নিরাপদ রাজস্থানের সরকার। সোমবার সকালে জানিয়েছে কংগ্রেস।
হাইলাইটস
- ১০০ জন বিধায়ককে একটি রিসর্টে রেখে দিয়েছে মরু রাজ্যের শাসক দল
- মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বিধায়কদের নিয়ে আরও একটি বৈঠক ডেকেছেন অশোক গেহলত
- উপমুখ্যমন্ত্রী শচীন পাইলটকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে
জয়পুর/নয়াদিল্লি:
রাজস্থান কংগ্রেসে বিদ্রোহের আরও একটি দিন পার হয়ে গেলেও, এদিন সরকারের পতন হয়নি। তবে ১০০ জন বিধায়ককে একটি রিসর্টে রেখে দিয়েছে মরু রাজ্যের শাসক দল। এদিন জয়পুরে বিধায়কদের বৈঠকের পর, জয়সূচক চিহ্ন দেখান মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলত, দাবি করেন তাঁর সরকার সুরক্ষিত। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বিধায়কদের নিয়ে আরও একটি বৈঠক ডেকেছেন তিনি এবং পুরো বিষয়টি নিয়ে এখনও পর্যন্ত নীরব এবং ঠাণ্ডা মাথা রেখে চলা বিদ্রোহী কংগ্রেস বিধায়ক তথা উপমুখ্যমন্ত্রী শচীন পাইলটকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি। রাহুল গান্ধির সঙ্গে কোনওরকম বৈঠকের জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছেন শচীন, এবং গান্ধি পরিবার ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুজনের মধ্যে “প্রত্যক্ষ বৈঠক কম হয়...একে অপরের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা অগাধ”।
এখানে রইল ১০'টি তথ্য:
শচীন পাইলটকে নিয়ে খুব একটা নরম মনোভাব নেই অশোক গেহলত এবং রাজস্থান কংগ্রেসের। বিধায়কদের বৈঠকের পর, “কংগ্রেস দল এবং সরকারের বিরুদ্ধে কোনও কাজ করলে” তাঁদের বিরুদ্ধে “কঠোর পদক্ষেপ করা”র প্রস্তাবনা নেওয়া হয়েছে।
কংগ্রেসের এই দলীয় বিদ্রোহের আঁচ পড়েছে গোলাপি শহরে, সোমবার সকালে, শচীন পাইলটের নামের পোস্টার নামিয়ে দেওয়া হয়, আবার পরে তুলেও দেওয়া হয়।
দিল্লি সংলগ্ন একটি হোটেলে কয়েকজন বিধায়ককে নিয়ে রয়েছেন শচীন পাইলট। তাঁর ইঙ্গিত, সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন অশোক গেহলত এবং ১০৬ জন ক্ষতিকারক বলে দাবি করেছেন শচীন পাইলট। ২০০ আসনের রাজস্থান বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে প্রয়োজন ১০১ আসন।
শচীন পাইলট বলেন, তাঁর পক্ষে রয়েছেন ৩০ জন বিধায়ক, তবে কংগ্রেস সূত্রের দাবি, ১৬ জনের বেশি সংখ্যা নেই শচীনের পক্ষে। মধ্যপ্রদেশের কায়দায় বিজেপি যদি এখানে শচীন পাইলটের বিদ্রোহকে কাজে লাগিয়ে সরকার ফেলার কাজে হাত লাগায়, তা নিয়ে রীতিমতো ভিত রয়েছে কংগ্রেস শিবির।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, “বিজেপির সঙ্গে এখনও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন” শচীন পাইলট, যদিও জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার মতো তিনি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন তিনি। মার্চে, ২২ জন বিধায়ককে নিয়ে বিজেপিতে যোগদান করেন রাহুল গান্ধি ঘনিষ্ঠ কংগ্রেস নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। তাঁর হাত ধরেই মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতায় ফেরে বিজেপি। শচীন পাইলটকে জোর করে মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবি থেকে সরানো হয় এবং তখন থেকেই তিনি বিজেপির সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জল্পনা রটে।
দুবছরের ক্ষমতায়, কংগ্রেসের দুই শীর্ষ নেতার কোন্দল থামেনি। গতমাসে রাজ্যসভা নির্বাচনের সময়, শচীন পাইলটের বিরুদ্ধে সরকার ফেলে দেওয়ার চক্রান্তের অভিযোগ তুলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হলে, সেই কোন্দল চরমে ওঠে।
শচীন পাইলটকে ডেকে পাঠানোর বিষয়টি লঘু করার চেষ্টা করতে, মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলত জানান, তাঁকেও ডেকে পাঠানো হয়েছে। যদিও তাতে শচীন পাইলটের ক্ষোভের আগুনে জল পড়েনি, তাঁর ঘনিষ্ঠরা জানান, রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে বিশেষ তদন্তকারী দল ছিল অশোক গেহলেতের হাতেই, এবং তিনিই শচীন পাইলটকে সমন পাঠিয়েছিলেন।
সোমবার কংগ্রেসের থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয় ভারতীয় ট্রাইবাল পার্টি, যদিও ভিন্ন পথে হাঁটতে পারেন তাদের দলের দুই বিধায়ক। সম্প্রতি, কংগ্রেসের রয়েছে ১০৭ জন বিধায়ক, এবং ১০ জন নির্দলের সমর্থন রয়েছে। এদিন, অশোক গেহলতের বৈঠকে যোগ দেন ১১৭ জনের মধ্যে ১০৬ জন বিধায়ক।
বিজেপির রয়েছে ৭৩ জন বিধায়ক, মরুশহরের কুর্সিতে পদ্ম ফোটাতে তাদের দরকার আরও ৩৫ জনের সমর্থন। তবে সেখানে, শচীন পাইলটকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করাটা চ্যালেঞ্জ বিজেপির কাছে, কারণ সেখানে রয়েছেন দলের অন্যতম নেত্রী তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া।
দিনভর যখন দলীয় কোন্দলে জেরবার অশোক গেহলত, সেই সময়েই তাঁর দুই ঘনিষ্ঠের বাড়িতে হানা দিলেন আয়কর আধিকারিকরা, যদিও এটিকে বিজেপি সরকারের থেকে চাপ সৃষ্টির কৌশল বলে অভিযোগ করেছে কংগ্রেস ২০০ জনের বেশি আধিকারিক এদিন ২২টি জায়গায় তলল্লাশি চালান।
Post a comment