করোনাকে সাক্ষী রেখেই এক হল চার হাত।
লখনউ: করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) কারণে পিছিয়ে গিয়েছে বহু বিয়ে। কিন্তু কানপুরের (Kanpur) অনিল ও নীলমের জীবনে করোনা ভাইরাসই হয়ে উঠল পরিণয়ের সাক্ষী! কানপুরের এই ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media)ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। কেমন করে শুরু হল দু'জনের সম্পর্ক এবং তারপর তা পরিণতি পেল, সে গল্প ফিল্মের গল্পকেও বুঝি হার মানায়। নীলম থাকতেন দাদা-বউদির কাছে। কারণ তাঁর বাবা-মা মারা গিয়েছেন। দাদা-বউদি তাঁর উপরে অকথ্য অত্যাচার চালিয়ে তাঁকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। এরপর এমনকী, বোনের খোঁজখবরও নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি দাদা। অসহায় নীলম বাধ্যত ভিক্ষাবৃত্তি করেই নিজের গ্রাসাচ্ছেদনের ব্যবস্থা করেছিলেন। কাকাদেব এলাকায় ভিক্ষুকদের সঙ্গে বসেই খাবার খেতেন তিনি। হয়তো মনে মনে কোনও এক রাজপুত্রের স্বপ্ন দেখতেন তিনিও। যদিও বাস্তবের ঠোক্কর খেতে খেতে নিশ্চয়ই বুঝতে পারতেন, জীবনটা রূপকথা নয়। কিন্তু কে জানত, এমন অসহায় দুখিনীর জীবনেও আসবে রূপকথার পরশ।
এদিকে এরই মধ্যে দেশজুড়ে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটে। সংক্রমণ ঠেকাতে জারি হয় লকডাউন। ফলে নীলমের দুর্ভোগ চরম আকার নেয়। যেটুকু খাবারের বন্দোবস্ত হচ্ছিল, এবার তাও বন্ধ হয়ে যায়। বেঁচে থাকা আরও কঠিন হয়ে যায় নীলমের। আর এই ভয়ঙ্কর সময়ে, পিঠ দেওয়ালে ঠেকে যাওয়ার মুহূর্তেই শুরু হল নীলমের জীবনের নতুন অধ্যায়।
কানপুরের বাসিন্দা লালতা প্রসাদের সঙ্গে পরিচয় হয় নীলমের। তিনি তাঁর গাড়ির চালক অনিলকে বলেন, অনিল যেন নীলমকে দৈনিক খাবার সরবরাহ করেন। পাশাপাশি আশপাশে উপস্থিত বাকি অভাবী মানুষদেরও যেন খাবার সরবরাহ করেন তিনি।
সেই নির্দেশ মেনে প্রায় ৪৫ দিন ধরে অনিল সেখানে নীলম সহ অন্য ভিক্ষুকদের কাছে খাবার সরবরাহ করতেন। আর এর ফলে ক্রমেই সম্পর্ক গাঢ় হতে শুরু করে অনিল ও নীলমের।
অবশেষে অনিলের বাবা জানতে পারেন তাঁদের সম্পর্কের ব্যাপারে। নীলমের সঙ্গে দেখা করে তিনি নীলমের ইচ্ছার কখা জানতে চান। নীলমের এবিয়েতে মত রয়েছে জানতে পারার পর আর দেরি করেননি। লকডাউনের মধ্যেই এক হল চার হাত।
এমন আশ্চর্য প্রেমকাহিনি ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। আপাতত সকলের কামনা একটাই। রূপকথার মতোই যেন হয়ে ওঠে অনিল-নীলমের দাম্পত্য। বাকি জীবন যেন পরম সুখে একে অপরের সান্নিধ্যে কাটিয়ে দিতে পারেন তাঁরা।