হাইলাইটস
- আগে দোল তারপর বউভাত সৃজিত-মিথিলার
- স্বভূমির রাজকুটিরে আয়োজন গ্র্যান্ড রিসেপশনের
- এসেছিলেন টালিগঞ্জের প্রায় সমস্ত তারকা
কলকাতা: কে বলে সোশ্যাল মিডিয়া অভিশাপ? অন্তত, সৃজিত মুখোপাধ্যায় (Srijit Mukherji)-রফিয়দ রশিদ মিথিলার জীবনে ফেসবুক কিন্তু আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। সেই আশীর্বাদের ফসল গত ডিসেম্বরে দুই বাংলার মিলন। আইবুড়ো নাম মুছে সৃজিতের মিথিলা (Mithila) জয়। তারপর থেকেই অনুরাগীদের মিষ্টি বায়না, জাতীয় পুরস্কারজয়ী পরিচালকের বিয়ে! বউভাত বা রিসেশপশন হবে না! সবার দাবি মেনে ভারী সুন্দর একটি নিমন্ত্রণ পত্র সোশ্যালে পোস্ট করেছিলেন তিনি। আন্তরিক ভাষায় লেখা ভালোবাসায় জারানো সেই আমন্ত্রণ পত্রে সৃজিতের অকপট স্বীকারোক্তি, ‘‘পৃথিবীর সব উৎসবের ইতিহাসই বন্ধুবান্ধবদের খাওয়ানোর ইতিহাস। তাই নতুন আলুর খোসা আর ভালোবাসা দিয়ে ভাত-ডাল মাখার আগে চাই একটা জমজমাট হুল্লোড় আর ভূরিভোজ। ইংলিশ মিডিয়ামে যাকে বলে, ‘রিসেপশন'।' খাঁটি বাঙালি শব্দ- বৌভাত। আমাকে আমার মতো থাকতে দাও' বলার দিন এবার শেষ। নৌকার পালে চোখ রেখে দিন কাটানোর আশায় বিয়েটা করেই নিলাম। তাই আপাতত মিথিলা আর সৃজিত এক রাস্তায় ট্রামলাইন, এক কবিতায় কাপলেট।'' সবশেষে, ‘আমাদের খুনসুটি আর ঝগড়াঝাঁটির জীবন আড্ডা দিয়ে জমজমাটি করে তুলতে আসবেন কিন্তু। নমস্কারান্তে- মুখার্জি কমিশন।'
তখনই পরিচালক জানিয়েছিলেন, ২৯ ফেব্রুয়ারি কলকাতার স্বভূমিতে রাজকুটিরে (Raj Kutir) হবে রিসেপশন। আমরা বাঙালিরা যাকে বউভাত বলতে অভ্যস্ত। তারও আগে বসন্তকে পুরোপুরি উপভোগ করতে সপরিবারে দোল খেললেন সৃজিত-মিথিলা।
তারপরেই গতকাল ২৯ ফেব্রুয়ারির সন্ধেয় রাজকুটির জমজমাট টলিউডের হাজার তারার ঝলকানিতে। ডিজাইনার ধাক্কা পাড় লাল ধুতি-ঘিয়ে পাঞ্জাবিতে জমাটি সুতোর কাজে একদম বর বেশে সৃজিত মুখোপাধ্যায়। এদেশের নতুন বউমা মিথিলা সেজেছিলেন টুকটুকে লাল শাড়িতে। আটপৌড়ে ভাবে পরা শাড়ির সঙ্গে হাতখোঁপা। তাতে জুঁইফুলের মালা জড়ানো। নতুন বউয়ের মতোই গা ভরা মিনে করা সোনার গয়না। মেহেন্দি, অল্প মেকআপে স্নিগ্ধ মিথিলা। দেখে বোঝাই যাচ্ছিল বিয়ের গন্ধ, প্রেম, মিষ্টি দাম্পত্যের আবেশ এখনও জড়িয়ে তাঁদের।
কেক কেটে বউকে খাইয়ে বউভাতের অনুষ্ঠানের শুরু। নতুন দম্পতির মেয়েকেও দেখা গেছে সেখানে। তার পরনেও লাল টুকটুকে বেনারসী।
ছেলে-বউমাকে আশীর্বাদ করেন সুমিতা সরকার। আগামী দিনেও যাতে এভাবেই তাঁরা একসঙ্গে পথ হাঁটেন দম্পতি সেই প্রার্থনা করেন ঈশ্বরের কাছে।
এসেছিলেন মাধবী মুখোপাধ্যায়, সন্দীপ রায়, অপর্ণা সেন, জিৎ গাঙ্গুলি, টোটা রায়চৌধুরী, রাজ চক্রবর্তী, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, সপরিবারে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, দেবজ্যোতি মিশ্র, ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, অমৃতা চট্টোপাধ্যায়, ভরত কউল, ঊষসী চক্রবর্তী সহ টালিগঞ্জের প্রায় সব তারকা। প্রত্যেকে কায়মনোবাক্যে আশীর্বাদ করেন, শুভেচ্ছা জানান দম্পতিকে। দেবজ্যোতি বলেন, 'বুঝেই আমরা মিথিলার হাতে তুলে দিয়েছি সৃজিতকে।' মাধবী বলেন, 'হিন্দু-মুসলিম বুঝি না, ওরা আমাদের ছেলে-বউমা। এটুকুই যথেষ্ট।' টোটা জানান, এর আগে ফেলুদা শুটিংয়ের সময় কাঠমাণ্ডুতে পরিচালকের তরফ থেকে ছোট রিসেপশন দেওয়া হয়েছিল। এটা গ্র্যান্ড রিসেপশন।
আমন্ত্রিতের তালিকায় ছিলেন প্রিন্স অফ ক্যালকাটা সৌরভ গাঙ্গুলিও। মহারাজের সঙ্গে মিথিলার পরিচয় করিয়ে দেন সৃজিত। দাদার রিয়েলিটি শো-এর গান লিখেছিলেন পরিচালক। দাদার কথায়, 'আমার থেকে সৃজিত ছোট। তাই ওকে আশীর্বাদ সুখী দাম্পত্যের। ভীষণ ভালো মানুষ। ভীষণ খেলাপাগল মানুষ।'
এবার জেনে নিন ভূরিভোজের তালিকায় কী কী ছিল। দম্পতি জানিয়েছেন, এপার-ওপার বাংলা মিলেছে খাবারের মেনুতেও। এপারের চিংড়ির পাশাপাশি ছিল ভেটকি। ছিল চিকেন, রকমারি আমিষ-নিরামিশ পদ। আর মধুরেণ সমাপয়েৎ হিসেবে নানা রকমের মিষ্টি তো ছিলই।