) আদালতে হাজিরা দিয়ে নিজেকে ‘নির্দোষ' দাবি করলেন রাহুল গান্ধি (Rahul Gandhi)। বৃহস্পতিবার তিনি ওই আদালতে হাজিরা দিতে এসেছিলেন। সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশের (Gauri Lankesh) হত্যার সঙ্গে ‘বিজেপি-আরএসএস আদর্শ'কে যুক্ত করার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেন এক আরএসএস (RSS) কর্মী। ১৫,০০০ টাকার বিনিময়ে তাঁর জামিন মঞ্জুর হয় আদালতে। শুনানির পরে রাহুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমাকে আক্রমণ করা হয়েছিল এবং আমি লড়াইটা উপভোগ করেছি।'' বুধবারই কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে জনতার উদ্দেশে চিঠি লেখেন রাহুল। বৃহস্পতিবার তিনি আদালতে যাওয়ার পথে বহু দলীয় সমর্থক তাঁর উদ্দেশে দলীয় পতাকা নাড়ে। রাহুল বলেছেন, ‘‘এটা আদর্শের লড়াই। আমি দরিদ্র, কৃষকদের পাশে। লড়াই জারি রয়েছে। আমি উপভোগ করছি লড়াইটা।''
নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে ৫ ছাত্র গ্রেপ্তার, রয়েছে ভিডিও করার অভিযোগ
তিনি আরও বলেন, ‘‘লড়াই চলবে। গত পাঁচ বছরের তুলনায় ১০ গুণ কড়া লড়াই লড়ব আমি।''
বুধবারের খোলা চিঠিতে রাহুল জানিয়েছিলেন, দু'বছর আগে নেওয়া দায়িত্ব তিনি ছাড়ছেন। কিনতউ আদর্শের লড়াই তিনি লড়বেন। তিনি লিখেছিলেন, ‘‘আমি ব্যক্তিগত ভাবে লড়ছি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে, আরএসএস ও অন্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও লড়ছি। আমি লড়ছি কারণ আমি ভারতকে ভালবাসি... এই সময়ে আমি একেবারে একলা এবং আমি তার জন্য অত্যন্ত গর্বিত।''
‘‘অল্প লোকেরই এমন সাহস আছে'': রাহুল কংগ্রেস সভাপতির পদ ছাড়ার পরে বললেন প্রিয়ঙ্কা
তিনি এও লেখেন, ‘‘ক্ষমতার লিপ্সাকে ত্যাগ না করতে পারলে এবং গভীর আদর্শবাদী লড়াই না লড়লে আমরা আমাদের বিরোধীপক্ষকে হারাতে পারব না।'' ওই চিঠিতে বলা আদর্শের লড়াইয়ের সঙ্গে বৃহস্পতিবার রাহুলের আদালতে আসার সিদ্ধান্তের সংযোগ খুঁজে পেয়েছেন অনেকেই।
২০১৭ সালে তৎকালীন কংগ্রেস মুখ্য সোনিয়া গান্ধি, রাহুল গান্ধি ও সিপিআই(এম) নেতা তথা সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত অভিযোগ দায়ের করেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ তথা আরএসএস-এর কর্মী ও আইনজীবী ধৃতিমান যোশী। গত ফেব্রুয়ারিতে মাঝগাঁও মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটস কোর্ট রাহুল ও সীতারামকে শমন পাঠায়।
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে বেঙ্গালুরুতে নিজের বাড়ির বাইরে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশ।
ওই হত্যা প্রসঙ্গে রাহুল গান্ধি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘‘যিনিই বিজেপির আদর্শ, আরএসএস-এর আদর্শের বিরুদ্ধে কথা বলবেন তাঁকেই চাপ দেওয়া হবে, মারধর করা হবে, আক্রমণ করা হবে এবং মেরেও ফেলাও হবে।''
এই উক্তির পরেই ওই আরএসএস কর্মী মামলা দায়ের করেন।
সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছিলেন, আরএসএস-এৱ আদর্শ, আরএসএস-এৱ কর্মীই হত্যা করেছে গৌরীকে। তাঁর বিরুদ্ধেও মামলা করেন ওই কর্মী।
অভিযোগকারী রাহুল গান্ধি, তাঁর মা ও তৎকালীন কংগ্রেস মুখ্য সোনিয়া গান্ধি এবং সিপিআই(এম) এবং তার সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির নামে মামলা দায়ের করেন।
আদালত সোনিয়া গান্ধি ও সিপিআই(এম)-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ বাতিল করে দেয়। আদালতের বক্তব্য ছিল, দল কখনও কোনও ব্যক্তির মন্তব্যের জন্য দায়ী হতে পারে না।
রাহুল গান্ধির বিরুদ্ধে আরও একটি মানহানির মামলা হয়েছে। থানের ভিওয়ান্দিতে সেই মামলাও এক আরএসএস কর্মীরই করা। মহাত্মা গান্ধির মৃত্যুর জন্য সংঘকে দায়ী করেছিলেন রাহুল। এরপরই ওই মামলা দায়ের করেন ওই ব্যক্তি।