করাচির একটা হিন্দু মন্দিরের ভিতরে একটা স্কুল পরিচালনা করেন শ্রীমতী আনুম।
করাচি: পাকিস্তানের করাচিতে একটা হিন্দু মন্দিরে আনুম আঘা নামক এক মহিলা হিজাব পরে তাঁর ছাত্রছাত্রীদের সালাম বলে অভিবাদন জানান এবং প্রত্তুত্যরে শোনেন জয় শ্রী রাম। শ্রীমতী আনুম পাকিস্তানের দক্ষিণ অংশের বাস্তি গুরু অঞ্চলে একটা বিদ্যালয় পরিচালনা করেন। হিন্দু মন্দিরের ভিতরে অবস্থিত হওয়ায় তাঁকে প্রায়ই স্থানীয় মানুষের হুমকির শিকার হতে হয়। কিন্তু শ্রীমতী আনুম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিশুদের তাঁদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মৌলিক অধিকার সম্পর্কে অবগত করতে বদ্ধপরিকর। ওই অঞ্চলে প্রায় 80-90 টা হিন্দু পরিবারের বসবাস। ক্লাসের পর শ্রীমতী আনুমকে ওই শিশুদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করতে দেখা যায়।
পিটিআই-কে তিনি জানান, “সকলে জেনে অবাক হয়ে যায় যে আমি একটা মন্দিরের ভিতরে স্কুলটা পরিচালনা করি।“ মন্দির সংলগ্ন ওই স্কুলের দেওয়ালে বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবীর পোস্টার লাগানো। ওই অঞ্চলে মানুষরা ন্যূনতম সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত। ওই অঞ্চলের হিন্দু পরিবারগুলোকে প্রায়ই বিভিন্নরকম হুমকি দেওয়া হয়। ওই অঞ্চল থেকে উচ্ছেদ করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিছুদিন আগে কর্তৃপক্ষ বাস্তির বিদ্যুৎ ও জল পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে। ষাটের দশকে হিন্দু পরিবারগুলো সিন্ধির গোটকি অঞ্চল থেকে করাচির ওই অঞ্চলে এসে বসবাস শুরু করেছিল।
মসজিদ তৈরিকে কেন্দ্র করে প্রায়ই ওই অঞ্চলে অরাজকতা বিরাজ করে। শ্রীমতী আনুম একথাও জানান, তাঁর কার্যকলাপ ওই অঞ্চলের মুসলিম গোষ্ঠীর একেবারেই অপছন্দ। কিন্তু হিন্দু পরিবারগুলো তাঁর পদক্ষেপে অত্যন্ত খুশি। একজন মুসলিম শিক্ষিকা হয়ে তাঁকে কী চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, “আমি কখনওই ধর্মের কথা বলি না। আমি ওঁদের বিভিন্ন বিষয়ে মনোযোগ বৃদ্ধির চেষ্টা করি, তার মধ্যে ধর্মের স্থান নেই। আমি মানুষ হিসাবে ওঁদের সম্মান করি আর ওঁদের থেকেই একইভাবে সম্মান ফেরত পাই। এইভাবেই আমরা কাজ করি। বিভিন্ন উৎসব পালন করি। আমি ওঁদের সালাম বলি, আর ওঁরা আমায় জয় শ্রী রাম।“
তাঁর ধারনা তাঁর স্কুল বর্তমান পরিস্থিতিতে সমাজের কাছে হিন্দু-মুসলমান ঐক্যের এক নজির গড়তে পেরেছে।