কাশ্মীরি মেয়েদের বউমা করে আনতে হবে, খট্টরের বিরুদ্ধে সরব রাহুল
নয়াদিল্লি: হরিয়নায় লিঙ্গ অনুপাতে ছেলে মেয়ের ব্যবধান ক্রমশ বাড়ছে। শনিবার যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর (Manohar Lal Khattar)। এতটা ঠিক-ই ছিল। কিন্তু, তার পরের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতেই বিতর্ক দানা বাঁধলো। ট্যুইট যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। খট্টরের মতে, রাজ্যে ছেলে-মেয়ের অনুপাতিক হার উদ্বেগজনক। ঠাট্টা করে তিনি বলেন, ‘একদিন বলা হত ছেলেদের জন্য বউমা আনা হবে বিহার থেকে। আর এখন তো কাশ্মীরি (Kashmiri) মেয়েদের বিয়ে করতেও আর কোনও বাঁধা নেই।' দিন কয়েক আগে উত্তর প্রদেশের এক বিজেপি (BJP) বিধায়কের মন্তব্য ছিল, ‘দলের যুবকরা এখন কাশ্মীরি ফর্সা মেয়েদের বিয়ে করতে পারবেন।' গেরুয়া শিবিরের মুখ্যমন্ত্রী থেকে বিধায়ক, কাশ্মীরি মহিলাদের প্রতি মনোভাবটা একই। যা নিয়ে হরিযানার মুখ্যমন্ত্রীকে (Manohar Lal Khattar) ট্যুইটে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি রাহুল গান্ধী। এই ধরণের বক্তব্যের পিছনে আরএসএস-(RSS) এর প্রভাব রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
২০১৪ সালে তৎকালীন বিজেপি নেতা ওপি ধনকার (OP Dhankar) রাজ্যের অল্পবয়সী যুবকদের বলেছিলেন হরিয়ানায় মেয়ের সংখ্যা কমে গেলে বিহার থেকে তিনি বউমা আনবেন। শুক্রবার এক জনসভায় রাজ্যের লিঙ্গ অনুপাত নিয়ে বলতে গিয়ে খট্টর বলেন, ‘মন্ত্রী ধনকারজি বলতেন, মেয়ের সংখ্যা কমে ছেলের সংখ্যা বাড়লে সমানুপাত আনতে বিহার থেকে বউমা আনব। জম্মু-কাশ্মীর (Jammu-Kashmir) থেকে ৩৭০ ধারা উঠে যাওয়ায় এবার সেখান থেকেও সুন্দরী বউমা আনা যাবে। যদিও পুরোটাই মজার ছলে বলা। যদি সেখানে নারী-পুরুষের সমানুপাত ঠিক থাকে তবে সবদিক থেকেই মঙ্গল।' যা ভাইরাল হয়।
এই মন্তব্যের পরই প্রতিবাদ জানান রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যকে ‘লজ্জাজনক' বলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘মনোহরজির কথা শুনে মনে হচ্ছে মেয়েরা যেন পুরুষের সম্পত্তি। এই কি সংঘের শিক্ষা!'
এখানেই শেষ নয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় রাহুলের মন্তব্যের পরেই ফের ট্যুইটে তার জবাব দেন হরিয়ানার বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী খট্টর (Haryana Chief Minister Manohar Lal Khattar )। কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি স্তরের নেতাকে বিকৃত খবরে প্রতিক্রিয়া না দেখানোর আবেদন করেন। একই সঙ্গে শুক্রবারের করা তাঁর বয়ানটিও জুড়ে দেন। কোন প্রেক্ষিতে কাশ্মীরি মেয়েদের কথা বলা হয়েছে, তা বোঝানোর চেষ্টা করেন তিনি।
বিতর্ক থামেনি। কংগ্রেস সাংসদ পিএল পুনিয়ার মতে, মুখ্যমন্ত্রী কীভাবে এরকম দায়িত্ব জ্ঞানহীন মন্তব্য করতে পারেন!
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও খট্টরের মন্ব্যের সমালোচনা করেন ট্যুইটে। তিনি লেখেন, ‘পদাধিকারীদের জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে কিছু বলার সময়ে অসংবেদনশীল মন্তব্য থেকে বিরত থাকতে হবে। এই ধরণের বক্তব্য কেবল সেই রাজ্যের মানুষের কাছেই নয়, সমগ্র দেশবাসীর কাছেই আঘাতের।'
এই প্রথম নয়। অনেক মেয়েই ছেলেদের ধর্ষণের মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে আইন মারফৎ অন্যায় সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করে। আগের বছর নভেম্বরে এই মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন।