মেহুল চোক্সির গীতাঞ্জলি জেমসের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫,৪৯২ কোটি্ টাকা, তারা তালিকার শীর্ষে রয়েছে
নয়াদিল্লি: দেশের ব্যাঙ্কগুলিতে সবচেয়ে বেশি অঙ্কের ঋণ খেলাপি রয়েছে যে সংস্থাগুলির, সেই রকম ৫০ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (Reserve Bank of India), তালিকায় রয়েছেন ব্যবসায়ী মেহুল চোক্সি (Mehul Choksi), ঝুনঝুনওয়ালা ব্রাদার্স, এবং বিজয় মালিয়া। মঙ্গলবার তথ্য জানার অধিকার আইনে আবেদন করেন সাকেত গোখলে, তার উত্তরে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, ২০১৯ এর ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৫০টি সংস্থার ৬৮,৬০৭ কোটি টাকা “রিটন অফ” রয়েছে। এই রিটন অফ শব্দের অর্থ, যে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থের মূল্য শূন্যে পরিণত হয়েছে। রিটন অফ হল সেই অনাদায়ী ঋণ, যা প্রায় লোকসানের তালিকায় চলে গিয়েছে, যদিও ব্যাঙ্কের তরফে আদায়ের চেষ্টা চালানো হয়েছে।
আরবিআইয়ের তালিকার শীর্ষে রয়েছেন পলাতক হিরে ব্যবসায়ী মেহুল চোক্সির সংস্থা গীতাঞ্জলি জেমস, তাদের বকেয়ার পরিমাণ ৫,৪৯২ কোটি টাকা। এছাড়াও মেহুল চোক্সির অন্য সংস্থা গিলি ইন্ডিয়া এবং নক্ষত্র ব্র্যান্ডসেরও ১,৪৪৭ কোটি এবং ১,১০৯ কোটি টাকা রিটন অফ রয়েছে।
তারপরেই রয়েছে আরইআই, তাদের বকেয়ার পরিমাণ ৪,৩১৪ কোটি টাকা, এবং উইনসাম ডায়মন্ডের বকেয়া ৪,০৭৬ কোটি টাকা।
রোটোম্যাক গ্লোবাল প্রাইভেট লিমিটেডের ২,৮৫০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে, তারপর রয়েছে কুদোস কেমি লিডিমেট, তাদের বকেয়া ২,৩২৬ কোটি টাকা, রুতি সোয়া ইনডাস্ট্রিজ লিমিটেডের রয়েছে ২,২১২ কোটি টাকা, তাদের মালিকানা রয়েছে যোগ গুরু রামদেবের পতঞ্জলী, এবং জুম ডেভলপার্স লিমিটেডের রয়েছে ২,০১২ কোটি টাকা।
তালিকার ৯ নম্বরে রয়েছে বিজয় মালিরা কিংফিংশার এয়ারলাইন্স, তাদের বকেয়ার পরিমাণ ১,৯৪৩ কোটি টাকা, সেটিও রিটন অফ ঘোষণা করেছে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।
ফোরএভার প্রিসিয়াস জুয়েলারি অ্যান্ড ডায়মন্ড লিমিটেডের ১,৯৬২ কোটি টাকা, ডেকান ক্রোনিক্যাল হোল্ডিংস এর ১,৯১৫ কোটি টাকার রিটন অফ ঋণ রয়েছে।
আরইআই এগ্রো বা ঝুনঝুনওয়ালা ব্রাদার্সের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এছাড়াও উইনসম ডায়মন্ডের বিরুদ্ধেও তদন্ত করছে সিবিআই এবং ইডি।
তালিকার চার নম্বরে রয়েছে বিক্রম কোঠারির রোটোম্যাক। ২০১৮ সালে তিনি এবং তাঁর ছেলে রাহুল কোঠারিকে গ্রেফতার করে সিবিআই।
মঙ্গলবার তালিকাটির উল্লেখ করে সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানায় কংগ্রেস। সরকারের বিরুদ্ধে তালিকায় বিজেপির “বন্ধুরা” থাকায় নাম “গোপন” করার অভিযোগ তোলেন তিনি।
একটি ভিডি দিয়ে হিন্দিতে করা ট্যুইটে রাহুল গান্ধি লেখেন, “আমি সংসদে একটা সাধারণ প্রশ্ন করি, ৫০ জন শীর্ষ ব্যাঙ্ক জালিয়াতদের নাম বলুন। উত্তর দিতে অস্বীকার করেন অর্থমন্ত্রী। এখন নীরব মোদি, মেহুল চোক্সি, এবং অন্যান্য বিজেপির বন্ধুদের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে আরবিআই। এই কারণেই সংসদে সত্য গোপন করা হয়েছে”।
আবেদনে আরটিআই আন্দোলনকারী সাকেত গোখলে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত, ঋণ খেলাপিদের নামের তালিকা জানতে চান।, যদিও আরবিআই জানায়, জানতে চাওয়া তথ্য তাদের কাছে নেই। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে আরও জানানো হয়, তথ্য দিয়েছিল ব্যাঙ্কগুলি, এবং তাঁরা বিদেশে থাকায় প্রকাশ্যে আনা সেই আওতার বাইরে।
ভারতীয় ব্যাঙ্ক ব্যবস্থার ওপর ১০ লক্ষ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ রয়েছে, বলে জানিয়েছে সংবাদসংস্থা রয়টার্স। সম্প্রতি কয়েকবছরে শাস্তি এড়াতে বেশ কয়েকজন খেলাপি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার কারণে বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে আসে, উচ্চমানের প্রতিষ্ঠানগুলিতে আর্থিক সঙ্কট দেখা দেয়।.
(পিটিআইয়ের তথ্য সংযুক্ত করা হয়েছে)