সোমবার বিধায়কদের একটি বাসে করে রিসর্টে নিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলত।
হাইলাইটস
- খাদের কিনারায় কংগ্রেসের হাতে থাকা আরও একটি রাজ্য, রাজস্থান
- দ্বিতীয়বারও বিধায়কদের বৈঠকে যোগ দেননি বিদ্রোহী কংগ্রেস নেতা শচীন পাইলট
- যে দুজন মন্ত্রী তাঁর সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁদেরও সরানো হয়েছে
জয়পুর/নয়াদিল্লি:
মধ্যপ্রদেশ হাতছাড়া হওয়ার তিনমাস পর আবারও খাদের কিনারায় কংগ্রেসের হাতে থাকা আরও একটি রাজ্য, রাজস্থান। একাধিকবার আমন্ত্রণ জানানো হলেও, বিধায়কদের বৈঠকে যোগ দেননি বিদ্রোহী কংগ্রেস নেতা শচীন পাইলট, এরপরেই উপখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকেও সরানো হয় তাঁকে। যে দুজন মন্ত্রী তাঁর সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁদেরও সরানো হয়েছে। কংগ্রেসের অভিযোগ, অশোক গেহলত সরকার ফেলে দেওয়ার জন্য বিজেপির “ফাঁদে” পা দিয়েছেন শচীন পাইলট। মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার শচীন পাইলট বলে জানা গিয়েছে। তিনি চলে গেলে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার পর এই নিয়ে কংগ্রেস দল থেকে দ্বিতীয় নেতার প্রস্থান।
এখানে রইল ১০'টি তথ্য:
টুইটে শচীন পাইলট লেখেন, “সত্যকে অস্বীকার করা যায়, হারানো যায় না”। পরে, আবারও টুইটে তিনি লেখেন, “আজ যাঁরা আমার সমর্থনে বেড়িয়ে এসেছেন, তাঁদের সবাইকে আমাদর হৃদের আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিনন্দন। রাম রাম”। তাঁর সমর্থকদের দাবি, তাঁদের কাছে, নেতার “প্রকাশ্যে অপমান” “একেবারেই অপ্রত্যাশিত”, এবং যাঁরা তাঁর সঙ্গে দু্ব্যবহার করেছে, তাঁদের শাস্তি হওয়া উচিত।
ইতিমধ্যেই সংখ্যার সঙ্কটে পড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলত, এদিন সন্ধ্যায় মন্ত্রিসভার বৈঠক করেন তিনি। এখন কংগ্রেসের রয়েছে ১০০ জন বিধায়ক, যা ২০০ বিধানসভার অর্ধেক, এদিন সকালে শিবির বদল করেন তিনজন বিধায়ক। সোমবার বিধায়কদের একটি বাসে করে রিসর্টে নিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলত।
শচীন পাইলটের বিদ্রোহের আগে, কংগ্রেসের ১০৭ জন বিধায়ক ছাড়াও ১৩ জন নির্দল, এবং ছোটো দলের ৫ জন বিধায়কের সমর্থন ছিল। একন কংগ্রেসের বিধায়কসংখ্যা ৯০, ছোটো দলের তিনজন, এবং সাতজন নির্দল মিলিয়ে ১০০। শচীন পাইলটের দিকে ১৭ জন কংগ্রেস এবং তিনজন নির্দল বিধায়কের সমর্থন রয়েছে।
জোটে, রাজস্থান বিধানসভায় ভারতীয় ট্রাইব্যাল পার্টির বিধায়ক সংখ্যা দুই, তারা কংগ্রেসের থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করেছে। তাঁদের এক বিধায়ক রাজকুমার রোয়াট ভিডিও পোস্ট করে অভিযোগ করেছেন, জয়পুর ছেড়ে তাঁকে যেতে বাধা দিয়েছে পুলিশ এবং গাড়ির চাবি কেড়ে নিয়েছে। তাঁর অভিযোগ, “আটকে রাখার মতো পরিস্থিতি” তৈরি করা হয়েছিল, চাবি কেড়ে নেওয়ার ছবিও পোস্ট করেন তিনি।
এখনও পর্যন্ত কংগ্রসের বিদ্রোহের দিকে সতর্কতার সঙ্গে নজর রেখেছে বিজেপি, মঙ্গলবার তারা প্রথম পদক্ষেপ করে। এদিন দলের নেতা ওম মাথুরকে জয়পুরে পাঠিয়ে বৈঠক করানো হয় গেরুয়া শিবিরের তরফে। বুধবার সকাল ১১টায় জয়পুরে বৈঠক করবে বিজেপি, সেখানেই উপস্থিত থাকবেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া।
শচীন পাইলট এবং অন্যান্য বহিষ্কৃত নেতাদের শূন্যস্থানে সংখ্যা জোগাড় করছেন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলত, কারণ আস্থা ভোটে যেতে হলে তাঁকে সংখ্যার প্রমাণ দিতে হবে।
শচীন পাইলট এবং অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালিয়েছে কংগ্রেস এবং যে ঘটনা ঘটেছে তা “দুঃখজনক” বলে মন্তব্য করা হয়েছে দলের তরফে। সোমবার রাতে, দলের নেতা রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা বলেন, “শচীন পাইলট এবং নেতাদের জন্য দরজা খোলা রয়েছে। তাঁদের কথা শোনা হবে এবং সমস্যার সমাধান বের করা হবে। এটা দলের শৃঙ্খলা”।
বিজেপিতে যাওয়ার জল্পনা খারিজ করে দিয়েছেন খোদ শচীন পাইলট, যদিও কংগ্রেস সূত্রের দাবি. গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন তিনি। বিজেপির বিরুদ্ধে শচীন পাইলটের সাহায্য নিয়ে রাজস্থানে সরকারকে বিপাকে ফেলার অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস, যেভাবে মধ্যপ্রদেশে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এবং অন্যান্য নেতাদের ক্ষোভ কাজে লাগিয়ে সরকার পেলে দেওয়া হয়েছে এবং তাঁদের পদ্ম শিবিরে যোগ দেওয়ানো হয়েছে।
বিজেপির এখন ৭৩ জন বিধায়ক রয়েছে এবং রাজস্থানে ক্ষমতা দখল করতে তাদের আরও ৩৫ জনের সমর্থন জোগাড় করতে হবে।
২০১৮ সালে রাজস্থানে কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর থেকেই, দলের মধ্যে কোন্দল চলছিল অশোক গেহলত এবং শচীন পাইলটের। গতমাসে রাজ্যসভা নির্বাচনের সময়, শচীন পাইলটের বিরুদ্ধে সরকার ফেলে দেওয়ার চক্রান্তের অভিযোগ তুলে ডেকে পাঠালে ক্ষোভ চরমে ওঠে। মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলত বলেন, তিনিও সমন পেয়েছেন, যদিও তাতে ক্ষোভ প্রশমন হয়নি।
Post a comment