নয়া দিল্লি: ৮ রাজ্যের হিন্দুদের জন্য সংখ্যালঘুদের সুবিধা চাওয়ার আবেদন খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। ধর্মের কোনও সীমানা নেই, প্যান ইন্ডিয়া প্রসঙ্গটি খতিয়ে দেখে এমন কথাই বলল শীর্ষ আদালত। ভারতের প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদের নেতৃত্বাধীন শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ জানিয়েছে যে এই মামলায় কোনও নির্দেশ দেওয়া সম্ভব নয়। মামলার অন্যতম আবেদনকারী অশ্বিনী কুমার উপাধ্যায়কে স্মরণ করিয়ে দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ জানায় যে কোনও দল বা সম্প্রদায়কে সংখ্যালঘু হিসাবে ঘোষণা করা হবে কি হবে না সেটা ঠিক করা সরকারের কাজ, আদালতের নয়। "এলাকা ভিত্তিতে ভাষা ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে ... তবে ধর্মের কোনও নির্দিষ্ট সীমানা থাকতে পারে না। এ ক্ষেত্রে আমাদের প্যান-ইন্ডিয়ার পদ্ধতিই অবলম্বন করতে হবে। লাক্ষাদ্বীপে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষরা হিন্দু আইন অনুসরণ করেন", জানায় সুপ্রিম কোর্ট। আদালত আরও বলে যে,"আমরা আবেদনকারীর সঙ্গে একমত নই। আমরা এ বিষয়ে কী করে কোনও নির্দেশিকা পাস করতে পারি? আদালত কাউকে সংখ্যালঘু হিসাবে ঘোষণা করে না ... এটা সরকারের কাজ"।
এই আবেদনে কেন্দ্রের ২৬ বছর পুরনো বিজ্ঞপ্তির বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়, ওই বিজ্ঞপ্তিতে ছিল যে পার্সী, জৈন, খ্রিস্টান, শিখ এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এই পাঁচটি সম্প্রদায়কে সংখ্যালঘু তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট এর আগে ৮টি রাজ্যের হিন্দুদের সংখ্যালঘু জনসংখ্যা হিসাবে ঘোষণা করা নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে ভেনুগোপালের সঙ্গেও পরামর্শ করে ।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, যিনি সংসদে সরকারের হয়ে নাগরিকত্ব বিল পেশ করেছিলেন তিনি রাজ্যসভায় বলেন যে এ দেশের মুসলিমদের ভয় পাওয়ার কারণ নেই, "তারা এ দেশের নাগরিক আছেন এবং থাকবেন"।
নতুন নাগরিকত্ব আইনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে যে সব অমুসলিম মানুষরা ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা এবার ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
যদিও এই আইন পাস হওয়ার পর থেকেই প্রতিবাদ-আন্দোলনে ফেটে পড়েছে দেশ। অসম সহ দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে ওই আইনের প্রতিবাদে হওয়া বিক্ষোভ ক্রমশই সহিংস রূপ পায়। বিক্ষোভ শুরু হয় দেশের রাজধানী দিল্লিতেও।
এদিকে প্রতিবাদের ঢেউ এসে পৌঁছেছে পশ্চিমবঙ্গেও। রাস্তা অবরোধ ও রেল পরিষেবা ব্যাহত করার ঘটনার বিরোধিতা করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় শান্তির জন্য আর্জি জানিয়েছেন।