অসমের (Assam) প্রায় কুড়ি লক্ষ জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (NRC) তথা এনআরসির দৌলতে রাষ্ট্রহীন হতে চলেছেন। তাঁদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হচ্ছে কোনও সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতি ছাড়াই। এমনটাই দাবি মার্কিন (US Panel) আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা কমিশন তথা ইউএসসিআইআরএফ-এর। প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অসমে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি আপডেট করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত ৩১ আগস্ট চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হলে দেখা যায় ১৯ লক্ষেরও বেশি মানুষ তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন। ইউএসসিআইআরএফ-এর একটি রিপোর্টে জানানো হয়, ১৯ লক্ষ মানুষের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। সেই তালিকায় কোন পদ্ধতি প্রয়োগ করে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের টার্গেট করে তাঁদের বঞ্চিত করা হয়েছে সে ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে ওই রিপোর্টে।
‘‘কাশ্মীরে ইন্টারনেট নিষেধাজ্ঞা তোলা হবে সঠিক সময়ে'': রাজ্যসভায় অমিত শাহ
কমিশনের কমিশনার অণুরিমা ভার্গব মঙ্গলবার বলেন, ‘‘অসমের ২০ লক্ষের কাছাকাছি মানুষকে রাষ্ট্রহীন হতে হবে। তাঁদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হচ্ছে কোনও সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও নিয়ন্ত্রিত এনআরসি পদ্ধতি ছাড়াই।''
তিনি আরও বলেন, ‘‘দুর্ভাগ্যজনক যে, ভারতীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা বারবার জানিয়েছেন কীভাবে এনআরসি পদ্ধতি প্রযোগ করে তাঁরা মুসলিমদের অসম তেকে সরিয়ে দিতে চান। এবং এখন সারা ভারত জুড়ে রাজনৈতিক নেতারা এনআরসি করতে চাইছেন। এবং মুসলিমদের জন্য আলাদা নাগরিকত্বের মান তৈরির কথা ভাবছেন।''
"মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটব্যাংক হারানোর ভয়েই রেগে যাচ্ছেন": AIMIM Bengal
ইউএসসিআইআরএফ-এর সভাপতি টনি পার্কিন্স বলেছেন, সংশোধিত এনআরসি ও তার পরবর্তী পদক্ষেপের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকার নাগরিকত্বের ধর্মীয় পরীক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করছে। লক্ষ্য সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশে আর্জি জানান, সংবিধান মেনে সমস্ত ধর্মীয় সংখ্যালঘুর অধিকার রক্ষা করার জন্য।
ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ভারতে এনআরসিকে মুসলিম নাগরিকদের বৈষম্য সৃষ্টির জন্য বযবহার করা হচ্ছে।
গত শতাব্দীর শুরুর দিক থেকেই অসমে বাইরে থেকে লোকেরা বিশেষ করে পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ থেকে বহিরাগতরা এসেছে। বাংলাদেশ থেকে হিন্দু ও মুসলিম শরণার্থীরা আশ্রয় নিয়েছেন এই রাজ্যে এসে।
জাতীয় নাগরিক পঞ্জি নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, নাগরিক পঞ্জি তৈরি করা হয়েছে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করে। গত সেপ্টেম্বরে এক বিবৃতিতে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্ট সরাসরি পুরো পদ্ধতিটি খতিয়ে দেখছে।
পাশাপাশি এও দাবি করা হয়েছে যে, এই পদ্ধতিতে কোনও বৈষম্য নেই। কারও প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখানো হয়নি বা অন্যায় করা হয়নি। এমনকী, জাতীয় নাগরিক পঞ্জির কোনও ফর্মেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছে তাঁর ধর্মীয় পরিচয়ও জানতে চাওয়া হয়নি।
যাঁদের নাম তালিকায় নেই তাঁরা ১২০ দিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করতে পারবেন বলেও জানিয়ে দেওয়া হয় ওই বিবৃতিতে।