শীর্ষ আদালতে আজ সেই আইনকেই পুনঃপরীক্ষা করে দেখা হবে বলে জানা গিয়েছে
নিউ দিল্লি: ব্রিটিশ আমলে তৈরি আইনে সমকামিতাকে 'অপরাধ' বলে গণ্য করা হত। শীর্ষ আদালতে আজ সেই আইনকেই পুনঃপরীক্ষা করে দেখা হবে বলে জানা গিয়েছে। সাতমাস আগেই এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, "যুগের পর যুগ ধরেই বদলে যায় সামাজিক নৈতিকতা"। সেকশন 377 রদ করার বিষয়ে যে অসংখ্য পিটিশন জমা পড়েছিল, আজ তা নিয়ে শুনানির দিন ঠিক করেছেন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ। সোমবারই আদালত কেন্দ্রে আবেদন সত্ত্বেও এই বিষয়ে শুনানির দিন স্থগিত রাখতে অস্বীকার করে। 2009 সালে দিল্লি হাইকোর্ট সেকশন 377'কে 'অসাংবিধানিক' বলে ঘোষণা করেছিল।
এই বিষয়ে যে 10' টি তথ্য জানতে হবেঃ
1. গত জানুয়ারি মাসে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র বলেন, সামাজিক নৈতিকতা যুগের পর যুগ ধরে বদলে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, "যা একজনের কাছে স্বাভাবিক, তা অপরজনের কাছে স্বাভাবিক নাও হতে পারে"।
2. আদালত জানিয়েছিল, যাঁরা যাঁরা নিজের পছন্দ করা জীবন বেছে নিয়েছেন, তাঁদের সেভাবেই থাকতে দেওয়া উচিত। তাঁদের যেন আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাটে না হয়। আদালত আরও জানায়, 'কারও ব্যক্তিগত পছন্দ আইনের বাধানিষেধকে না মেনে হবে, এমনটা কাম্য নয়'। তবে, তার সঙ্গে এটাও ঠিক যে, বেঁচে থাকার যে সাংবিধানিক অধিকার ও স্বাধীনতা, আইন তার ভিতর অকারণে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।
3. যে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এই রায় নিয়ে পুনঃপরীক্ষা করবে, তার নেতৃত্বে থাকবেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র। এছাড়াও থাকবেন, বিচারপতি আর এফ নরিম্যান, এ এম খানউইলকর, ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং ইন্দু মালহোত্রা।
4. ভারতীয় সংবিধানের 377 ধারা অনুযায়ী, প্রকৃতির নিয়মের বিরুদ্ধে গিয়ে যৌন সঙ্গম করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা জরিমানা সহ 10 বছরের কারাদণ্ড হবে।
5. 2009 সালের জুলাই মাসে দিল্লি হাইকোর্ট একটি রায় দিয়ে সমকামীতাকে 'স্বাভাবিক' বলে ঘোষণা করে।
6. কিন্তু 2013 সালের ডিসেম্বরে হাইকোর্টের রায় সংশোধন করে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, সমকামিতাকে একটি অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হবে।
7. গত বছর সুপ্রিম কোর্ট একটি যুগান্তকারী রায় দিয়েছিল গোপনীয়তার অধিকার বিষয়ে। সর্বোচ্চ আদালতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল সেকশন 377'এর ক্ষেত্রেও গোপনীয়তার অধিকার প্রযোজ্য।
8. যৌন পরিচয়কে, আদালত রায় দেওয়ার সময়, 'একজনের পরিচয়ের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান' বলে অভিহিত করেছিল।
9. সরকার আদালতে সেকশন 377 'কে সমর্থন জানালেও, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেছিলেন, "গোটা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ যখন বিকল্প যৌন পরিচয়কে স্বীকৃতি দিচ্ছে, তখন আমরা যদি তাদের জেলে পাঠানোর প্রস্তাব করি, তাহলে তা মোটেই ভালো উদাহরণ হবে না" ।
10. কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী, পি চিদম্বরম, শশী থারুর, তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা ডেরেক ও'ব্রায়ান, সিপিয়েমের বৃন্দা কারাত এবং আম আদমি পার্টি এলজিবিটি কমিউনিটির প্রতি নিজেদের অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছেন।