পুলিশ কিশোরীর আধার কার্ডটি পরীক্ষা করার পরে মন্দিরের অনেকখানি নিচে বেস ক্যাম্পেই আটকে দেয় তাঁকে
তিরুবনন্তপুরম/ নয়া দিল্লি: পরিবারের সঙ্গে কেরলের শবরীমালা মন্দিরে (Sabarimala shrine) পুজো দিতে গিয়ে বাধা পেলেন এক কিশোরী। ১২ বছর বয়সী ওই কিশোরীকে মঙ্গলবার সকালেই মন্দিরে যাওয়া থেকে আটকায় পুলিশ। শুধু তাই নয়, ওই কিশোরীর বয়সের প্রমাণপত্রও দেখতে চায় পুলিশ। পুলিশ ওই কিশোরীর আধার কার্ডটি পরীক্ষা করার পরে মন্দিরের অনেকখানি নিচে বেস ক্যাম্পেই (Pamba base camp) আটকে দেয় তাঁকে। ৪১ দিনের বার্ষিক তীর্থযাত্রার জন্য আইয়াপ্পা মন্দিরটি খোলার পরেই অন্ধ্রপ্রদেশের ১০ জন মহিলাকে ফেরত পাঠানো হয় এই বেসক্যাম্প থেকেই। এই ঘটনার কয়েক দিন পরেই ফের এই কিশোরীকে পাহাড়ের চূড়ায় মন্দিরে যেতে বাধা দিল পুলিশ। কেরল সরকার ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সের মহিলাদের এবং মেয়েদের সুরক্ষা দেওয়ার বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করতেই নারাজ। অথচ গত বছর সুপ্রিম কোর্ট ঋতুমতী মহিলাদের প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে তাঁদের মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছিল। শীর্ষ আদালত গত সপ্তাহেই জানিয়েছে যে, সাত বিচারকের বেঞ্চ ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসের রায় পর্যালোচনা করবে। যদিও পূর্ববর্তী আদেশ স্থগিত করা হয়নি।
আরও পড়ুনঃ সব বয়সী মহিলারাই প্রবেশ করতে পারবেন মন্দিরে, বিতর্কের মধ্যেই খুলল শবরীমালা মন্দির
সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়ে, মঙ্গলবার সকাল দশটা নাগাদ পুদুচ্চেরির বাসিন্দা ওই কিশোরী ও তার পরিবারকে পুলিশ পাম্বা বেস ক্যাম্পের (Pamba base camp) কাছে থামিয়ে দেয়। তাঁদেরকে বয়সের প্রমাণপত্র দিতে বলা হয়। পুলিশ কিশোরীর আধার কার্ড পরীক্ষা করে এবং জানায় যে তাকে বেস ক্যাম্পের বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া যাবে না।
পরিবারের অভিযোগ, ওই কিশোরীকে পাহাড়ের মন্দিরে যেতে দেওয়ার অনুরোধ করা হলে পুলিশ তা প্রত্যাখ্যান করে। পরিবারের অন্যরা মন্দিরে গেলেও যেতে দেওয়া হয় না ওই কিশোরীকে। শনিবার সন্ধ্যায় শবরীমালা মন্দিরটি বার্ষিক তীর্থযাত্রার মরশুমের জন্য খুলে দেওয়া হয়। ভক্তদের জন্য মন্দির খোলার কয়েক ঘন্টা আগেই অন্ধ্রপ্রদেশের দশ জন মহিলাকে পাহাড়ের উপরে এই মন্দির থেকে ফেরত পাঠানো হয়। কেরলের মন্ত্রী একে বালানের অবশ্য দাবি, সুপ্রিম কোর্টের আদেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ৪৮০ কিমি পথ হেঁটে শবরীমালা পুণ্যার্থীদের সঙ্গী হল পথের কুকুর
গত বছর, সুপ্রিম কোর্ট, ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী মহিলাদের অর্থাৎ ঋতুস্রাব হয় এমন মহিলাদের বিখ্যাত আইয়াপ্পা মন্দিরে প্রবেশ করার বহু শতাব্দী প্রাচীন নিষেধাজ্ঞার অবসান ঘটায়। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে “অবৈধ এবং অসাংবিধানিক” এই প্রথার বিলুপ্তির যে রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট তারপরেই নানা হিংসার ঘটনাই ঘটে মন্দিরে প্রবেশকে ঘিরে। শীর্ষ আদালত গত সপ্তাহে জানিয়েছে যে, নিষেধাজ্ঞার অবসানের সিদ্ধান্তটি বৃহত্তর সাত বিচারকের বেঞ্চ পর্যালোচনা করবে।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে কেরালার দেবস্বম মন্ত্রী কাদাকম্পল্লী সুরেন্দ্রন বলেন যে, মন্দিরে প্রবেশ করতে সুরক্ষা চাইছেন যে মহিলা সমাজকর্মীরা তাঁদের আদালতের আদেশ নিয়ে আসতে হবে। মন্দির বোর্ডও রাজ্য সরকারের সুরেই গলা মিলিয়ে জানিয়েছে যে শীর্ষ আদালতের আদেশের পরে তারা আইনি পরামর্শ চেয়েছে।