আজ সকালে ব্যবসায়ী রবার্ট বঢরাকে (Robert Vadra) গাড়িতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডির (ED) অফিসে পৌঁছে দিলেন তাঁর স্ত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা (Priyanka Gandhi Vadra)। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে এদিন ওই সংস্থায় আসতে বলা হয়। রবার্টের বিরুদ্ধে ওঠা বেআইনি সম্পত্তি কেনাবেচার অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করছে ইডি। এদিন সকালে রবার্ট জানান, এ পর্যন্ত তাঁকে ৭০ ঘণ্টা জেরা করেছে ইডি। তাঁর বিরুদ্ধে বেআইনি জমি কেনাবেচার অভিযোগ ছাড়াও অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। আজ যে কেসটির জন্য তাঁকে ডাকা হয়েছে সেটি হল, লন্ডন, দুবাই, রাজস্থান এবং দেশের রাজধানীতে নানা সম্পত্তি ক্রয় সংক্রান্ত ব্যাপারে।
‘‘এখনও পর্যন্ত আমাকে ১১ বারে প্রায় ৭০ ঘণ্টার মতো সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ভবিষ্যতেও আমি সহযোগিতা করব। যতদিন না আমার নাম সব মিথ্যে অভিযোগ থেকে মুছে যায়।'' আজ সকালে রবার্ট একটি ফেসবুক পোস্টে এ কথা লেখেন। পোস্টের সঙ্গে একটি ছবিও রয়েছে। যেখানে তাঁর স্ত্রীর পিতামহ জওহরলাল নেহরুর একটি ছোট ছবিও দৃশ্যমান।
প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বরাবরই স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি তাঁর স্বামীর পাশেই রয়েছেন। গত ফেব্রুয়ারিতেও তিনি একই ভাবে স্বামীকে গাড়িতে করে ইডির দফতরে পৌঁছে দিয়েছিলেন। তিনি NDTV-কে বলেছিলেন, ‘‘আমি আমার স্বামীর পাশে রয়েছি।'' সেই সঙ্গে এও বলেন, তাঁর সঙ্গে উপস্থিত থেকে একটি ‘পরিষ্কার বার্তা' পৌঁছে দিতে চান। গত ফেব্রুয়ারিতে রবার্ট এবং তাঁর মা'কে জয়পুরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হলে সেখানে পৌঁছে যান প্রিয়াঙ্কাও।
রবার্ট এও লেখেন— ‘‘আমি ভারতীয় বিচার ব্যবস্থায় বিশ্বাস করি। তাই সরকারি সংস্থার সমস্ত সমন ও নিয়মে সাড়া দেব।''
তদন্তকারীদের দাবি, রবার্ট বঢরা প্রত্যক্ষ বা অপ্রত্যক্ষ ভাবে লন্ডনে ন'টি সম্পত্তির মালিক। সমস্ত সম্পত্তির মোট মূল্য প্রায় ১২ মিলিয়ন পাউন্ড। ভারতীয় অঙ্কে তা দাঁড়ায় প্রায় ১০৫ কোটি টাকা। ওই সম্পত্তির তিনটি ভিলা। বাকিগুলি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট। ২০০৫ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে ওই সম্পত্তিগুলি কেনা হয়েছে। সেই সময় এদেশে ক্ষমতায় ছিল ইউপিএ সরকার।
ইডির তরফে দিল্লি হাইকোর্টকে জানানো হয়েছে, রবার্ট বঢরা তদন্তে সহায়তা করছেন না, তাই তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চান তাঁরা। তবে আদালত তার নির্দেশে অপরাধের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা না করায় খানিক স্বস্তি পান রবার্ট।
আজ তাঁকে ডেকে পাঠানোর কারণ, তদন্তকারী সংস্থার সূত্রে জানা যাচ্ছে, রবার্টের বেনামী সম্পত্তি সম্পর্কে নতুন প্রমাণ তারা পেয়েছে।
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের অন্যতম লন্ডনের ১২, ব্রিস্টন স্কোয়ারে একটি অট্টালিকা ক্রয়। যার মূল্য ১.৯ মিলিয়ন পাউন্ড। ভারতীয় মুদ্রা। ১৬ কোটিরও বেশি। এর পাশাপাশি হরিয়ানা ও রাজস্থানে বেআইনি জমি চুক্তিতে জড়িয়ে থাকার অভিযোগও রয়েছে তাঁর নামে।
নির্বাচনের আগে বিজেপি একনাগাড়ে কংগ্রেসকে লক্ষ্য করে আক্রমণ শানাতে রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের প্রসঙ্গ তুলে আনে। তবে সম্ভাব্য গ্রেফতারি এড়াতে শেষ পর্যন্ত আগাম জামিন পেয়ে যান রবার্ট। আদালত তাঁকে এপ্রিলে গ্রেফতারি থেকে সুরক্ষা দিয়েছিল। ইডি এরপর দিল্লি হাইকোর্টে আগাম জামিনটি বাতিল করার ব্যাপারে আবেদন করে।
দিল্লি একটি আদালতে বিদেশ ভ্রমণ সংক্রান্ত অনুমতির বিষয়ে রবার্টের আবেদনের শুনানি ৩ জুন পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়েছে।