This Article is From Jul 04, 2019

ভক্তের অহঙ্কার ভাঙতে গজমোতি পান দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বয়ং জগন্নাথ?

Rath yatra 2019: প্রধান পূজারি দেবতার ধ্যানে বসলে তাঁকে স্বয়ং জগন্নাথ বলেন, ওই ব্যক্তি যেন রোজ এক খিলি পান দেন। কিন্তু চূণ, খয়ের, সুপুরির বদলে মুক্তোর মিহি দানা দিতে হবে।

ভক্তের অহঙ্কার ভাঙতে গজমোতি পান দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বয়ং জগন্নাথ?

Rath yatra 2019: ভক্তের কাছে পান খেতে চেয়েছিলেন ভগবান জগন্নাথ স্বয়ং!

রথযাত্রা (Rath Yatra) নিয়ে, জগন্নাথ দেবকে (Lord Jagannath Deb) নিয়ে পুরাণে অনেক মিথ বা কল্পকাহিনি প্রচলিত আছে। আমরা জানি, বচ্ছরান্তে এই দিন জগন্নাথ দেব তাঁর ভাই বলরাম এবং বোন সুভদ্রাকে নিয়ে আসেন মাসির বাড়িতে। সাতদিন ধরে সেখানে থাকেন। নানা ধরনের ভোগ দিয়ে পুজো হয় এই তিন দেবতার সাতদিন পরে উল্টোরথের দিন তিনি আবার স্বস্থানে ফেরেন।

জগন্নাথ দেবের ভক্তরা বলেন, দেব যেমন দয়ালু তেমনি অল্পেই সন্তুষ্ট। কিন্তু তিনি অহঙ্কার সহ্য করতে পারেন না। কোনও ভক্ত তাঁর কাছে সম্পদের অহঙ্কার দেখালে ভক্তের সেই অপরাধের শাস্তি দেন নিজে হাতে। এই প্রসঙ্গে জানুন এক পুরাণ কাহিনি। একবার এক ধনী দাম্ভিক ব্যক্তি পুরীতে আসেন দেব দর্শনে। তিনি শুনেছিলেন, পুরীর মন্দিরে স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জগন্নাথ রূপে অবস্থান করেন।

মন্দিরে পা রাখা মাত্র এক ভক্ত তাঁকে জগন্নাথের প্রসাদ দিতে চাইলেন। কিন্তু তিনি তা নেওয়ার আগে পকেটে হাত দিয়ে কিছু টাকা বের করলেন। ভক্তকে দেবেন বলে। ভক্তটি কিছুতেই টাকা নেবেন না। জানালেন, এই প্রসাদ তিনি এমনিই দিচ্ছেন। তাঁর টাকার কোনও প্রযোজন নেই। এদিকে ধনী ব্যক্তিও  নাছোড়। আত্ম-অহঙ্কারে অন্ধ হয়ে সগর্বে ঘোষণা করলেন, তিনি টাকা ছাড়া কোনও কিছু গ্রহণ করেন না।

গোটা ঘটনার সাক্ষী ছিলেন মন্দিরের এক পান্ডা। তিনি নিয়ে এলেন ব্যক্তিটিকে যেখানে জগন্নাথের প্রসাদের অর্ডার নেওয়া হয় সেখানে নিয়ে গেলেন।

সেই ব্যক্তিটি সেখানেও নিজের ধনসম্পদের কথা প্রচার করতে শুরু করলেন। এবং জানালেন, তিনি চান তাঁর এই ধনসম্পদের কথা সবাই জানুক। সেই অনুসারে যিনি প্রসাদের অর্ডার নেন তাঁকে বললেন, ভগবান জগন্নাথকে প্রতিদিন যে ৫৬টি ভোগ নিবেদন করা হয়, তিনি সেই ভোগের যেকোনও একটি দিতে চান। তার দাম যেন এক লক্ষ টাকা হয়।

এই কথা শুনে মাথায় হাত সবার। এত দামের ভোগ তাঁরা কী দেবেন? সমস্যা মেটাতে তখন সেই পান্ডা জগন্নাথ মন্দিরের প্রধান পূজারির কাছে গেলেন। সব শুনে প্রধান পূজারি সবাইকে বললেন, এর সমাধান স্বয়ং ভগবান করবেন। তবে আজ নয় কাল। কারণ জগন্নাথ মন্দিরের নিয়মানুযায়ী, প্রধান পূজারি উপোস করে জগন্নাথের ধ্যানে বসলে দেবতা তাঁর সমাধানের রাস্তা দেখিয়ে দেন।

অনেকেই জানেন, পুরীতে প্রতিদিন ৫৬টি ভোগের সঙ্গে তিনটে পানের খিলি দেওয়া হয়। একটি জগন্নাথ, একটি বলরাম ও একটি সুভদ্রার জন্য। প্রধান পূজারি দেবতার ধ্যানে বসলে তাঁকে স্বয়ং জগন্নাথ বলেন, ওই ব্যক্তি যেন রোজ এক খিলি পান দেন জগন্নাথ দেবকে। কিন্তু পানে চুন, খয়ের ও সুপুরির বদলে মুক্তোর মিহি দানা দিতে হবে।

বৈকুণ্ঠ বা স্বর্গে নাকি দেবতাদের এভাবেই পান দেওয়ার রেওয়াজ। আর সেই মিহি মুক্তোদানা পাওয়া যায় গজ বা হাতির মাথা থেকে। কিন্তু পৃথিবীতে এমন হাতি কই? সব শুনে সেই দাম্ভিক ব্যক্তির মাথায় হাত। বুঝলেন, লক্ষ টাকা থাকলেও ভগবান জগন্নাথকে এক খিলি পান দেওয়ার সামর্থ্য তাঁর নেই।

সেদিনই সেই অহঙ্কারি ব্যক্তি ধনসম্পদের গর্ব ছেড়ে ভগবানের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করলেন। পরে তিনিই পরিচিত হন জগন্নাথের একনিষ্ঠ ভক্তে। জানেন, কী তাঁর নাম? তিনি হায়দ্রাবাদবাসী যশোবন্ত মেহেতা (Yashbant Mehteta)। আজও মেহেতা পরিবার ভগবান জগন্নাথের সেবায় উৎসর্গীকৃত।

সৌজন্যে: ফেসবুক

.