This Article is From Sep 03, 2019

‘আমরা সবাই শয়তান’ ক্লাব মাকে ঠকাচ্ছে! বিস্ফোরক রাণু মণ্ডলের কন্যা এলিজাবেথ

এলিজাবেথ সাথী রায় রানাঘাটের আমরা সবাই শয়তান ক্লাবের সদস্যদেরও দোষ দিয়েছেন। এই ক্লাব তাঁর মায়ের দেখাশোনা করত, এবং রাণু মন্ডলের থেকে দূরে থাকতে তাঁকে হুমকি দিয়েছে বলেও অভিযোগ।

‘আমরা সবাই শয়তান’ ক্লাব মাকে ঠকাচ্ছে! বিস্ফোরক রাণু মণ্ডলের কন্যা এলিজাবেথ

মুম্বাইয়ের স্টুডিওয়তে গান গাইছেন রাণু মণ্ডল

হাইলাইটস

  • এলিজাবেথ সাথী রায় রাণুর চার সন্তানের একজন
  • "অন্য সন্তানরা কেন মা'কে দেখে না" প্রশ্ন এলিজাবেথের
  • "আমি সিঙ্গল মাদার.... আমারও লড়াই আছে" জানান এলিজাবেথ
নয়াদিল্লি:

রানাঘাট বলতে মানুষ এখন একটাই নাম জানেন। অবধারিত সেই নাম রাণু মণ্ডল (Ranu Mondal), স্টেশনে (Ranaghat railway station) লতা মঙ্গেশকরের ‘এক প্যায়ার কা নাগমা হ্যায়' (Lata Mangeshkar's song Ek Pyaar Ka Nagma Hai) গেয়ে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরে রাণু মন্ডল (Ranu Mondal) এখন রাতারাতি ইন্টারনেট সেনসেশন! বলিউডে গান গেয়ে এখন রীতিমতো সেলেব রাণু। তবে মা যে গান গাইতে পারেন সেই বিষয়ে নাকি কোনও ধারণাই ছিল না রাণু মণ্ডলের কন্যা এলিজাবেথ সাথী রায়ের(Elizabeth Sathi Roy)। এলিজাবেথ জানিয়েছেন যে, তাঁর মা স্টেশনে গান গাইতেন বলে কোনও ধারণাই ছিল না তাঁর এবং নিয়মিত মাকে দেখতে না এলেও মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল বলেই জানিয়েছেন তিনি। বৃদ্ধা বয়সে মাকে ছেড়ে চলে যাওয়ার অভিযোগে এলিজাবেথ সাথী রায় ইন্টারনেটে সমালোচনার মুখে পড়েন। যদিও তিনি আইএএনএসকে জানান যে, যতটা সম্ভব মায়ের যত্ন নেওয়ার চেষ্টা করেছেন তিনি এবং বলেন তাঁর নিজেরও লড়াই রয়েছে। রানু মন্ডলের চার সন্তানের এক এলিজাবেথ সাথী রায় বলেন যে তিনি একজন সিঙ্গল মাদার এবং একটি ছোট মুদি দোকান চালান। তিনি তাঁর মাকে বেশ কয়েকবার নিজের কাছে থাকতে বলেছেন কিন্তু রাণু তা প্রত্যাখ্যান করেন। 

Ranu Mandal: ফিরোজ খানের বাড়িতে কাজ করতেন রাণুর স্বামী!

“আমি জানতাম না যে মা রেলস্টেশনে গান করতেন কারণ আমি নিয়মিত মাকে দেখতে যেতাম না। কয়েকমাস আগে আমি ধর্মতলায় গিয়েছিলাম এবং মাকে একটি বাসস্ট্যান্ডে বসে থাকতে দেখি। আমি মাকে বলি, এক্ষুণি বাড়ি যাও এবং ২০০ টাকাও দিই। আমি মামার অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে যথাসম্ভব ৫০০ টাকা করে পাঠাতাম মাকে। আমি বিবাহবিচ্ছিন্না এবং সিউড়িতে একটি ছোট মুদি দোকান চালাই। আমি একজন সিঙ্গল মাদার, আমার ছোট ছেলের দেখাশোনা করি। আমার নিজেরও লড়াই রয়েছে। তবুও আমি যতটুকু পারি মাকে দেখাশোনা করার চেষ্টা করি। আমি বেশ কয়েকবার মাকে বলেছি আমাদের সঙ্গে থাকো, তবে আমার মা আমাদের সঙ্গে থাকতে চান না। তবুও লোকেরা আমায় দোষ দিচ্ছে। জনসাধারণ আমার বিরুদ্ধে। আমি এখন কার কাছে যাব?” বলেন এলিজাবেথ সাথী রায়।

রাণু মন্ডলের ‘এক প্যায়ার কা নাগমা হ্যায়' গানের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। এর পরেই রিয়েলিটি শো সুপারস্টার সিঙ্গারে গাওয়ার জন্য গায়ক সুরকার হিমেশ রেশমিয়া আমন্ত্রণ জানান তাঁকে। ৫৯ বছরের রাণু মণ্ডল হিমেশের আগামী সিনেমা ‘হ্যাপি হার্ডি অ্যান্ড হির'এর (Happy Hardy And Heer) জন্য আদত এবং তেরি মেরি কাহানি গান (Aadat and Teri Meri Kahaani) রেকর্ড করেছেন।

এলিজাবেথ সাথী রায় বলেন, যে তিনি রাণু মণ্ডলের প্রথম বিয়ের সন্তান। তাঁর এক বড় ভাইও রয়েছে। রাণু মন্ডলের দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে তাঁর দু'টি সন্তান রয়েছে। এলিজাবেথ বলেন, “কয়েক বছর আগে আমার বাবা মারা গেছেন। মা'র দ্বিতীয় স্বামীর ছেলেমেয়েরা সম্ভবত মুম্বাইতে রয়েছেন, যদিও আমি নিশ্চিত নই। তাঁর দ্বিতীয় স্বামী এখনও বেঁচে আছেন। আমি মায়ের প্রথম স্বামীর মেয়ে এবং আমার এক বড় ভাই এবং এক সৎ ভাই ও সৎ বোন রয়েছে। আমরা একে অপরের যোগাযোগে নেই। অন্য বাচ্চারা মা'র দায়িত্ব কেন নেয় না? কেন কেউ তাদের দোষ দিচ্ছে না? আমি চাই তারা এগিয়ে আসুক এবং সাথে মা'র যত্ন নিক আমার মতোই।” 

‘তেরি মেরি...'র পরে রানাঘাটের রাণু মণ্ডলকে দিয়ে আবার গান রেকর্ড করাচ্ছেন হিমেশ রেশমিয়া

এলিজাবেথ সাথী রায় আরও বলেন যে, রাণু মন্ডল দ্বিতীয় বিয়ের পরে কলকাতা থেকে মুম্বই চলে যান। সেখানে তিনি তার পরিবারের সাথে থাকতেন। “আমি মা'কে যেভাবে পারি সমর্থন করার চেষ্টা করেছি। প্রতিবার মায়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে আমি তাঁর জন্য খাবার ও টাকাপয়সা নিয়ে যেতাম...আমি হয়তো মায়ের সঙ্গে থাকতাম না, তবে আমার সাধ্যমতো যত্ন নিয়েছি,” জানান এলিজাবেথ! এলিজাবেথ সাথী রায় রানাঘাটের আমরা সবাই শয়তান ক্লাবের সদস্যদেরও দোষ দিয়েছেন। এই ক্লাব তাঁর মায়ের দেখাশোনা করত, এবং রাণু মন্ডলের থেকে দূরে থাকতে তাঁকে হুমকি দিয়েছে বলেও অভিযোগ।

“মনে হচ্ছে যেন অতীন্দ্র চক্রবর্তী এবং তপন দাশ (ক্লাব সদস্য) আমার মায়ের নিজের ছেলে। তাঁরা এবং ক্লাবের অন্যান্য সদস্যরা আমাকে মায়ের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করলে আমার পা ভেঙে ফেলে দেবে বলে হুমকি দিয়েছে। ওরা আমাকে ফোনেও মা'র সঙ্গে কথা বলতে দেয় না। ওরা আমার বিরুদ্ধে মা'র মগজধোলাই করছে। আমি অসহায় বোধ করি... তপন ও অতীন্দ্র খ্যাতি চায়, তাই ওরা আমাকে সরাচ্ছে... তপন আমার মায়ের কাছ থেকে টাকা নেয় রোজকারের জিনিস কিনে দেওয়ার অজুহাতে। ওরা মা'র অ্যাকাউন্ট থেকে ১০,০০০ টাকা নিয়েছে আর মায়ের জন্য কেবল একটা স্যুটকেস এবং কয়েকটা নাইটি কিনে দিয়েছে।”

“যদিও সবাই আমাকে দোষ দিচ্ছে, তবুও আমি মায়ের পাশেই থাকব। আমি মা'কে অনুরোধ করব আমার সঙ্গে সিউড়িতে থাকতে, তবে আমি কখনই জোর করব না... তিনি জীবনের অনেকটা সময় পার করেছেন এবং অবশেষে স্বীকৃতি পাচ্ছেন তাঁর ঈশ্বরপ্রদত্ত কণ্ঠের জন্য। আমি তার মেয়ে হিসাবে গর্বিত,” জানান রাণু তনয়া এলিজাবেথ সাথী রায়।

.